ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

স্বরমুশিয়া খাঁ বাড়ি ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ: ২২৯ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের অনন্য সাক্ষী

প্রাকৃতিক সময়ের ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে গেছে অনেক কিছু, কিন্তু ইতিহাসের এক অবিচল প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্বরমুশিয়া খাঁ বাড়ি ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ। ২২৯ বছর আগে নির্মিত এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি আজও ইসলামের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে টিকে আছে, যেখানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মিশে আছে স্থাপত্যশৈলীর অতুলনীয় সৌন্দর্য।
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে ১২১৭ হিজরিতে বাংলার বারো ভূঁইয়া সর্দারদের অন্যতম ঈসা খাঁ এর পুত্র মুসা খাঁ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। তখনকার সময়ের তুলনায় এর স্থাপত্যশৈলী ছিল অত্যন্ত দৃঢ় ও সুদৃশ্য। মসজিদের প্রতিটি দেয়ালের পুরুত্ব ৬-৮ ফুট, যা প্রমাণ করে এর স্থায়িত্ব ও শক্তিশালী নির্মাণশৈলী। এমন পুরু দেয়াল সাধারণত রাজপ্রাসাদ বা দুর্গে দেখা যায়, যা এ মসজিদটির স্থাপত্যশৈলীতে রাজকীয় ছোঁয়া যোগ করেছে।
শুরুতে মসজিদে এক কাতারে ১৮ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। তবে স্থানীয়দের ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৩০ বছর আগে বারান্দা সম্প্রসারণ করায় এখন সেখানে একসঙ্গে ৭০ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মসজিদের ফ্লোরে সংস্কার ও টাইলস সংযোজন করা হয়েছে, যা একে আরও আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করেছে।
এই ঐতিহাসিক মসজিদটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর তিনটি গম্বুজ।
বর্তমান মসজিদ কমিটির সভাপতি কাজী ফজলুর রহমান খান জানান, “ধারণা করা হয় যে এই তিনটি গম্বুজ ইসলামের প্রথম তিন খলিফা—হযরত আবু বকর (রা.), হযরত উমর (রা.) এবং হযরত ওসমান (রা.)-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে।” যদিও এ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো প্রমাণ নেই, তবে এটি স্থানীয়দের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
স্বরমুশিয়া খাঁ বাড়ি ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়; এটি একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় সৌন্দর্যের প্রতীক। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করছেন, আরবের সেই আদিম ইসলামী স্থাপত্যের ছোঁয়া অনুভব করছেন।
মুসা খাঁ এর বংশধর মোতাহার হোসেন খান মোতালিব বলেন, এই ২২৯ বছরের প্রাচীন মসজিদটি শুধু অতীতের গৌরব নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অনন্য ইতিহাসের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে। ইসলামিক ঐতিহ্যের এমন নিদর্শন সংরক্ষণ ও উন্নয়নে স্থানীয়রা একসঙ্গে কাজ করছেন, যাতে এটি আরও বহু শতাব্দী ধরে ইসলামের আলো ছড়িয়ে যেতে পারে।
নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

স্বরমুশিয়া খাঁ বাড়ি ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ: ২২৯ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের অনন্য সাক্ষী

আপলোড সময় : ১১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
প্রাকৃতিক সময়ের ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে গেছে অনেক কিছু, কিন্তু ইতিহাসের এক অবিচল প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্বরমুশিয়া খাঁ বাড়ি ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ। ২২৯ বছর আগে নির্মিত এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি আজও ইসলামের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে টিকে আছে, যেখানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মিশে আছে স্থাপত্যশৈলীর অতুলনীয় সৌন্দর্য।
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে ১২১৭ হিজরিতে বাংলার বারো ভূঁইয়া সর্দারদের অন্যতম ঈসা খাঁ এর পুত্র মুসা খাঁ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। তখনকার সময়ের তুলনায় এর স্থাপত্যশৈলী ছিল অত্যন্ত দৃঢ় ও সুদৃশ্য। মসজিদের প্রতিটি দেয়ালের পুরুত্ব ৬-৮ ফুট, যা প্রমাণ করে এর স্থায়িত্ব ও শক্তিশালী নির্মাণশৈলী। এমন পুরু দেয়াল সাধারণত রাজপ্রাসাদ বা দুর্গে দেখা যায়, যা এ মসজিদটির স্থাপত্যশৈলীতে রাজকীয় ছোঁয়া যোগ করেছে।
শুরুতে মসজিদে এক কাতারে ১৮ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। তবে স্থানীয়দের ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৩০ বছর আগে বারান্দা সম্প্রসারণ করায় এখন সেখানে একসঙ্গে ৭০ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মসজিদের ফ্লোরে সংস্কার ও টাইলস সংযোজন করা হয়েছে, যা একে আরও আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করেছে।
এই ঐতিহাসিক মসজিদটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর তিনটি গম্বুজ।
বর্তমান মসজিদ কমিটির সভাপতি কাজী ফজলুর রহমান খান জানান, “ধারণা করা হয় যে এই তিনটি গম্বুজ ইসলামের প্রথম তিন খলিফা—হযরত আবু বকর (রা.), হযরত উমর (রা.) এবং হযরত ওসমান (রা.)-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে।” যদিও এ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো প্রমাণ নেই, তবে এটি স্থানীয়দের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
স্বরমুশিয়া খাঁ বাড়ি ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়; এটি একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় সৌন্দর্যের প্রতীক। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করছেন, আরবের সেই আদিম ইসলামী স্থাপত্যের ছোঁয়া অনুভব করছেন।
মুসা খাঁ এর বংশধর মোতাহার হোসেন খান মোতালিব বলেন, এই ২২৯ বছরের প্রাচীন মসজিদটি শুধু অতীতের গৌরব নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অনন্য ইতিহাসের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে। ইসলামিক ঐতিহ্যের এমন নিদর্শন সংরক্ষণ ও উন্নয়নে স্থানীয়রা একসঙ্গে কাজ করছেন, যাতে এটি আরও বহু শতাব্দী ধরে ইসলামের আলো ছড়িয়ে যেতে পারে।