ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

কিশোরের কাঁধে সংসারের ভার,দাদার পর বাবাও ‘হত্যার’ শিকার

নাঈম সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাদাম বিক্রি করে। সম্প্রতি পিরোজপুর সদরের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী বঙ্গমাতা সেতুতেছ

পিরোজপুরের আদালত প্রাঙ্গণ, বঙ্গমাতা সেতু ও আশপাশ এলাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাদাম বিক্রি করে মো. নাঈম (১৪) নামের এক কিশোর। এক বছর ধরে নাঈমের কাঁধে পরিবার দায়িত্বভার পড়েছে। প্রথমে মুদিদোকানে কাজ নেয়। পরে সে কাজ ছেড়ে বাদাম বিক্রি শুরু করে। এখন বাদাম বিক্রি থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে পাঠিয়ে দেয় মায়ের কাছে।

মো. নাঈম পিরোজপুর পৌরসভার মণ্ডলপাড়া মহল্লায় মো. মামুন নামে তার এক মামার কাছে থাকে। মামুন নাঈমের মা নার্গিস বেগমের খালাতো ভাই। নাঈমের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রি শিবপুর গ্রামে। ছয় মাস ধরে নাঈম পিরোজপুর শহরে বাদাম বিক্রি করছে। এর আগে সে একটি মুদিদোকানে তিনহা জার টাকা বেতনে কাজ করত।

 

প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা লাভ হয়। থাকাখাওয়া বাবদ মামা মামুনকে কিছু টাকা দেয়। বাকি টাকা মাকে পাঠায়।

মো. নাঈম, বাদাম বিক্রেতা

নাঈমের মা নার্গিস বেগম বলেন, নাঈমের দাদা আবদুস সোবাহান গরুর ব্যবসা করতেন। আট বছর আগে আবদুস সোবাহানকে হত্যা করে টাকা ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মামলা করেন নাঈমের বাবা মো. শামীম। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর ওই হত্যা মামলার আসামিদের হাতে খুন হন শামীম। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি শামীম নিহত হলে দুই ছেলে ও শাশুড়িকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন। অভাবের সংসারে চারজনের ভরণপোষণ ও দুই ছেলের পড়াশোনা চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল তাঁর। এমন পরিস্থিতিতে এক বছর আগে বড় ছেলে নাঈমের পড়াশোনা বন্ধ করে এক মুদিদোকানে মাসিক তিন হাজার টাকা বেতনে কাজে নিয়ে দেন। ছয় মাস আগে সেই কাজ ছেড়ে নাঈম বাদাম বিক্রি শুরু করেছে। বাদাম বিক্রি করে সব খরচের পর নাঈম তাঁকে (নার্গিসকে) প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা দেয়। ছেলের পাঠানো টাকা আর ঝিয়ের কাজ করে জীবন কাটছে তাঁর।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রি শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. জসিম উদ্দিন খান মুঠোফোনে বলেন, আবদুস সেবাহান খুন হয়েছিলেন। তাঁর ছেলে শামীমের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় হয়েছিল বলে শুনেছেন। তবে শামীমের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছিল।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কিশোরের কাঁধে সংসারের ভার,দাদার পর বাবাও ‘হত্যার’ শিকার

আপলোড সময় : ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

পিরোজপুরের আদালত প্রাঙ্গণ, বঙ্গমাতা সেতু ও আশপাশ এলাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাদাম বিক্রি করে মো. নাঈম (১৪) নামের এক কিশোর। এক বছর ধরে নাঈমের কাঁধে পরিবার দায়িত্বভার পড়েছে। প্রথমে মুদিদোকানে কাজ নেয়। পরে সে কাজ ছেড়ে বাদাম বিক্রি শুরু করে। এখন বাদাম বিক্রি থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে পাঠিয়ে দেয় মায়ের কাছে।

মো. নাঈম পিরোজপুর পৌরসভার মণ্ডলপাড়া মহল্লায় মো. মামুন নামে তার এক মামার কাছে থাকে। মামুন নাঈমের মা নার্গিস বেগমের খালাতো ভাই। নাঈমের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রি শিবপুর গ্রামে। ছয় মাস ধরে নাঈম পিরোজপুর শহরে বাদাম বিক্রি করছে। এর আগে সে একটি মুদিদোকানে তিনহা জার টাকা বেতনে কাজ করত।

 

প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা লাভ হয়। থাকাখাওয়া বাবদ মামা মামুনকে কিছু টাকা দেয়। বাকি টাকা মাকে পাঠায়।

মো. নাঈম, বাদাম বিক্রেতা

নাঈমের মা নার্গিস বেগম বলেন, নাঈমের দাদা আবদুস সোবাহান গরুর ব্যবসা করতেন। আট বছর আগে আবদুস সোবাহানকে হত্যা করে টাকা ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মামলা করেন নাঈমের বাবা মো. শামীম। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর ওই হত্যা মামলার আসামিদের হাতে খুন হন শামীম। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি শামীম নিহত হলে দুই ছেলে ও শাশুড়িকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন। অভাবের সংসারে চারজনের ভরণপোষণ ও দুই ছেলের পড়াশোনা চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল তাঁর। এমন পরিস্থিতিতে এক বছর আগে বড় ছেলে নাঈমের পড়াশোনা বন্ধ করে এক মুদিদোকানে মাসিক তিন হাজার টাকা বেতনে কাজে নিয়ে দেন। ছয় মাস আগে সেই কাজ ছেড়ে নাঈম বাদাম বিক্রি শুরু করেছে। বাদাম বিক্রি করে সব খরচের পর নাঈম তাঁকে (নার্গিসকে) প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা দেয়। ছেলের পাঠানো টাকা আর ঝিয়ের কাজ করে জীবন কাটছে তাঁর।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রি শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. জসিম উদ্দিন খান মুঠোফোনে বলেন, আবদুস সেবাহান খুন হয়েছিলেন। তাঁর ছেলে শামীমের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় হয়েছিল বলে শুনেছেন। তবে শামীমের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছিল।