ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পতিত জমিতে নানা ফসলের চাষ

সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় নদী, সড়ক, পুকুরের চালা এবং বাড়ির আঙ্গিনায় পতিত জমিতে এবার নানা ফসল, সবজি চাষাবাদ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে উপজেলার প্রতি ইঞ্চি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষি বিভাগ এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। যা উপজেলার কৃষকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়া উপজেলার বড় পাঙ্গাসী এবং উধুনিয়া ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে দূর্গাদহ নদী। দুই বছর আগে নদী খনন করে মাটি দুইপাশের কৃষি জমিতে রাখায় জমির একটা বড় অংশ নদীর মাটির নিচে পড়ে ভিটেতে পরিণত হয়।

তবে সেখানে কোন চাষাবাদ না করায় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এবার উপজেলা কৃষি বিভাগের পরার্মশে নদীর ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই পাড়ে কৃষকরা রবি সরিষা চাষ করেছেন। পলি মাটিতে সরিষার সুন্দর ফলনও দেখা যাচ্ছে। বহমান নদী আর দুইপাশে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য নজর কাড়ছে সকলের।

পাঙ্গাসী গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন জানান, দুই বছর নদীর পাড় পরিত্যক্ত ছিল। কৃষি কর্মকর্তারা এসে তাগাদা দেয়ায় এবার তিনি সেখানে সরিষা বুনেছেন। আশা করছেন বাম্পার ফলন পাবেন। দেশের সবচেয়ে বেশি সরিষা উৎপাদনকারী উল্লাপাড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২৩ হাজার ৬শ’ ১১ হেক্টর জমিতে রবি সরিষা চাষ হয়েছে।

উপজেলার সলঙ্গা, বড়হর ও পূর্নিমাগাঁতী ইউনিয়নে অনেক পুকুরে মাছ চাষাবাদ করা হয়। এসব পুকুরের চারদিকে বড় পাড়গুলো এতদিন পরিত্যক্ত ছিল। এবার কৃষি বিভাগ মাছ চাষীদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে মাসকলাই বীজ এবং সার দিয়ে তাদের পুকুর পাড় চাষাবাদের আওতায় এনেছেন।

এতে এলাকার প্রায় প্রতিটি পুকুর পাড়েই মাছ চাষের পাশাপাশি মাসকলাইয়ের বাড়তি ফলন পেয়ে দারুণ খুশি তারা। পাশাপাশি এসব এলাকার সড়কের দুইপাশেও মাসকলাই চাষাবাদে ভাল ফলন মিলেছে।

এছাড়া উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার পরিবারের বাড়ির আঙ্গিনার পরিত্যক্তস্থানে পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। বস্তায় আদা চাষ, হরেক রকম সবজিসহ পেঁয়াজ, রসুনের চাষাবাদ হচ্ছে এখানে। যা পরিবারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা সূর্বণা ইয়াসমিন সুমি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুরো উপজেলার সব জমি চাষাবাদে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। অফিসের কাজ শেষে তিনি প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খালি জমির অবস্থা বুঝে কৃষকদের ফসল এবং সবজি চাষ করতে উৎসাহিত করেন বলে জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে উপজেলার বিশাল একটি নদীর দুই পাড়, অসংখ্য পুকুর পাড় এবং সড়কের দুই ধারে মাসকলাই, সবজি চাষাবাদ হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের সার, বীজ দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত পরিদর্শন ও পরামর্শে ভাল ফলন পাওয়ায় কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছে জানিয়ে উপজেলার সব পরিত্যক্ত জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে পারবো বলে আশাব্যক্ত করেন এই কৃষি কর্মকতা।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পতিত জমিতে নানা ফসলের চাষ

আপলোড সময় : ১১:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় নদী, সড়ক, পুকুরের চালা এবং বাড়ির আঙ্গিনায় পতিত জমিতে এবার নানা ফসল, সবজি চাষাবাদ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে উপজেলার প্রতি ইঞ্চি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষি বিভাগ এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। যা উপজেলার কৃষকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়া উপজেলার বড় পাঙ্গাসী এবং উধুনিয়া ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে দূর্গাদহ নদী। দুই বছর আগে নদী খনন করে মাটি দুইপাশের কৃষি জমিতে রাখায় জমির একটা বড় অংশ নদীর মাটির নিচে পড়ে ভিটেতে পরিণত হয়।

তবে সেখানে কোন চাষাবাদ না করায় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এবার উপজেলা কৃষি বিভাগের পরার্মশে নদীর ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই পাড়ে কৃষকরা রবি সরিষা চাষ করেছেন। পলি মাটিতে সরিষার সুন্দর ফলনও দেখা যাচ্ছে। বহমান নদী আর দুইপাশে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য নজর কাড়ছে সকলের।

পাঙ্গাসী গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন জানান, দুই বছর নদীর পাড় পরিত্যক্ত ছিল। কৃষি কর্মকর্তারা এসে তাগাদা দেয়ায় এবার তিনি সেখানে সরিষা বুনেছেন। আশা করছেন বাম্পার ফলন পাবেন। দেশের সবচেয়ে বেশি সরিষা উৎপাদনকারী উল্লাপাড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২৩ হাজার ৬শ’ ১১ হেক্টর জমিতে রবি সরিষা চাষ হয়েছে।

উপজেলার সলঙ্গা, বড়হর ও পূর্নিমাগাঁতী ইউনিয়নে অনেক পুকুরে মাছ চাষাবাদ করা হয়। এসব পুকুরের চারদিকে বড় পাড়গুলো এতদিন পরিত্যক্ত ছিল। এবার কৃষি বিভাগ মাছ চাষীদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে মাসকলাই বীজ এবং সার দিয়ে তাদের পুকুর পাড় চাষাবাদের আওতায় এনেছেন।

এতে এলাকার প্রায় প্রতিটি পুকুর পাড়েই মাছ চাষের পাশাপাশি মাসকলাইয়ের বাড়তি ফলন পেয়ে দারুণ খুশি তারা। পাশাপাশি এসব এলাকার সড়কের দুইপাশেও মাসকলাই চাষাবাদে ভাল ফলন মিলেছে।

এছাড়া উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার পরিবারের বাড়ির আঙ্গিনার পরিত্যক্তস্থানে পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। বস্তায় আদা চাষ, হরেক রকম সবজিসহ পেঁয়াজ, রসুনের চাষাবাদ হচ্ছে এখানে। যা পরিবারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা সূর্বণা ইয়াসমিন সুমি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুরো উপজেলার সব জমি চাষাবাদে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। অফিসের কাজ শেষে তিনি প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খালি জমির অবস্থা বুঝে কৃষকদের ফসল এবং সবজি চাষ করতে উৎসাহিত করেন বলে জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে উপজেলার বিশাল একটি নদীর দুই পাড়, অসংখ্য পুকুর পাড় এবং সড়কের দুই ধারে মাসকলাই, সবজি চাষাবাদ হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের সার, বীজ দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত পরিদর্শন ও পরামর্শে ভাল ফলন পাওয়ায় কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছে জানিয়ে উপজেলার সব পরিত্যক্ত জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে পারবো বলে আশাব্যক্ত করেন এই কৃষি কর্মকতা।