কর্মী সংকটে ভুগছে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে পরিচিত ফিনল্যান্ড৷ দেশটির সরকার ও চাকরিদাতাদের মতে অভিবাসীদের দেশটিতে আসার সুযোগ বাড়ানো ছাড়া এই চাহিদা মেটানো সম্ভব না।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির নিম্নগতির কারণে যেসব দেশ কর্মী সংকটে ভুগছে তাদের মধ্যে ফিনল্যান্ড এর অবস্থান উপরের দিকেই থাকবে৷ বর্তমানে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে সেখানে ৩৯ দশমিক দুই জনই ৬৫ বছরের উপরে৷ বয়স্ক মানুষের হারে জাপানের পরই দেশটির অবস্থান৷
জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ ফিনল্যান্ডে বয়স্ক মানুষের হার সাড়ে ৪৭ ভাগে ঠেকবে৷ ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী মাত্র ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭৫ জন জনসংখ্যার দেশটিতে অভিবাসীর সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে বছরে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজারে উন্নীত না করলে প্রশাসনিক সেবা চালু রাখাই কঠিন হয়ে পড়বে৷ ফিনল্যান্ডের সরকারের এক পরিসংখ্যানই এমন তথ্য দিচ্ছে৷
প্রয়োজনীয় কর্মীর চাহিদা পূরণে অভিবাসীদের কোন বিকল্প দেখছে না চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও৷ ট্যালেন্টেড সল্যুশন্স নামের তেমনই একটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তা সাকু তিহভারাইনেন৷ তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশিদের ফিনল্যান্ডে সুযোগ দেয়া দরকার আমাদের৷ বিষয়টি সবার কাছেই এখন স্বীকৃত৷
উন্নত জীবনযাত্রা, স্বাধীনতা ও নারী-পুরুষ সমতার দিক থেকে বিশ্বের যেকোন দেশের চেয়ে় ফিনল্যান্ডের অবস্থান উপরে৷ দুর্নীতি, অপরাধের মাত্রাও যথেষ্ট কম হওয়ায় ফিনল্যান্ডের আলাদা পরিচিতি আছে৷
একারণে বিশ্বের যেকোন দেশের বাসিন্দার জন্যই ফিনল্যান্ডে বসবাস আকর্ষণীয়৷ কিন্তু এর বিপরীতে অভিবাসী বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গী, উগ্র ডানপন্থি দলগুলোর রাজনৈতিক অবস্থান এবং বিদেশিদের চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়োগকারীদের অনীহা দেশটিতে অভিবাসী সংখ্যা বৃদ্ধির পথে প্রধান বাধা হিসেবে কাজ করছিল এতদিন৷
তবে দিনদিন কর্মক্ষম জনসংখ্যা কমতে থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ও সরকারের ভাবনায় পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে, এমনটাই মনে করেন অ্যাকাডেমি অব ফিনল্যান্ডের গবেষণা ফেলো চার্লস ম্যাথিস৷ তিনি ‘ট্যালেন্ট বুস্ট’ নামের একটি সরকারি প্রকল্পের পরামর্শক৷ চার বছর ধরে চলমান এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বিদেশি কর্মীদের জন্য ফিনল্যান্ডকে আরো আকর্ষণীয় করা৷
জানা গেছে, গত এক যুগ ধরেই ফিনল্যান্ডের অভিবাসী বৃদ্ধির হার যথেষ্ট কম৷ ২০১৯ সালে অভিবাসীর সংখ্যা সর্বসাকুল্যে বেড়েছে মাত্র ১৫ হাজার৷ পরিসংখ্যান বলছে যেসব অভিবাসী দেশটি ছেড়ে গেছেন তাদের বড় অংশই উচ্চ শিক্ষিত৷
অথচ, ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দক্ষ কর্মী সংকট সবচেয়ে বেশি ফিনল্যান্ডে৷ এর ভুক্তভোগী এখন প্রযুক্তি নির্ভর স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো৷ তারা বাইরে থেকে কর্মী আকর্ষণে বিভিন্ন যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ যেমন, খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভোল্টের সাউন রুডেন এএফপিকে বলেন, ‘‘(দক্ষ বিদেশি কর্মীদের) স্থানান্তর প্রক্রিয়া যতটা সহজ করা যায় সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা৷