ঢাকা , বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

৫ম শ্রেণির ছাত্রী ৫১ বছর বয়সের হাসিনা

ছোটবেলায় অভাবের কারণে দ্রুত বিয়েরপিঁড়িতে বসতে হয় হাসিনা খাতুনের। সংসারের বেড়াজালে আটকে যায় জীবন। তাই আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। সেই থেকে শুরু সংসার ছেলেমেয়ে নিয়ে হাসিনার ব্যস্ততম জীবন। তার সংসারে স্বামী এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে, তাদের বিয়ে দিয়েছেন। নিজে লেখাপড়া না জানলেও ছেলেকে বানিয়েছেন গ্র্যাজুয়েট। গল্পটা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আব্দুল কাশেমের স্ত্রী হাসিনা খাতুনের কথা।

হাসিনা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসিনা খাতুনের ইচ্ছা ছিল সে লেখাপড়া করবেন। এই বয়সে কোনো চাকরির জন্য নয় বরং জ্ঞানার্জন করার আকাঙ্ক্ষাতেই ভর্তি হয়ে যান প্রাইমারি স্কুলে। তার লেখাপড়া করার ইচ্ছা দেখে শিক্ষকরা ভর্তি করে নেন তাকে।

হাসিনা খাতুন এখন ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ৫ম শ্রেণিতে মোট ৩৭ জন শিক্ষার্থী। বাড়ির কাজ শেষ করে প্রতিদিনই স্কুলে আসেন হাসিনা খাতুন। লেখাপড়ায়ও খুব মনোযোগী তিনি। তার সঙ্গে পড়া সহপাঠীরাও খুব খুশি তাকে পেয়ে।
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা খাতুন জানান, সহপাঠীরা তাকে কেউ দাদি আবার কেউ চাচি বলে ডাকে। অবসর সময় তাদের মাঝে মাঝে বিভিন্ন গল্প শোনান। তাদেরও ভালো সময় কাটে। প্রতিদিন তাদের সঙ্গেই স্কুলে আসেন হাসিনা। আবার স্কুল ছুটি হলে একসঙ্গেই বাড়ি যান।
স্কুলটির শিক্ষক সীমা রানী ভট্টাচার্য বলেন, লেখাপড়ার প্রতি হাসিনা খাতুনের খুব আগ্রহ। তিনি নিয়মিত স্কুলে আসেন।

ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোমেনা বেগম বলেন, এই বয়সে স্কুলে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ছাত্রী হওয়া সত্যিই বিরল। হাসিনা খাতুনের লেখাপড়ার প্রতি খুবই আগ্রহ। শিক্ষকরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। যারা লিখতে ও পড়তে পারেন না তারা হাসিনা খাতুনের মতো স্কুলে আসলে দেশ নিরক্ষরমুক্ত হবে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

৫ম শ্রেণির ছাত্রী ৫১ বছর বয়সের হাসিনা

আপলোড সময় : ০৬:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩

ছোটবেলায় অভাবের কারণে দ্রুত বিয়েরপিঁড়িতে বসতে হয় হাসিনা খাতুনের। সংসারের বেড়াজালে আটকে যায় জীবন। তাই আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। সেই থেকে শুরু সংসার ছেলেমেয়ে নিয়ে হাসিনার ব্যস্ততম জীবন। তার সংসারে স্বামী এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে, তাদের বিয়ে দিয়েছেন। নিজে লেখাপড়া না জানলেও ছেলেকে বানিয়েছেন গ্র্যাজুয়েট। গল্পটা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আব্দুল কাশেমের স্ত্রী হাসিনা খাতুনের কথা।

হাসিনা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসিনা খাতুনের ইচ্ছা ছিল সে লেখাপড়া করবেন। এই বয়সে কোনো চাকরির জন্য নয় বরং জ্ঞানার্জন করার আকাঙ্ক্ষাতেই ভর্তি হয়ে যান প্রাইমারি স্কুলে। তার লেখাপড়া করার ইচ্ছা দেখে শিক্ষকরা ভর্তি করে নেন তাকে।

হাসিনা খাতুন এখন ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ৫ম শ্রেণিতে মোট ৩৭ জন শিক্ষার্থী। বাড়ির কাজ শেষ করে প্রতিদিনই স্কুলে আসেন হাসিনা খাতুন। লেখাপড়ায়ও খুব মনোযোগী তিনি। তার সঙ্গে পড়া সহপাঠীরাও খুব খুশি তাকে পেয়ে।
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা খাতুন জানান, সহপাঠীরা তাকে কেউ দাদি আবার কেউ চাচি বলে ডাকে। অবসর সময় তাদের মাঝে মাঝে বিভিন্ন গল্প শোনান। তাদেরও ভালো সময় কাটে। প্রতিদিন তাদের সঙ্গেই স্কুলে আসেন হাসিনা। আবার স্কুল ছুটি হলে একসঙ্গেই বাড়ি যান।
স্কুলটির শিক্ষক সীমা রানী ভট্টাচার্য বলেন, লেখাপড়ার প্রতি হাসিনা খাতুনের খুব আগ্রহ। তিনি নিয়মিত স্কুলে আসেন।

ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোমেনা বেগম বলেন, এই বয়সে স্কুলে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ছাত্রী হওয়া সত্যিই বিরল। হাসিনা খাতুনের লেখাপড়ার প্রতি খুবই আগ্রহ। শিক্ষকরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। যারা লিখতে ও পড়তে পারেন না তারা হাসিনা খাতুনের মতো স্কুলে আসলে দেশ নিরক্ষরমুক্ত হবে।