ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

প্রেমের টানে প্রেমিকার বাড়িতে খাদ্য কর্মকর্তা, অতঃপর…

প্রেমের টানে এক তরুণীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে আটক হয়েছেন সান্তাহারের খাদ্য পরিদর্শক ইউসুফ আলী (৫০)। প্রেমিকার বাড়িতে দুই দিন আটকে রেখে দেনদরবারের একাধিক ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে দায়িত্বরত কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকার দায়ে ওই কর্মকর্তাকে সান্তাহার থেকে পাবনায় বদলি করে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন সামন্তাহার গ্রামের এক নারীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় ঘটে বগুড়ার সান্তাহারের কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগার (সিএসডি) খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীর। দীর্ঘ চার বছর ধরে চলে তাদের সেই সম্পর্ক। বাড়ি ও অফিসে যাতায়াত ছিল দুজনেরই।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ২টায় এক কিশোরীকে নিয়ে ওই নারীর বাড়িতে যান খাদ্য কর্মকর্তা ইউসুফ আলী। বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করলেও বিয়েতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা। তখন প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তাদের আটকে দেন ওই নারী। ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

তখন উৎসুক জনতা জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের থানায় নিতে চাইলে স্থানীয়রা বাধা দেন। পরের দিন বিষয়টি নিয়ে আবারও সমাধানের চেষ্টা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। একপর্যায়ে ১১ লাখ টাকার বিনিময়ে সমাধান করতে চাইলে আপস করেননি নারী। স্থানীয় মোড়লরা আবারও পুলিশ ডাকেন। পরে বুধবার রাত ১০টায় খাদ্য কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ইউসুফ আলীর সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক৷ তিনি আমার বাড়িতে বিয়ে করতে আসেন৷ দেনমোহর নিয়ে দরকষাকষির মাঝে প্রতিবেশীরা উপস্থিত হন। একপর্যায়ে তাদের হট্টগোলে বিয়ে না হয়ে বিষয়টি টাকার মাধ্যমে সমাধানের কথা ওঠে। স্থানীয় একজনের মাধ্যমে ১১ লাখ টাকা জোর করে আমাকে দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে নিয়ে যান। কিন্তু আমি টাকা নিতে রাজি হইনি, আমি বিয়ে করব।

সান্তাহারের খাদ্য বিভাগের সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, পরিচয়ের সূত্র ধরেই ওই নারী বিভিন্ন মাধ্যমে সমস্যা সৃষ্টি করতে থাকে। পরে আমি তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করতে ক্ষেতলাল গিয়েছিলাম। সেখানে বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করে। বিভিন্নভাবে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে আমার।

ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর দীপেন্দ্র নাথ সিংহ জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে সান্তাহারের খাদ্য বিভাগের সিএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে অন্য কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ওই তরুণী অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বগুড়া খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল কাবির খান মুঠোফোনে জানান, ২৪ ঘণ্টা সান্তাহারের খাদ্য বিভাগে থাকার কথা থাকলেও তিনি (সান্তাহারের সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলী) ছিলেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে তাকে শোকজ করা হয়। পরে তাকে বদলি করে পাবনায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।

সূত্রঃ কালবেল

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

প্রেমের টানে প্রেমিকার বাড়িতে খাদ্য কর্মকর্তা, অতঃপর…

আপলোড সময় : ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

প্রেমের টানে এক তরুণীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে আটক হয়েছেন সান্তাহারের খাদ্য পরিদর্শক ইউসুফ আলী (৫০)। প্রেমিকার বাড়িতে দুই দিন আটকে রেখে দেনদরবারের একাধিক ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে দায়িত্বরত কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকার দায়ে ওই কর্মকর্তাকে সান্তাহার থেকে পাবনায় বদলি করে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন সামন্তাহার গ্রামের এক নারীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় ঘটে বগুড়ার সান্তাহারের কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগার (সিএসডি) খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীর। দীর্ঘ চার বছর ধরে চলে তাদের সেই সম্পর্ক। বাড়ি ও অফিসে যাতায়াত ছিল দুজনেরই।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ২টায় এক কিশোরীকে নিয়ে ওই নারীর বাড়িতে যান খাদ্য কর্মকর্তা ইউসুফ আলী। বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করলেও বিয়েতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা। তখন প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তাদের আটকে দেন ওই নারী। ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

তখন উৎসুক জনতা জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের থানায় নিতে চাইলে স্থানীয়রা বাধা দেন। পরের দিন বিষয়টি নিয়ে আবারও সমাধানের চেষ্টা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। একপর্যায়ে ১১ লাখ টাকার বিনিময়ে সমাধান করতে চাইলে আপস করেননি নারী। স্থানীয় মোড়লরা আবারও পুলিশ ডাকেন। পরে বুধবার রাত ১০টায় খাদ্য কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ইউসুফ আলীর সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক৷ তিনি আমার বাড়িতে বিয়ে করতে আসেন৷ দেনমোহর নিয়ে দরকষাকষির মাঝে প্রতিবেশীরা উপস্থিত হন। একপর্যায়ে তাদের হট্টগোলে বিয়ে না হয়ে বিষয়টি টাকার মাধ্যমে সমাধানের কথা ওঠে। স্থানীয় একজনের মাধ্যমে ১১ লাখ টাকা জোর করে আমাকে দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে নিয়ে যান। কিন্তু আমি টাকা নিতে রাজি হইনি, আমি বিয়ে করব।

সান্তাহারের খাদ্য বিভাগের সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, পরিচয়ের সূত্র ধরেই ওই নারী বিভিন্ন মাধ্যমে সমস্যা সৃষ্টি করতে থাকে। পরে আমি তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করতে ক্ষেতলাল গিয়েছিলাম। সেখানে বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করে। বিভিন্নভাবে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে আমার।

ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর দীপেন্দ্র নাথ সিংহ জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে সান্তাহারের খাদ্য বিভাগের সিএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে অন্য কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ওই তরুণী অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বগুড়া খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল কাবির খান মুঠোফোনে জানান, ২৪ ঘণ্টা সান্তাহারের খাদ্য বিভাগে থাকার কথা থাকলেও তিনি (সান্তাহারের সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলী) ছিলেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে তাকে শোকজ করা হয়। পরে তাকে বদলি করে পাবনায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।

সূত্রঃ কালবেল