ঢাকা , শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ

  • হাতিয়া প্রতিনিধি
  • আপলোড সময় : ০৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
  • ২৪১ বার দেখা হয়েছে।

সম্পত্তির মালিক মারা গেছেন অনেক আগে। অন্য কোনো উত্তরসূরি না থাকায় সেই সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব পান পরিচিত একজন। একপর্যায়ে সেই সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে দুইজনকে সম্পত্তির মালিক সাজিয়ে জাল দলিল সৃজন করেন। পরে সেই দলিল দেখিয়ে নিজের নামে নতুন খতিয়ান তৈরি করে খাজনা পরিশোধ করে আসছেন ভবেষ চন্দ্র দাস নামের এক ব্যক্তি।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে নিজেই এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিজের জাল-জালিয়াতির বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন তিনি।

ঘটনাটি নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরঈশ্বর লক্ষীদিয়া গ্রামে ঘটেছে। অভিযুক্ত ভবেষ চন্দ্র দাস (৫৫) একই এলাকার চৈতন্য কুমার দাসের ছেলে।

গত সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কায়সার খসরুর কার্যালয়ে এসে তিনি লিখিতভাবে জালিয়াতির বিষয়টি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন।

তাতে তিনি উল্লেখ করেন, তাকে সাফায়েত (রক্ষণাবেক্ষণকারী) করে গীতা ভারতীয় মিশন নামে একটি সংগঠনকে যে ১১ একর সম্পত্তি (উইল নামা দলিল) দেওয়া হয়েছে তা আইনসম্মত হয়নি। প্রকৃত জমির মালিক প্রনব পোদ্দার ও প্রবীর পোদ্দার নামে দুই ভাই মারা যাওয়ার অনেক পরে অন্য দুইজনকে মালিক সাজিয়ে এই দলিল সৃজন করা হয়। দলিলের মধ্যে দাতার যে স্বাক্ষর রয়েছে তা অন্য একজন দিয়ে দিয়েছে। এখন তিনি আর এই সম্পত্তি নিজের কাছে রাখতে চাচ্ছে না। প্রয়োজনে এই সম্পত্তি সরকার নিয়ে গেলেও তার কোনো আপত্তি নাই।

স্থানীয়রা জানান, এই সম্পত্তির মালিক ছিল হাতিয়ার তৎকালীন হরনী ইউনিয়নের (এখন নদী গর্ভে বিলীন) মৃত শবীন্দ্র মোহন পোদ্দারের দুই ছেলে প্রনব পোদ্দার ও প্রবীর পোদ্দার। তারা চিরকুমার ছিলেন। তাদের উত্তরসূরি বলতে কেউ ছিল না।

ভবেষের এই প্রতারণার কথা গ্রামের প্রবীণ অনেকে জানতেন। কিন্তু হঠাৎ ভবেষ এই সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পর্যন্ত চলে যায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে ডেকে এই সম্পত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করেন।

ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন জানান, এই সম্পত্তির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬-৭ কোটি টাকার মতো হবে। ভবেষ বিষয়টি তাকে জানালে সে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। পরে নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে দলিলের একটি কপি দেওয়া হয়। ভবেষ এখন আর এই সম্পত্তি রাখতে চাইছে না।

এ ব্যাপারে ভবেষ চন্দ্র দাস জানান, জালিয়াতির বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। এখন তিনি আর এই সম্পত্তি নিজের কাছে রাখতে চাচ্ছেন না।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কায়সার খসরু বলেন, ভবেষ একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। তাতে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু জাল দলিল দেখিয়ে খতিয়ান খোলা হয়েছে, এখন উক্ত খতিয়ান বাতিল করার জন্য আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর এই সম্পত্তি সরকারের খাস খতিয়ান ভুক্ত হয়ে যাবে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ

আপলোড সময় : ০৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

সম্পত্তির মালিক মারা গেছেন অনেক আগে। অন্য কোনো উত্তরসূরি না থাকায় সেই সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব পান পরিচিত একজন। একপর্যায়ে সেই সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে দুইজনকে সম্পত্তির মালিক সাজিয়ে জাল দলিল সৃজন করেন। পরে সেই দলিল দেখিয়ে নিজের নামে নতুন খতিয়ান তৈরি করে খাজনা পরিশোধ করে আসছেন ভবেষ চন্দ্র দাস নামের এক ব্যক্তি।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে নিজেই এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিজের জাল-জালিয়াতির বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন তিনি।

ঘটনাটি নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরঈশ্বর লক্ষীদিয়া গ্রামে ঘটেছে। অভিযুক্ত ভবেষ চন্দ্র দাস (৫৫) একই এলাকার চৈতন্য কুমার দাসের ছেলে।

গত সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কায়সার খসরুর কার্যালয়ে এসে তিনি লিখিতভাবে জালিয়াতির বিষয়টি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন।

তাতে তিনি উল্লেখ করেন, তাকে সাফায়েত (রক্ষণাবেক্ষণকারী) করে গীতা ভারতীয় মিশন নামে একটি সংগঠনকে যে ১১ একর সম্পত্তি (উইল নামা দলিল) দেওয়া হয়েছে তা আইনসম্মত হয়নি। প্রকৃত জমির মালিক প্রনব পোদ্দার ও প্রবীর পোদ্দার নামে দুই ভাই মারা যাওয়ার অনেক পরে অন্য দুইজনকে মালিক সাজিয়ে এই দলিল সৃজন করা হয়। দলিলের মধ্যে দাতার যে স্বাক্ষর রয়েছে তা অন্য একজন দিয়ে দিয়েছে। এখন তিনি আর এই সম্পত্তি নিজের কাছে রাখতে চাচ্ছে না। প্রয়োজনে এই সম্পত্তি সরকার নিয়ে গেলেও তার কোনো আপত্তি নাই।

স্থানীয়রা জানান, এই সম্পত্তির মালিক ছিল হাতিয়ার তৎকালীন হরনী ইউনিয়নের (এখন নদী গর্ভে বিলীন) মৃত শবীন্দ্র মোহন পোদ্দারের দুই ছেলে প্রনব পোদ্দার ও প্রবীর পোদ্দার। তারা চিরকুমার ছিলেন। তাদের উত্তরসূরি বলতে কেউ ছিল না।

ভবেষের এই প্রতারণার কথা গ্রামের প্রবীণ অনেকে জানতেন। কিন্তু হঠাৎ ভবেষ এই সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পর্যন্ত চলে যায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে ডেকে এই সম্পত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করেন।

ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন জানান, এই সম্পত্তির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬-৭ কোটি টাকার মতো হবে। ভবেষ বিষয়টি তাকে জানালে সে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। পরে নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে দলিলের একটি কপি দেওয়া হয়। ভবেষ এখন আর এই সম্পত্তি রাখতে চাইছে না।

এ ব্যাপারে ভবেষ চন্দ্র দাস জানান, জালিয়াতির বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। এখন তিনি আর এই সম্পত্তি নিজের কাছে রাখতে চাচ্ছেন না।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কায়সার খসরু বলেন, ভবেষ একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। তাতে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু জাল দলিল দেখিয়ে খতিয়ান খোলা হয়েছে, এখন উক্ত খতিয়ান বাতিল করার জন্য আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর এই সম্পত্তি সরকারের খাস খতিয়ান ভুক্ত হয়ে যাবে।