ঢাকা , বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

নবজাতককে জিম্মি করে অর্থ দাবির অভিযোগ

গাজীপুরে বাড়িওয়ালা নাছিমা বেগমের (৪২) বিরুদ্ধে নবজাতককে একদিন জিম্মি করে দেড় লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে ওই নবজাতকের মা রুমা আক্তার (২২) বাড়িওয়ালাকে অভিযুক্ত করে জয়দেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ওইদিন রাতেই পিরুজালি গ্রামের এক বাড়ি থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়।

 

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল হাসান।

 

এর আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর পূর্বপাড়া গ্রামের নাছিমা বেগমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি স্থানীয় মৃত মিনহাজের স্ত্রী।

 

জানা যায়, নাছিমা নবজাতককে পাশের পিরুজালি গ্রামের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে দত্তক দিয়েছিলেন। নবজাতকের মা রুমা আক্তার শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার সালদা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তার স্বামী নূর ইসলামের সঙ্গে নাছিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার স্বামী পেশায় একজন ইটভাটার শ্রমিক।

 

নবজাতকের মা রুমা আক্তার বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তার স্বামী ও আত্মীয় স্বজন বাড়ির মালিক নাছিমা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে অটোরিকশায় হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন রুমা আক্তারকে। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই অটোরিকশার ভেতরেই রুমা ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। নাছিমা বেগম রুমা আক্তার ও তার স্বামীকে বাসায় ফিরে যেতে বলেন এবং নবজাতকের নাড়ি কাটার জন্য তিনি একই হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রায় এক ঘণ্টা পর নাছিমা বাড়িতে আসলে নবজাতককে ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে আমাদের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে পারবো না নাছিমা জানলেও তিনি নবজাতক ফেরত দেননি। পরে ৪দিন যাবৎ নাছিমার কাছে নবজাতক ফেরত চাইলে নবজাতক ফেরত দেবে না বলে জানালে জয়দেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করি আমি।

 

এ দিকে স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে পুলিশ পিরুজালী গ্রামের ওই নিঃসন্তান দম্পতির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নবজাতককে উদ্ধার করেছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করেনি পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে নাছিমা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।

 

স্থানীয়রা আরও জানান, নাছিমা বেগম দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। নবজাতক চুরির ভয়ে রুমা আক্তার তার স্বামীকে নিয়ে বুধবার রাতেই নাছিমা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।

 

স্থানীয়রা অভিযুক্ত নাছিমা বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

 

অভিযুক্ত নাছিমার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার মেয়ে বলেন, ‘মা বাড়িতে নেই।

 

একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলেও রিসিভ না করায় এ বিষয়ে নাছিমার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহ্ আলম বলেন, পুলিশ নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

 

জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল হাসান বলেন, ‘নবজাতককে উদ্ধার করে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, টাকার অভাবে রুমা আক্তার তার নবজাতক জন্মের আগেই দত্তক দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এটি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নবজাতককে জিম্মি করে অর্থ দাবির অভিযোগ

আপলোড সময় : ১১:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

গাজীপুরে বাড়িওয়ালা নাছিমা বেগমের (৪২) বিরুদ্ধে নবজাতককে একদিন জিম্মি করে দেড় লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে ওই নবজাতকের মা রুমা আক্তার (২২) বাড়িওয়ালাকে অভিযুক্ত করে জয়দেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ওইদিন রাতেই পিরুজালি গ্রামের এক বাড়ি থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়।

 

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল হাসান।

 

এর আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর পূর্বপাড়া গ্রামের নাছিমা বেগমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি স্থানীয় মৃত মিনহাজের স্ত্রী।

 

জানা যায়, নাছিমা নবজাতককে পাশের পিরুজালি গ্রামের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে দত্তক দিয়েছিলেন। নবজাতকের মা রুমা আক্তার শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার সালদা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তার স্বামী নূর ইসলামের সঙ্গে নাছিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার স্বামী পেশায় একজন ইটভাটার শ্রমিক।

 

নবজাতকের মা রুমা আক্তার বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তার স্বামী ও আত্মীয় স্বজন বাড়ির মালিক নাছিমা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে অটোরিকশায় হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন রুমা আক্তারকে। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই অটোরিকশার ভেতরেই রুমা ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। নাছিমা বেগম রুমা আক্তার ও তার স্বামীকে বাসায় ফিরে যেতে বলেন এবং নবজাতকের নাড়ি কাটার জন্য তিনি একই হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রায় এক ঘণ্টা পর নাছিমা বাড়িতে আসলে নবজাতককে ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে আমাদের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে পারবো না নাছিমা জানলেও তিনি নবজাতক ফেরত দেননি। পরে ৪দিন যাবৎ নাছিমার কাছে নবজাতক ফেরত চাইলে নবজাতক ফেরত দেবে না বলে জানালে জয়দেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করি আমি।

 

এ দিকে স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে পুলিশ পিরুজালী গ্রামের ওই নিঃসন্তান দম্পতির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নবজাতককে উদ্ধার করেছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করেনি পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে নাছিমা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।

 

স্থানীয়রা আরও জানান, নাছিমা বেগম দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। নবজাতক চুরির ভয়ে রুমা আক্তার তার স্বামীকে নিয়ে বুধবার রাতেই নাছিমা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।

 

স্থানীয়রা অভিযুক্ত নাছিমা বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

 

অভিযুক্ত নাছিমার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার মেয়ে বলেন, ‘মা বাড়িতে নেই।

 

একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলেও রিসিভ না করায় এ বিষয়ে নাছিমার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহ্ আলম বলেন, পুলিশ নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

 

জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল হাসান বলেন, ‘নবজাতককে উদ্ধার করে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, টাকার অভাবে রুমা আক্তার তার নবজাতক জন্মের আগেই দত্তক দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এটি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।