প্রেম অমর। প্রেম মানে না কোনো বাধা, কোনো ধর্ম, কোনো বিপত্তি। তাই প্রেমের কোনো দেশ নেই, এটা আবারও প্রমাণ করলেন ইউক্রেনের যুবক অ্যান্দ্রো প্রকিপ (২৭) ও বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেয়ে বৃষ্টি আক্তার (২৬)।
অ্যান্দ্রো প্রকিপের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রথম পরিচয় হয় বৃষ্টি আক্তারের। পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। দীর্ঘ দুই বছর চুটিয়ে প্রেম করেন তারা। এতে বাধা হয়নি প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটারের পথ, বাধা হয়নি তাদের ধর্মও। অবশেষে প্রেমের শেষ পরিণয় বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছেন অ্যান্দ্রো প্রকিপ ও বৃষ্টি আক্তার জুটি।
ইউক্রেনের নাগরিক অ্যান্দ্রো প্রকিপ বাংলাদেশে এসে ধর্ম পরিবর্তন করে নাম রেখেছেন মোহাম্মদ। বিয়ে করেছেন বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেয়ে বৃষ্টিকে। তবে স্বামীর সঙ্গে নাম মিলিয়ে বৃষ্টি আক্তারের নামও এখন বৃষ্টি প্রকিপ।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী কালাছড়া গ্রামে গিয়ে দেখা হয় বৃষ্টি ও প্রকিপের সঙ্গে। কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা জানান, দীর্ঘ দিন প্রেমের পর বিয়ে করতে পেরে অনেক খুশি। সুখি হতে এখন পরিবার ও এলাকাবাসী সবার দোয়া চান তারা।
বৃষ্টি আক্তার কালাছড়া গ্রামের কামাল মিয়া ও হাজেরা বেগমের মেয়ে। এসএসসি পাস করেছেন এলাকা থেকেই। তারপর লেখাপড়া আর এগোয়নি। টুকটাক ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। ২০২৩ সালে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠান প্রকিপকে। সেই থেকে শুরু হয় প্রেমের। গত ১৯ ডিসেম্বর পোল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসেন প্রকিপ। ওইদিনই প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোর্টে ১৫ লাখ টাকা কাবিনে এবং পরে এলাকায় এসে সামাজিকভাবে বিয়ে করেন বৃষ্টিকে।
এ বিষয়ে অ্যান্দ্রো প্রকিপ বলেন, ২০২৩ সালে ফেসবুকে আমাদের পরিচয় হয়, অনেক দিন ধরে চেনা-জানা হয়। বিয়ে করার জন্য এ দেশে এসেছি। বাংলাদেশের মানুষ খুবই ভালো। বৃষ্টিকে পেয়ে আমি অনেক খুশি। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
বৃষ্টি আক্তার জানান, টানা দুই বছর তার জন্য অপেক্ষা করেছেন। দীর্ঘদিন প্রেমের পর প্রকিপকে পেয়ে খুবই খুশি। প্রকিপ শুরু থেকেই বলছিলেন তাকে বিয়ে করবেন। শেষ পর্যন্ত তিনি তার কথা রেখেছেন। তার সঙ্গে বিদেশে চলে যেতে কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।