ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

মুঘল ইতিহাসের সাক্ষী আরিফাইল মসজিদ

ইসলাম ধর্মের অনন্য নিদর্শন ও মুঘল ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ‘আরিফাইল শাহি জামে মসজিদ’। অপরূপ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত মসজিদটি দেখতে অনেকটা তাজমহলের মতো।

স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে, ১৬৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার আরিফাইল গ্রামে মসজিদটি নির্মিত হয়। দরবেশ শাহ আরিফ এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তার নামানুসারেই এই মসজিদের নামকরণ করা হয়। আরও জনশ্রুতি রয়েছে, মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি দিঘি, যার পানি পান করলে আরোগ্য মিলতো।

এ ছাড়াও মসজিদটির দক্ষিণে রয়েছে দুটি কবর, যা ‘জোড়া কবর’ বা ‘রহস্যময় কবর’ নামে পরিচিত। কবর দুটিতেও মুঘল স্থাপত্যকলা ও অপূর্ব নির্মাণশৈলীর প্রভাব বিদ্যমান।

এ বিষয়ে অনেক জনশ্রুতি ও কল্পকাহিনি প্রচলিত। তবে এগুলো কার বা কাদের মাজার, কে শুয়ে আছেন এই কবরে তার প্রকৃত তথ্য কারও জানা নেই। জনশ্রুতিকেই বিশ্বাস করে প্রতিদিন লোকজন এসে নামাজ আদায়ের পর এই মাজারে বিভিন্ন মান্নত করেন।

আরিফাইল শাহি জামে মসজিদ আয়তনে লম্বায় ৮০ ফুট ও প্রস্থে ৩০ ফুট। মসজিদের চার কোনায় চারটি বুরুজ ও মোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজগুলোর নিচে মসজিদের ভেতরে অংশকে তিন ভাগে ভাগ করেছে। গম্বুজগুলোতে পদ্মফুল অঙ্কিত রয়েছে।

সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের আড়িফাইল গ্রামে গিয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তিন গম্বুজওয়ালা মসজিদটি এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মূল ফটক থেকে শুরু করে মসজিদের ভেতরেও বিভিন্ন অংশ কারুকার্য যেন জানান দিচ্ছে মুঘল আমলের উৎকর্ষতার।

চুন, সুরকি আর ইটের গাঁথুনির সঙ্গে মসজিদের ভেতরে ও বাইরের অপরূপ কারুকার্যগুলো সৌন্দর্য্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মসজিদটির উত্তর পাশেই বিশাল আয়তনের সেই দিঘি। যার একটির নাম সাগর দিঘি।

যেভাবে যাওয়া যায়

বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল বিশ্বরোড মোড় নেমে সিএনজি অটোরিকশা যোগে ২০ মিনিট গেলেই সরাসরি মসজিদে যাওয়া যায়। সরাইল উপজেলা চত্বরের মূল ফটক থেকে রিকশা যোগে কিংবা হেঁটেও যাওয়া যায়।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মুঘল ইতিহাসের সাক্ষী আরিফাইল মসজিদ

আপলোড সময় : ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

ইসলাম ধর্মের অনন্য নিদর্শন ও মুঘল ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ‘আরিফাইল শাহি জামে মসজিদ’। অপরূপ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত মসজিদটি দেখতে অনেকটা তাজমহলের মতো।

স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে, ১৬৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার আরিফাইল গ্রামে মসজিদটি নির্মিত হয়। দরবেশ শাহ আরিফ এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তার নামানুসারেই এই মসজিদের নামকরণ করা হয়। আরও জনশ্রুতি রয়েছে, মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি দিঘি, যার পানি পান করলে আরোগ্য মিলতো।

এ ছাড়াও মসজিদটির দক্ষিণে রয়েছে দুটি কবর, যা ‘জোড়া কবর’ বা ‘রহস্যময় কবর’ নামে পরিচিত। কবর দুটিতেও মুঘল স্থাপত্যকলা ও অপূর্ব নির্মাণশৈলীর প্রভাব বিদ্যমান।

এ বিষয়ে অনেক জনশ্রুতি ও কল্পকাহিনি প্রচলিত। তবে এগুলো কার বা কাদের মাজার, কে শুয়ে আছেন এই কবরে তার প্রকৃত তথ্য কারও জানা নেই। জনশ্রুতিকেই বিশ্বাস করে প্রতিদিন লোকজন এসে নামাজ আদায়ের পর এই মাজারে বিভিন্ন মান্নত করেন।

আরিফাইল শাহি জামে মসজিদ আয়তনে লম্বায় ৮০ ফুট ও প্রস্থে ৩০ ফুট। মসজিদের চার কোনায় চারটি বুরুজ ও মোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজগুলোর নিচে মসজিদের ভেতরে অংশকে তিন ভাগে ভাগ করেছে। গম্বুজগুলোতে পদ্মফুল অঙ্কিত রয়েছে।

সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের আড়িফাইল গ্রামে গিয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তিন গম্বুজওয়ালা মসজিদটি এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মূল ফটক থেকে শুরু করে মসজিদের ভেতরেও বিভিন্ন অংশ কারুকার্য যেন জানান দিচ্ছে মুঘল আমলের উৎকর্ষতার।

চুন, সুরকি আর ইটের গাঁথুনির সঙ্গে মসজিদের ভেতরে ও বাইরের অপরূপ কারুকার্যগুলো সৌন্দর্য্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মসজিদটির উত্তর পাশেই বিশাল আয়তনের সেই দিঘি। যার একটির নাম সাগর দিঘি।

যেভাবে যাওয়া যায়

বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল বিশ্বরোড মোড় নেমে সিএনজি অটোরিকশা যোগে ২০ মিনিট গেলেই সরাসরি মসজিদে যাওয়া যায়। সরাইল উপজেলা চত্বরের মূল ফটক থেকে রিকশা যোগে কিংবা হেঁটেও যাওয়া যায়।