ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

যে কারণে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের জন্ম ১ জানুয়ারি

ফাইল ছবি

বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশির ভাগ বাংলাদেশির জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি। জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি, পাসপোর্ট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জন্ম তারিখ যাচাই করে এ তথ্য জানা যায়।

তবে বিভিন্ন জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের জন্ম তারিখের ক্ষেত্রে দেখা গেছে জানুয়ারির এক তারিখের প্রাধান্য রয়েছে। শিশুদের নিয়ে কাজ করেন—এমন বিশেষজ্ঞরাও এই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন।

 

শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান বলেছেন, ‘বিষয়টি এমন না যে, জানুয়ারির এক তারিখে বেশির ভাগ শিশুর জন্ম হচ্ছে। আসলে এখনও আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিশুদের জন্ম হয় বাড়িতে, বিশেষ করে যারা গ্রামীণ এলাকায় থাকে। সেখানে এখনও শিক্ষার হার ততটা ভালো না। ফলে অভিভাবকরাও জন্ম নিবন্ধনের ব্যাপারে ততটা সতর্ক নন।

 

তিনি বলেন, আমাদের জন্ম নিবন্ধনও সঠিকভাবে সঠিক তারিখে হয় না। বাড়িতে বা হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুদেরও ঠিকভাবে নিবন্ধন হচ্ছে না। পরবর্তী একসময় যখন তারা স্কুলে ভর্তি হয় বা কোনো সার্টিফিকেট পরীক্ষার সময় তার জন্ম তারিখটা দরকার হয়ে পড়ে। তখন অনেক সময় স্কুলের শিক্ষকরা ইচ্ছামতো একটি তারিখ বসিয়ে দেন। নতুন করে জন্মদিন বসাতে গিয়ে তারা একটি কমন তারিখে জন্মদিন বসিয়ে দেন, যা সহজে মনে রাখা যায়। দেখা যায়, বেশির ভাগ সময়েই সেটা জানুয়ারির এক তারিখ হয়ে থাকে। এ কারণে দেখা যায় এখানে এটা খুবই কমন যে, মানুষের দুইটা করে জন্মদিন থাকে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেছেন, তার নিজের এবং আরও দুজন চাচাতো ভাইয়ের জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি। কারও জন্মতারিখই বাবা-মা লিখে রাখেননি। ফলে স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় শিক্ষকরা তারিখটি বসিয়ে দিয়েছেন।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, ভারত-পাকিস্তান, নেপাল, ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানেও এই প্রবণতা রয়েছে।

 

তবে শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান বলছেন, অনেকের জন্ম তারিখ বানিয়ে দেওয়া হলেও এই তারিখেও কিন্তু সত্যিকারে বাংলাদেশে অনেক শিশুর জন্ম হচ্ছে, যাদের জন্মদিন আসলেই ১ জানুয়ারি।

 

বাংলাদেশে ২০২৪ সালে বছরের প্রথম দিনে ৮ হাজার ৪২৮টি শিশুর জন্ম হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। আর এদিন পৃথিবীতে জন্ম হতে যাচ্ছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৭২টি শিশুর।

 

ইউনিসেফের হিসাবে, প্রথম দিনে জন্ম নেওয়া শিশুদের এক চতুর্থাংশের জন্ম হবে দক্ষিণ এশিয়ায়। আর এদিনের মোট শিশুদের অর্ধেক জন্ম নেবে নিচের আটটি দেশে : ভারত-৬৯৯৪৪, চীন- ৪৪৯৪০, নাইজেরিয়া-২৫৬৮৫, পাকিস্তান-১৫১১২, ইন্দোনেশিয়া-১৩২৫৬, যুক্তরাষ্ট্র-১১০৮৬ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো-১০০৫৩, বাংলাদেশ-৮৪২৮।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

যে কারণে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের জন্ম ১ জানুয়ারি

আপলোড সময় : ১০:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশির ভাগ বাংলাদেশির জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি। জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি, পাসপোর্ট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জন্ম তারিখ যাচাই করে এ তথ্য জানা যায়।

তবে বিভিন্ন জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের জন্ম তারিখের ক্ষেত্রে দেখা গেছে জানুয়ারির এক তারিখের প্রাধান্য রয়েছে। শিশুদের নিয়ে কাজ করেন—এমন বিশেষজ্ঞরাও এই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন।

 

শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান বলেছেন, ‘বিষয়টি এমন না যে, জানুয়ারির এক তারিখে বেশির ভাগ শিশুর জন্ম হচ্ছে। আসলে এখনও আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিশুদের জন্ম হয় বাড়িতে, বিশেষ করে যারা গ্রামীণ এলাকায় থাকে। সেখানে এখনও শিক্ষার হার ততটা ভালো না। ফলে অভিভাবকরাও জন্ম নিবন্ধনের ব্যাপারে ততটা সতর্ক নন।

 

তিনি বলেন, আমাদের জন্ম নিবন্ধনও সঠিকভাবে সঠিক তারিখে হয় না। বাড়িতে বা হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুদেরও ঠিকভাবে নিবন্ধন হচ্ছে না। পরবর্তী একসময় যখন তারা স্কুলে ভর্তি হয় বা কোনো সার্টিফিকেট পরীক্ষার সময় তার জন্ম তারিখটা দরকার হয়ে পড়ে। তখন অনেক সময় স্কুলের শিক্ষকরা ইচ্ছামতো একটি তারিখ বসিয়ে দেন। নতুন করে জন্মদিন বসাতে গিয়ে তারা একটি কমন তারিখে জন্মদিন বসিয়ে দেন, যা সহজে মনে রাখা যায়। দেখা যায়, বেশির ভাগ সময়েই সেটা জানুয়ারির এক তারিখ হয়ে থাকে। এ কারণে দেখা যায় এখানে এটা খুবই কমন যে, মানুষের দুইটা করে জন্মদিন থাকে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেছেন, তার নিজের এবং আরও দুজন চাচাতো ভাইয়ের জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি। কারও জন্মতারিখই বাবা-মা লিখে রাখেননি। ফলে স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় শিক্ষকরা তারিখটি বসিয়ে দিয়েছেন।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, ভারত-পাকিস্তান, নেপাল, ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানেও এই প্রবণতা রয়েছে।

 

তবে শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান বলছেন, অনেকের জন্ম তারিখ বানিয়ে দেওয়া হলেও এই তারিখেও কিন্তু সত্যিকারে বাংলাদেশে অনেক শিশুর জন্ম হচ্ছে, যাদের জন্মদিন আসলেই ১ জানুয়ারি।

 

বাংলাদেশে ২০২৪ সালে বছরের প্রথম দিনে ৮ হাজার ৪২৮টি শিশুর জন্ম হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। আর এদিন পৃথিবীতে জন্ম হতে যাচ্ছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৭২টি শিশুর।

 

ইউনিসেফের হিসাবে, প্রথম দিনে জন্ম নেওয়া শিশুদের এক চতুর্থাংশের জন্ম হবে দক্ষিণ এশিয়ায়। আর এদিনের মোট শিশুদের অর্ধেক জন্ম নেবে নিচের আটটি দেশে : ভারত-৬৯৯৪৪, চীন- ৪৪৯৪০, নাইজেরিয়া-২৫৬৮৫, পাকিস্তান-১৫১১২, ইন্দোনেশিয়া-১৩২৫৬, যুক্তরাষ্ট্র-১১০৮৬ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো-১০০৫৩, বাংলাদেশ-৮৪২৮।