ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

চাটমোহরে দিনব্যাপী পুষড়া আদিবাসী উৎসবে মিলনমেলা

  • হান্ডিয়াল নিউজ
  • আপলোড সময় : ১১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৬৩ বার দেখা হয়েছে।

আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে পাবনার চাটমোহরে আদিবাসী পল্লিতে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী পুষড়া আদিবাসী উৎসব। আলোচনা সভা,কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা,নাচ,গান,পূজাসহ নানা আয়োজনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল বাঘলবাড়ী কৈ আদিবাসী পল্লিতে এই উৎসবের আয়োজন করে চাটমোহর উপজেলা আদিবাসী পরিষদ ও মানব মুক্তি সংস্থা (এমএমএস)।
প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন মেঘনাদ মাহাতো। চাটমোহর উপজেলা আদিবাসী পরিষদের সভাপতি কর্ণ মুরারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন,উপজেলা আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ দে,বৃ-রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন,মানব মুক্তি সংস্থার প্রকল্প কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন,মনিটরিং কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন।

 

উৎসবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কয়েকজন কৃতি শিক্ষার্থীকে এবং একজন রতœগর্ভা মাকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। এছাড়া ছিল আদিবাসী নাচ,আদিবাসী গান,ঝুমুর নাচ,দেশাত্মবোধক গান,করম পূজা,আদিবাসী নাটকসহ বিভিন্ন আয়োজন। দীর্ঘ বছর পর এমন উৎসবে আয়োজনে উচ্ছ্বসিত ছিলেন আদিবাসীরা। সবার অংশগ্রহণে উৎসব পরিণত হয় প্রাণের মিলনমেলায়।

স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী সুগন্ধা মাহাতো বলেন,আমরা নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা তো এসব উৎসব সম্পর্কে জানতে পারছি না। আমাদের কেউ জানাচ্ছে না। এখানকার মানুষ গরীব। তাদের তো পর্যাপ্ত টাকা নাই এমন উৎসব করার। তাই সকলের সহযোগিতা পেলে আমাদের শিল্প সাংস্কৃতিক উৎসব ধরে রাখা সম্ভব।

বৃদ্ধা প্রমীলা রানী মাহাতো বলেন,পৌষ মাসে এই পূজা বা উৎসব হয় জন্য নাম হয়েছে পুষড়া আদিবাসী উৎসব। অনেক বছর আগে এসব উৎসব হতো। এখন আর দেখা যায় না। অনেকদিন পর এই উৎসব হওয়ায় খুব খুশি আমরা। এরকম প্রতি বছর হলে খুব ভালো হয়।

সুরভি মাহাতো,তাপসি মাহাতো বলেন,দিন দিন তো আদিবাসীদের সবকিছুই বলা যায় হারিয়ে যাচ্ছে। ধরে রাখার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি অবস্থা কিছুই নেই আমাদের। তাইতো আমাদের কৃষ্টি কালচার হারিয়ে যেতে বসেছে। সরকারের কাছে দাবি, আমাদের সংস্কৃতি উৎসব ধরে রাখার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
কাশু চন্দ্র সিং বলেন,আমাদের ছেলেমেয়েরা আমাদের পূজা,উৎসব,শিল্প সংস্কৃতি কি, কেমন কিছুই জানে না। তাদের জানাতে আমরা অভিভাবকরাও ব্যর্থ। কারণ জীবন চালাতে নিত্যদিন আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব। মানব মুক্তি সংস্থা আমাদের কথা ভেবে যে আয়োজন করছে,আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সত্যি প্রশংসনীয়। এটা অব্যাহত থাকুক।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং ইউ ক্যান বাংলাদেশ ও খ্রিস্টিয়ান এইডের সহযোগিতায় আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে ও তাদের শিল্প সংস্কৃতি ধরে রাখতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি সংগঠন মানব মুক্তি সংস্থা।

মানব মুক্তি সংস্থা (এম এম এস)’র প্রকল্প কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান,নাগরিক সংগঠনের অংশগ্রহণে জনপরিসর সম্প্রসারণ ও সুশাসন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের শিল্প সংস্কৃতি ধরে রাখতে আমরা কাজ করছি। পরিবারের আয়বৃদ্ধি মুলক প্রশিক্ষণ,যুব সমাজকে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৫০টি পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার কাজ চলমান রয়েছে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

