ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান শিলাইদহে

এবার বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ীতে। বৃহস্পতিবার (৮মে) ২৫শে বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিনদিনের এ জাতীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর।

ইতোমধ্যে এ উৎসবকে ঘিরে রবীন্দ্র প্রেমীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কুঠিবাড়ীতে বিশ্বকবির স্মৃতি রক্ষণাবেক্ষনসহ পুরো পরিবেশ ভালো করার দাবি তাদের।

 

জমিদারী দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম কুষ্টিয়ার শিলাইদহে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পরবর্তীতে নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারী আর ব্যবসার কারণে বার বার এই কুঠিবাড়ীতে ফিরে আসতেন কবি। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলী কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরষ্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়াও তিনি এখানে বসেই আমাদের জাতীয় সঙ্গীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষণ আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।

কুঠিবাড়ীর পুরনো কর্মী শাহাজাহান আলী বলেন, কবিগুরুর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, আসবাবপত্র এখানে সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে ষোল ও আট বেহারার পালকি, খাট, খাজনা আদায়ের টেবিল, ঘাস কাটার মেশিন। রয়েছে অনেক দুর্লভ ছবি।

কবিগুরু সেই সময়ে বাথরুমে কমোড ব্যবহার করতেন। সেটাও আছে। কবিগুরুর অনেক কিছু এই শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে আছে। তার বাড়িটির বিশেষ করে দরজা জানালা নষ্ট হতে চলেছে। সেগুলো নকসা ঠিক রেখে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় অনুষ্ঠান ঘিরে ইতোমধ্যে রবীন্দ্রপ্রেমিরা কুঠিবাড়িতে আসছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা আমাদের রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি হাতড়ে নিজেদেরকে সম্পৃদ্ধ করছেন। তারা বিশ্বকবির স্মৃতি সংরক্ষণ ও কুঠিবাড়ির সংস্কারসহ পুরো পরিবেশকে আরও ভালো করার দাবি করেন।

 

‘কুঠিবাড়িতে আসলেই মূলত কবি গুরুর কাছাকাছি আসা যায়’ এমন মন্তব্য করে চুয়াডাঙ্গার কলেজ শিক্ষার্থী ওয়াসিফা জোয়ার্দার পর্ণা বলেন, স্কুল জীবনে কুঠিবাড়িতে একবার এসেছিলাম। তখন যা দেখেছি তার সাথে এখন তেমন মিল নেই। সেই সময় অনেক কিছু ছিল, সবকিছু সাজানো গোছানো ছিল, এখন দেখছি কিছু কিছু জিনিস নেই। শুনেছি হারিয়ে গেছে। সেই সব হারানো জিনিস ফেরত আনতে হবে। কুঠিবাড়ির পরিবেশ আরও ভাল করতে হবে।

কবিগুরু যেই ছায়াশিতল পরিবেশের কারণে এখানে বেশি বেশি আসতেন। সেই ছায়াশিতল পরিবেশ এখন তৈরি হয়েছে। তবে ঝড় বৃষ্টি এখানে আশ্রয় নেবার কোন জায়গা নেই।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগিতায় কুঠিবাড়িতে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠানে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্র সঙ্গীত, নাটক প্রদর্শনী। রবীন্দ্র উৎসবে গ্রামীণ মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা।

শিলাইদহ কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান আল আমীন বলেন, অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি উপভোগ করার পাশাপাশি বিশ্বকবির সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে পারবে আগত দর্শনার্থীরা। তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে ওয়াটার প্রুফ স্টেজ নির্মাণ করা হয়েছে।

যে কুঠিবাড়ী রবীন্দ্রনাথকে পূর্ণতা দিয়েছিল জাতীয় অনুষ্ঠান ঘিরে সেই কুঠিবাড়ীকে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি আরও জোরদার হবে বলে মনে করেন রবীন্দ্রপ্রেমিরা।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বিতর্কে জর্জরিত ফরিদপুর উপজেলা বিএনপি কমিটি ৯ দিনের মাথায় বাতিল

বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান শিলাইদহে

আপলোড সময় : ১০:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

এবার বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ীতে। বৃহস্পতিবার (৮মে) ২৫শে বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিনদিনের এ জাতীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর।

ইতোমধ্যে এ উৎসবকে ঘিরে রবীন্দ্র প্রেমীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কুঠিবাড়ীতে বিশ্বকবির স্মৃতি রক্ষণাবেক্ষনসহ পুরো পরিবেশ ভালো করার দাবি তাদের।

 

জমিদারী দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম কুষ্টিয়ার শিলাইদহে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পরবর্তীতে নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারী আর ব্যবসার কারণে বার বার এই কুঠিবাড়ীতে ফিরে আসতেন কবি। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলী কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরষ্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়াও তিনি এখানে বসেই আমাদের জাতীয় সঙ্গীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষণ আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।

কুঠিবাড়ীর পুরনো কর্মী শাহাজাহান আলী বলেন, কবিগুরুর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, আসবাবপত্র এখানে সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে ষোল ও আট বেহারার পালকি, খাট, খাজনা আদায়ের টেবিল, ঘাস কাটার মেশিন। রয়েছে অনেক দুর্লভ ছবি।

কবিগুরু সেই সময়ে বাথরুমে কমোড ব্যবহার করতেন। সেটাও আছে। কবিগুরুর অনেক কিছু এই শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে আছে। তার বাড়িটির বিশেষ করে দরজা জানালা নষ্ট হতে চলেছে। সেগুলো নকসা ঠিক রেখে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় অনুষ্ঠান ঘিরে ইতোমধ্যে রবীন্দ্রপ্রেমিরা কুঠিবাড়িতে আসছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা আমাদের রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি হাতড়ে নিজেদেরকে সম্পৃদ্ধ করছেন। তারা বিশ্বকবির স্মৃতি সংরক্ষণ ও কুঠিবাড়ির সংস্কারসহ পুরো পরিবেশকে আরও ভালো করার দাবি করেন।

 

‘কুঠিবাড়িতে আসলেই মূলত কবি গুরুর কাছাকাছি আসা যায়’ এমন মন্তব্য করে চুয়াডাঙ্গার কলেজ শিক্ষার্থী ওয়াসিফা জোয়ার্দার পর্ণা বলেন, স্কুল জীবনে কুঠিবাড়িতে একবার এসেছিলাম। তখন যা দেখেছি তার সাথে এখন তেমন মিল নেই। সেই সময় অনেক কিছু ছিল, সবকিছু সাজানো গোছানো ছিল, এখন দেখছি কিছু কিছু জিনিস নেই। শুনেছি হারিয়ে গেছে। সেই সব হারানো জিনিস ফেরত আনতে হবে। কুঠিবাড়ির পরিবেশ আরও ভাল করতে হবে।

কবিগুরু যেই ছায়াশিতল পরিবেশের কারণে এখানে বেশি বেশি আসতেন। সেই ছায়াশিতল পরিবেশ এখন তৈরি হয়েছে। তবে ঝড় বৃষ্টি এখানে আশ্রয় নেবার কোন জায়গা নেই।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগিতায় কুঠিবাড়িতে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠানে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্র সঙ্গীত, নাটক প্রদর্শনী। রবীন্দ্র উৎসবে গ্রামীণ মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা।

শিলাইদহ কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান আল আমীন বলেন, অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি উপভোগ করার পাশাপাশি বিশ্বকবির সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে পারবে আগত দর্শনার্থীরা। তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে ওয়াটার প্রুফ স্টেজ নির্মাণ করা হয়েছে।

যে কুঠিবাড়ী রবীন্দ্রনাথকে পূর্ণতা দিয়েছিল জাতীয় অনুষ্ঠান ঘিরে সেই কুঠিবাড়ীকে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি আরও জোরদার হবে বলে মনে করেন রবীন্দ্রপ্রেমিরা।