ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

যেভাবে মা অপহরণ নাটকের ফন্দি আঁটেন মরিয়ম মান্নান

ফাইল ছবি

জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মরিয়ম মান্নান প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে মা রহিমা বেগমকে আত্মগোপনে রেখে তাকে অপহরণ করা হয়েছে—এমন নাটক সাজিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনার পিবিআই পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংস্থাটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। এদিন সকালে দেশব্যাপী আলোচিত এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করা হয়।

এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাতে বাসা থেকে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে যান রহিমা বেগম। তিনি ২৮ দিন আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় কয়েক দিন ঢাকায়, এরপর বান্দরবানে এবং সর্বশেষে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামে অবস্থান করেন। সেখান থেকে পুলিশ তাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, রহিমা বেগম জমি নিয়ে বিরোধ থাকা প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে তাকে অপহরণ করেছে বলে মিথ্যা তথ্য দেন। এরপর আদালতেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় একই ধরনের মিথ্যা জবানবন্দি দেন তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, মরিয়ম মান্নান প্রতিবেশীদের চিরতরে ফাঁসাতে ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া এক নারীর অর্ধগলিত লাশকে নিজের মা দাবি করে নাটক চালাতে থাকেন। কিন্তু তার মাকে পুলিশ উদ্ধার করে ফেলবে, সেটি চিন্তা করতে পারেননি।

সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, যে রাতে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন, ওই দিন বিকেলে তাকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এক হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন মরিয়ম মান্নান। ঘটনার তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মামলার তদন্তে পুলিশ আসামিদের কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি। তবে, আদালতের অনুমতিক্রমে এ ঘটনায় মরিয়ম মান্নানদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে অভিযোগপত্র দেওয়া যাবে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ জানায়, বাদীর আর্জিতে বর্ণিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সমর্থনে উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মিথ্যা মামলা দায়ের করা এবং দায়ের করানোর অপরাধে তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ আগস্ট নগরীর দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগমকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ তুলে পরদিন ২৮ আগস্ট তার মেয়ে আদরী খাতুন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

যেভাবে মা অপহরণ নাটকের ফন্দি আঁটেন মরিয়ম মান্নান

আপলোড সময় : ০৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মরিয়ম মান্নান প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে মা রহিমা বেগমকে আত্মগোপনে রেখে তাকে অপহরণ করা হয়েছে—এমন নাটক সাজিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনার পিবিআই পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংস্থাটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। এদিন সকালে দেশব্যাপী আলোচিত এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করা হয়।

এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাতে বাসা থেকে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে যান রহিমা বেগম। তিনি ২৮ দিন আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় কয়েক দিন ঢাকায়, এরপর বান্দরবানে এবং সর্বশেষে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামে অবস্থান করেন। সেখান থেকে পুলিশ তাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, রহিমা বেগম জমি নিয়ে বিরোধ থাকা প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে তাকে অপহরণ করেছে বলে মিথ্যা তথ্য দেন। এরপর আদালতেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় একই ধরনের মিথ্যা জবানবন্দি দেন তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, মরিয়ম মান্নান প্রতিবেশীদের চিরতরে ফাঁসাতে ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া এক নারীর অর্ধগলিত লাশকে নিজের মা দাবি করে নাটক চালাতে থাকেন। কিন্তু তার মাকে পুলিশ উদ্ধার করে ফেলবে, সেটি চিন্তা করতে পারেননি।

সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, যে রাতে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন, ওই দিন বিকেলে তাকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এক হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন মরিয়ম মান্নান। ঘটনার তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মামলার তদন্তে পুলিশ আসামিদের কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি। তবে, আদালতের অনুমতিক্রমে এ ঘটনায় মরিয়ম মান্নানদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে অভিযোগপত্র দেওয়া যাবে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ জানায়, বাদীর আর্জিতে বর্ণিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সমর্থনে উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মিথ্যা মামলা দায়ের করা এবং দায়ের করানোর অপরাধে তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ আগস্ট নগরীর দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগমকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ তুলে পরদিন ২৮ আগস্ট তার মেয়ে আদরী খাতুন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।