চাটমোহরে দিনব্যাপী পুষড়া আদিবাসী উৎসবে মিলনমেলা

আপলোড সময় : ১১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে পাবনার চাটমোহরে আদিবাসী পল্লিতে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী পুষড়া আদিবাসী উৎসব। আলোচনা সভা,কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা,নাচ,গান,পূজাসহ নানা আয়োজনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল বাঘলবাড়ী কৈ আদিবাসী পল্লিতে এই উৎসবের আয়োজন করে চাটমোহর উপজেলা আদিবাসী পরিষদ ও মানব মুক্তি সংস্থা (এমএমএস)।
প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন মেঘনাদ মাহাতো। চাটমোহর উপজেলা আদিবাসী পরিষদের সভাপতি কর্ণ মুরারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন,উপজেলা আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ দে,বৃ-রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন,মানব মুক্তি সংস্থার প্রকল্প কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন,মনিটরিং কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন।

 

উৎসবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কয়েকজন কৃতি শিক্ষার্থীকে এবং একজন রতœগর্ভা মাকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। এছাড়া ছিল আদিবাসী নাচ,আদিবাসী গান,ঝুমুর নাচ,দেশাত্মবোধক গান,করম পূজা,আদিবাসী নাটকসহ বিভিন্ন আয়োজন। দীর্ঘ বছর পর এমন উৎসবে আয়োজনে উচ্ছ্বসিত ছিলেন আদিবাসীরা। সবার অংশগ্রহণে উৎসব পরিণত হয় প্রাণের মিলনমেলায়।

স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী সুগন্ধা মাহাতো বলেন,আমরা নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা তো এসব উৎসব সম্পর্কে জানতে পারছি না। আমাদের কেউ জানাচ্ছে না। এখানকার মানুষ গরীব। তাদের তো পর্যাপ্ত টাকা নাই এমন উৎসব করার। তাই সকলের সহযোগিতা পেলে আমাদের শিল্প সাংস্কৃতিক উৎসব ধরে রাখা সম্ভব।

বৃদ্ধা প্রমীলা রানী মাহাতো বলেন,পৌষ মাসে এই পূজা বা উৎসব হয় জন্য নাম হয়েছে পুষড়া আদিবাসী উৎসব। অনেক বছর আগে এসব উৎসব হতো। এখন আর দেখা যায় না। অনেকদিন পর এই উৎসব হওয়ায় খুব খুশি আমরা। এরকম প্রতি বছর হলে খুব ভালো হয়।

সুরভি মাহাতো,তাপসি মাহাতো বলেন,দিন দিন তো আদিবাসীদের সবকিছুই বলা যায় হারিয়ে যাচ্ছে। ধরে রাখার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি অবস্থা কিছুই নেই আমাদের। তাইতো আমাদের কৃষ্টি কালচার হারিয়ে যেতে বসেছে। সরকারের কাছে দাবি, আমাদের সংস্কৃতি উৎসব ধরে রাখার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
কাশু চন্দ্র সিং বলেন,আমাদের ছেলেমেয়েরা আমাদের পূজা,উৎসব,শিল্প সংস্কৃতি কি, কেমন কিছুই জানে না। তাদের জানাতে আমরা অভিভাবকরাও ব্যর্থ। কারণ জীবন চালাতে নিত্যদিন আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব। মানব মুক্তি সংস্থা আমাদের কথা ভেবে যে আয়োজন করছে,আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সত্যি প্রশংসনীয়। এটা অব্যাহত থাকুক।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং ইউ ক্যান বাংলাদেশ ও খ্রিস্টিয়ান এইডের সহযোগিতায় আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে ও তাদের শিল্প সংস্কৃতি ধরে রাখতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি সংগঠন মানব মুক্তি সংস্থা।

মানব মুক্তি সংস্থা (এম এম এস)’র প্রকল্প কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান,নাগরিক সংগঠনের অংশগ্রহণে জনপরিসর সম্প্রসারণ ও সুশাসন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের শিল্প সংস্কৃতি ধরে রাখতে আমরা কাজ করছি। পরিবারের আয়বৃদ্ধি মুলক প্রশিক্ষণ,যুব সমাজকে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৫০টি পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার কাজ চলমান রয়েছে।