ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

শাহজাদপুর উপজেলায় স্বামীর হাতেই স্ত্রী খুন

মেহেদীর রং হাত থেকে শুকানোর আগেই পাষন্ড স্বামীর নৃশংসতার শিকার হলেন রোমানা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূ। গভীর রাতে স্বামী আশরাফুল ইসলাম সোহাগ (২৮) তাকে ছুড়িকাঘাতে হত্যা করে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে প্রচার করে। বুধবার দিবাগত গভীর রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের ব্রজবালা পুরান পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত রোমানা উল্লাপাড়া উপজেলার সোনতলা গ্রামের মোতাহার হোসেনের মেয়ে।

এক বছর পূর্বে শাহজাদপুর উপজেলার ব্রজবালা পুরান পাড়া গ্রামের আফছার আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম সোহাগের সাথে তার বিয়ে হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। ইতিপূর্বে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উভয় পরিবারের অভিভাবকদের মাঝে সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। সোহাগ তার প্রতি স্ত্রীর অনীহা ও স্ত্রী স্বামীর প্রতি অনিহার অভিযোগ করে। বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক একটায় উভয়ের মধ্যে ব্যক্তিগত গোপন বিষয় নিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। এসময় স্বামী সোহাগ উত্তেজিত হয়ে এক পর্যায়ে তার স্ত্রী রুমার বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

 

পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ঘরের মেঝে ও বিছানার রক্ত পরিষ্কার করে পাতলা পায়খানা করে মারা গেছে বলে বলতে থাকে। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার উপ-পরিদর্শক হারিছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আছলাম আলী। নিহত রুমার দুলাভাই বায়েজিদ হোসেন জানান, সোহাগের সাথে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক থাকা অবস্থায় পারিবারিক চাপে রুমার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের দিন থেকেই সোহাগ রুমার উপর অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল।

 

পারিবারিকভাবে বিষয়টি সুরাহর জন্য বারবার বলেও কাজ হয়নি। এরপর গত বুধবার রাতে হঠাৎ ঝগড়া হলে ঘরের ভিতরে রুমার বুকে, পিঠে ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলে। এই বিষয়ে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আছলাম আলী বলেন, খবর পেয়ে আমি সহ ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়। এসময় বাড়ির সদস্যরা পলাতক ছিল।

 

তৎক্ষণাত অভিযান চালিয়ে স্বামী আশরাফুল ইসলাম সোহাগ কে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সোহাগ প্রথমে জানায় স্ত্রী নিজেই আত্মঘাতী হয়েছে। পরে লাশের সুরতহালের পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী সোহাগ স্ত্রী রুমাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এসময় তিনি এর কারণ হিসেবে দাম্পত্য কলহের কথা বলেন। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

 

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

শাহজাদপুর উপজেলায় স্বামীর হাতেই স্ত্রী খুন

আপলোড সময় : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মেহেদীর রং হাত থেকে শুকানোর আগেই পাষন্ড স্বামীর নৃশংসতার শিকার হলেন রোমানা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূ। গভীর রাতে স্বামী আশরাফুল ইসলাম সোহাগ (২৮) তাকে ছুড়িকাঘাতে হত্যা করে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে প্রচার করে। বুধবার দিবাগত গভীর রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের ব্রজবালা পুরান পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত রোমানা উল্লাপাড়া উপজেলার সোনতলা গ্রামের মোতাহার হোসেনের মেয়ে।

এক বছর পূর্বে শাহজাদপুর উপজেলার ব্রজবালা পুরান পাড়া গ্রামের আফছার আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম সোহাগের সাথে তার বিয়ে হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। ইতিপূর্বে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উভয় পরিবারের অভিভাবকদের মাঝে সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। সোহাগ তার প্রতি স্ত্রীর অনীহা ও স্ত্রী স্বামীর প্রতি অনিহার অভিযোগ করে। বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক একটায় উভয়ের মধ্যে ব্যক্তিগত গোপন বিষয় নিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। এসময় স্বামী সোহাগ উত্তেজিত হয়ে এক পর্যায়ে তার স্ত্রী রুমার বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

 

পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ঘরের মেঝে ও বিছানার রক্ত পরিষ্কার করে পাতলা পায়খানা করে মারা গেছে বলে বলতে থাকে। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার উপ-পরিদর্শক হারিছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আছলাম আলী। নিহত রুমার দুলাভাই বায়েজিদ হোসেন জানান, সোহাগের সাথে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক থাকা অবস্থায় পারিবারিক চাপে রুমার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের দিন থেকেই সোহাগ রুমার উপর অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল।

 

পারিবারিকভাবে বিষয়টি সুরাহর জন্য বারবার বলেও কাজ হয়নি। এরপর গত বুধবার রাতে হঠাৎ ঝগড়া হলে ঘরের ভিতরে রুমার বুকে, পিঠে ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলে। এই বিষয়ে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আছলাম আলী বলেন, খবর পেয়ে আমি সহ ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়। এসময় বাড়ির সদস্যরা পলাতক ছিল।

 

তৎক্ষণাত অভিযান চালিয়ে স্বামী আশরাফুল ইসলাম সোহাগ কে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সোহাগ প্রথমে জানায় স্ত্রী নিজেই আত্মঘাতী হয়েছে। পরে লাশের সুরতহালের পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী সোহাগ স্ত্রী রুমাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এসময় তিনি এর কারণ হিসেবে দাম্পত্য কলহের কথা বলেন। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।