ঢাকা , শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

বিনামূল্যের বই উৎসব পৃথিবীর অনেক দেশে অচিন্তনীয়: শিক্ষামন্ত্রী

বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, গত এক যুগের বেশি সময় বাংলাদেশ বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণের যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে, তা অনেক দেশের জন্য অচিন্তনীয়। রোববার গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপর শিক্ষার্থীদের হাতে তিনি বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেন। এবার ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীকে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যবই বিনামূল্যে বিতরণ করবে সরকার। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার মোট সংখ্যা ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে। সরকারের এই তৎপরতার ফলে শিক্ষার্থীদের ‘ঝরে পড়ার হার রোধ করা গেছে’ বলে দীপু মনির ভাষ্য। তিনি বলেন, “সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে, বাংলাদেশে বই উৎসব হয়। কোটি কোটি শিক্ষার্থী এই উৎসবে অংশ নেয়। এটি পৃথিবীর যে কোনো জায়গার জন্য একটি অচিন্তনীয় ব্যাপার। “এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার আমরা রোধ করতে পেরেছি। কারণ বাবা-মায়ের ওপর এই বই কেনার ভার আর থাকছে না।” শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যখন তিনি ছোট ছিলেন, বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে বই পাওয়ার সুযোগ তাদের সময়ে হয়নি। “বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পায়, এই নতুন বইয়ের ঘ্রাণের কথা সবাই বলেছেন। আমাদের ছোটবেলায় আমাদের এত সৌভাগ্য হয়নি। তিন থেকে ছয় মাসও আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে নতুন বই কেনার জন্য। অনেকসময় সারা বছরই পুরনো বই পড়ে পড়ে আমাদের পার করতে হয়েছে।” শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা যদি তোমোদের মত ছোট হতে পারতাম! বছরের প্রথমদিন বই নিয়ে আনন্দ করতে পারতাম! উৎসবে সামিল হতে পারতাম! তবে তোমাদের আনন্দেই আমাদের আনন্দ।” এ বছরে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে। এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা আর ‘পরীক্ষা ভীতিতে’ থাকতে হবে না বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “পরীক্ষা থাকবে, তবে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে একটা বিরাট অংশ হবে। শিক্ষার্থীরা করে করে শিখবে। কোনো মুখস্ত বিদ্যার বালাই থাকবে না। সক্রিয় শিখন হবে, অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন হবে। যা শিখবে তা আবার প্রয়োগ করতে শিখবে। কেমন করে শিখতে হয়, তাও শিখে ফেলবে। “তার মধ্য দিয়ে জীবনব্যাপী শিক্ষার যে পথ আজকে সারাবিশ্ব খুলে দিতে চায়, প্রতিটি মানুষের জন্যে, সে পথ তোমাদের জন্য খুলে যাবে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত হোক, একই সাথে যোগ্যতা, দক্ষতা, মানবিকতা, মূল্যবোধ নিয়ে বড় হবে।” সন্তানদের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে শিক্ষক- অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান দীপুমনি। “সন্তানদের কথার গুরুত্ব দিতে হব, তাহলেই তারা তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারবে। সমাজের যত ব্যাধি আছে- নারী নির্যাতন, বাল্য বিয়ে, মাদক, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ সবকিছুকে আমাদের দূর করতে হবে। সেখানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষা ব্যবস্থাপক- সবাই মিলে কাজ করলে আমাদের এই দেশটা সত্যি একেবারে সোনার বাংলা হয়ে যাবে।” মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে বই উৎসবে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বিনামূল্যের বই উৎসব পৃথিবীর অনেক দেশে অচিন্তনীয়: শিক্ষামন্ত্রী

আপলোড সময় : ০৮:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩

বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, গত এক যুগের বেশি সময় বাংলাদেশ বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণের যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে, তা অনেক দেশের জন্য অচিন্তনীয়। রোববার গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপর শিক্ষার্থীদের হাতে তিনি বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেন। এবার ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীকে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যবই বিনামূল্যে বিতরণ করবে সরকার। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার মোট সংখ্যা ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে। সরকারের এই তৎপরতার ফলে শিক্ষার্থীদের ‘ঝরে পড়ার হার রোধ করা গেছে’ বলে দীপু মনির ভাষ্য। তিনি বলেন, “সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে, বাংলাদেশে বই উৎসব হয়। কোটি কোটি শিক্ষার্থী এই উৎসবে অংশ নেয়। এটি পৃথিবীর যে কোনো জায়গার জন্য একটি অচিন্তনীয় ব্যাপার। “এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার আমরা রোধ করতে পেরেছি। কারণ বাবা-মায়ের ওপর এই বই কেনার ভার আর থাকছে না।” শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যখন তিনি ছোট ছিলেন, বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে বই পাওয়ার সুযোগ তাদের সময়ে হয়নি। “বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পায়, এই নতুন বইয়ের ঘ্রাণের কথা সবাই বলেছেন। আমাদের ছোটবেলায় আমাদের এত সৌভাগ্য হয়নি। তিন থেকে ছয় মাসও আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে নতুন বই কেনার জন্য। অনেকসময় সারা বছরই পুরনো বই পড়ে পড়ে আমাদের পার করতে হয়েছে।” শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা যদি তোমোদের মত ছোট হতে পারতাম! বছরের প্রথমদিন বই নিয়ে আনন্দ করতে পারতাম! উৎসবে সামিল হতে পারতাম! তবে তোমাদের আনন্দেই আমাদের আনন্দ।” এ বছরে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে। এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা আর ‘পরীক্ষা ভীতিতে’ থাকতে হবে না বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “পরীক্ষা থাকবে, তবে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে একটা বিরাট অংশ হবে। শিক্ষার্থীরা করে করে শিখবে। কোনো মুখস্ত বিদ্যার বালাই থাকবে না। সক্রিয় শিখন হবে, অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন হবে। যা শিখবে তা আবার প্রয়োগ করতে শিখবে। কেমন করে শিখতে হয়, তাও শিখে ফেলবে। “তার মধ্য দিয়ে জীবনব্যাপী শিক্ষার যে পথ আজকে সারাবিশ্ব খুলে দিতে চায়, প্রতিটি মানুষের জন্যে, সে পথ তোমাদের জন্য খুলে যাবে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত হোক, একই সাথে যোগ্যতা, দক্ষতা, মানবিকতা, মূল্যবোধ নিয়ে বড় হবে।” সন্তানদের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে শিক্ষক- অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান দীপুমনি। “সন্তানদের কথার গুরুত্ব দিতে হব, তাহলেই তারা তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারবে। সমাজের যত ব্যাধি আছে- নারী নির্যাতন, বাল্য বিয়ে, মাদক, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ সবকিছুকে আমাদের দূর করতে হবে। সেখানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষা ব্যবস্থাপক- সবাই মিলে কাজ করলে আমাদের এই দেশটা সত্যি একেবারে সোনার বাংলা হয়ে যাবে।” মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে বই উৎসবে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।