ঢাকা , শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

‘গাজায় ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে শিশুরা’

ফাইল ছবি

গাজার উত্তরাঞ্চলে শিশুরা খেতে না পেয়ে মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইসাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি এই ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন।

ডব্লিউএইচওর প্রধান জানান, তাদের কর্মকর্তারা রোববার (৩ মার্চ) আল-আওদা ও কামাল আদওয়ান হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। এসব হাসপাতালের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। খেতে না পেয়ে এখানে সম্প্রতি ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুরা তীব্র অপুষ্টিহীনতায় ভুগছে। আল-আওদা হাসপাতালের একটি ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তাই এর অবস্থা বিশেষভাবে আতঙ্কজনক।

 

গত রোববার গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে অন্তত ১৫ শিশু মারা গেছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের একটি হাসপাতালে রোববার আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

 

সোমবার ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, দক্ষীণাঞ্চলীয় শহর রাফার একটি হাসপাতালে ১৬তম শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, উত্তর গাজার শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টির শিকার হচ্ছে, অনাহারে মারা যাচ্ছে, জ্বালানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহের গুরুতর ঘাটতি, হাসপাতাল ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে প্রায় তিন লাখ মানুষ সামান্য খাদ্য এবং পানি পাচ্ছে।

 

এদিকে গত সপ্তাহেই জাতিসংঘ গাজায় দুর্ভিক্ষ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছিল। জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছিলেন, গাজা উপত্যকা জুড়ে কমপক্ষে ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ (জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ) ভয়াবহ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলে দুই বছরের কম বয়সী ছয় শিশুর মধ্যে একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে।

 

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক বলেছেন, আমরা যে শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা করছিলাম তা এখানে চলমান। অপুষ্টির জন্য গাজা উপত্যকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

 

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫৩ জনকে গাজায় আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন বলে অভিহিত করেছে।

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের চলমান আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৫০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

‘গাজায় ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে শিশুরা’

আপলোড সময় : ০৯:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪

গাজার উত্তরাঞ্চলে শিশুরা খেতে না পেয়ে মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইসাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি এই ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন।

ডব্লিউএইচওর প্রধান জানান, তাদের কর্মকর্তারা রোববার (৩ মার্চ) আল-আওদা ও কামাল আদওয়ান হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। এসব হাসপাতালের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। খেতে না পেয়ে এখানে সম্প্রতি ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুরা তীব্র অপুষ্টিহীনতায় ভুগছে। আল-আওদা হাসপাতালের একটি ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তাই এর অবস্থা বিশেষভাবে আতঙ্কজনক।

 

গত রোববার গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে অন্তত ১৫ শিশু মারা গেছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের একটি হাসপাতালে রোববার আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

 

সোমবার ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, দক্ষীণাঞ্চলীয় শহর রাফার একটি হাসপাতালে ১৬তম শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, উত্তর গাজার শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টির শিকার হচ্ছে, অনাহারে মারা যাচ্ছে, জ্বালানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহের গুরুতর ঘাটতি, হাসপাতাল ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে প্রায় তিন লাখ মানুষ সামান্য খাদ্য এবং পানি পাচ্ছে।

 

এদিকে গত সপ্তাহেই জাতিসংঘ গাজায় দুর্ভিক্ষ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছিল। জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছিলেন, গাজা উপত্যকা জুড়ে কমপক্ষে ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ (জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ) ভয়াবহ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলে দুই বছরের কম বয়সী ছয় শিশুর মধ্যে একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে।

 

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক বলেছেন, আমরা যে শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা করছিলাম তা এখানে চলমান। অপুষ্টির জন্য গাজা উপত্যকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

 

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫৩ জনকে গাজায় আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন বলে অভিহিত করেছে।

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের চলমান আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৫০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।