ঢাকা , শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র; যা গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম। এর আগে ২০০৮ সালে আরএএফ লেকেনহেথে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে মস্কোর পক্ষ থেকে স্নায়ুযুদ্ধের হুমকি কমে যাওয়ায় সরিয়ে ফেলা হয় সেগুলো। পেন্টাগনের নথিপত্র যাচাই করে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবের অধীনে হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত বোমার চেয়ে তিনগুণ শক্তিশালী ওয়ারহেডগুলো সাফোকের আরএএফ লেকেনহেথে স্থাপন করা হবে। নথি ঘেঁটে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের এই সামরিক ঘাঁটির জন্য নতুন অস্ত্র কেনার আদেশ দিয়েছে পেন্টাগন। এই তালিকায় আছে শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে সামরিক কর্মীদের রক্ষা করার জন্য ব্যালিস্টিক শিল্ডসহ নতুন বেশ কিছু সরঞ্জাম। আর সেখানে কাজ করা মার্কিন সেনাদের জন্য আগামী জুন মাসে শুরু হবে নতুন আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণকাজ।

 

আরএএফ লেকেনহেথের কাছে ৫০ কিলোটনের বি৬১-১২ গ্র্যাভিটি বোমা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে—যার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও তিনগুণ বেশি। যুক্তরাজ্যের এই বিমান ঘাঁটির জন্য নতুন অস্ত্র ক্রয়ের চুক্তি প্রকাশ হওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করতে চাইছে।

 

পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বলেও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উল্লেখিত স্থানে পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত বা অস্বীকার করার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য এবং ন্যাটোর একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি রয়েছে।

 

ন্যাটো বাহিনী এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে প্রস্তুত থাকার জন্য সম্প্রতি আটলান্টিকের উভয় প্রান্তের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই সতর্কতা এসেছে। এ সপ্তাহের শুরুতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিদায়ী প্রধান জেনারেল স্যার প্যাট্রিক স্যান্ডার্স বলেন, সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৭৪ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে কমপক্ষে ৪৫ হাজারকে মোতায়েন রাখতে হবে। জনগণকেও যুদ্ধের জন্য ডাকা হবে কারণ, সেনাবাহিনীর আকার বেশ ছোট।

 

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেমলিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের উত্তেজনা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র বাড়ানো এবং সেগুলোকে আরও উন্নত করার কর্মসূচি গ্রহণ করে ন্যাটো।

 

তবে, যুক্তরাজ্যে পুনরায় মার্কিন পারমাণবিক বোমা মোতায়েনের পরিকল্পনা ভালোভাবে নেয়নি রাশিয়া। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনাকে উসকানি হিসেবে দেখবে মস্কো। একইসঙ্গে তা মোকাবিলায় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্রেমলিন।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

আপলোড সময় : ০৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৪

রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র; যা গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম। এর আগে ২০০৮ সালে আরএএফ লেকেনহেথে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে মস্কোর পক্ষ থেকে স্নায়ুযুদ্ধের হুমকি কমে যাওয়ায় সরিয়ে ফেলা হয় সেগুলো। পেন্টাগনের নথিপত্র যাচাই করে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবের অধীনে হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত বোমার চেয়ে তিনগুণ শক্তিশালী ওয়ারহেডগুলো সাফোকের আরএএফ লেকেনহেথে স্থাপন করা হবে। নথি ঘেঁটে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের এই সামরিক ঘাঁটির জন্য নতুন অস্ত্র কেনার আদেশ দিয়েছে পেন্টাগন। এই তালিকায় আছে শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে সামরিক কর্মীদের রক্ষা করার জন্য ব্যালিস্টিক শিল্ডসহ নতুন বেশ কিছু সরঞ্জাম। আর সেখানে কাজ করা মার্কিন সেনাদের জন্য আগামী জুন মাসে শুরু হবে নতুন আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণকাজ।

 

আরএএফ লেকেনহেথের কাছে ৫০ কিলোটনের বি৬১-১২ গ্র্যাভিটি বোমা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে—যার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও তিনগুণ বেশি। যুক্তরাজ্যের এই বিমান ঘাঁটির জন্য নতুন অস্ত্র ক্রয়ের চুক্তি প্রকাশ হওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করতে চাইছে।

 

পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বলেও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উল্লেখিত স্থানে পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত বা অস্বীকার করার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য এবং ন্যাটোর একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি রয়েছে।

 

ন্যাটো বাহিনী এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে প্রস্তুত থাকার জন্য সম্প্রতি আটলান্টিকের উভয় প্রান্তের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই সতর্কতা এসেছে। এ সপ্তাহের শুরুতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিদায়ী প্রধান জেনারেল স্যার প্যাট্রিক স্যান্ডার্স বলেন, সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৭৪ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে কমপক্ষে ৪৫ হাজারকে মোতায়েন রাখতে হবে। জনগণকেও যুদ্ধের জন্য ডাকা হবে কারণ, সেনাবাহিনীর আকার বেশ ছোট।

 

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেমলিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের উত্তেজনা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র বাড়ানো এবং সেগুলোকে আরও উন্নত করার কর্মসূচি গ্রহণ করে ন্যাটো।

 

তবে, যুক্তরাজ্যে পুনরায় মার্কিন পারমাণবিক বোমা মোতায়েনের পরিকল্পনা ভালোভাবে নেয়নি রাশিয়া। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনাকে উসকানি হিসেবে দেখবে মস্কো। একইসঙ্গে তা মোকাবিলায় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্রেমলিন।