ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে পাগল করা ঘ্রাণ

‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ…।

পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।

বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য বিখ্যাত। এজন্য এ জেলাকে বলা হয় আমের রাজধানী।

জেলার শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটে রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।

তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।

এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা।

বাগান মালিক আবদুল আলীম ও আলাউদ্দিন জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে মুকুল বের হচ্ছে।

তারা জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।

বাগান মালিকরা আরও জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুয়ারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বাগান আছে ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আর আম গাছ আছে প্রায় ১৯ লাখ।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিন জানান, গেলো দুই সপ্তাহ থেকে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। মূলত আবহাওয়াগত কারনে দেশীয় জাতের গাছে এই আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, এ সময় বাগানে বসবাস করা হপার বা ফুদকী পোকা যারা মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করতে হবে। তবে যেহেতু দুই একদিন থেকে কুয়াশা বেশি পড়ছে তাই এখন স্প্রে করে খুব ভালো ফল পাবেন না চাষীরা।

কারণ ঠাণ্ডার কারণে এমনিতেই হপার পোকা গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকবে। তবে আরও এক সপ্তাহ পরে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে নিয়ে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাসক স্প্রে করার পরামর্শ দেন ওই কর্মকর্তা।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে পাগল করা ঘ্রাণ

আপলোড সময় : ১২:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ…।

পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।

বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য বিখ্যাত। এজন্য এ জেলাকে বলা হয় আমের রাজধানী।

জেলার শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটে রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।

তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।

এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা।

বাগান মালিক আবদুল আলীম ও আলাউদ্দিন জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে মুকুল বের হচ্ছে।

তারা জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।

বাগান মালিকরা আরও জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুয়ারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বাগান আছে ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আর আম গাছ আছে প্রায় ১৯ লাখ।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিন জানান, গেলো দুই সপ্তাহ থেকে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। মূলত আবহাওয়াগত কারনে দেশীয় জাতের গাছে এই আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, এ সময় বাগানে বসবাস করা হপার বা ফুদকী পোকা যারা মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করতে হবে। তবে যেহেতু দুই একদিন থেকে কুয়াশা বেশি পড়ছে তাই এখন স্প্রে করে খুব ভালো ফল পাবেন না চাষীরা।

কারণ ঠাণ্ডার কারণে এমনিতেই হপার পোকা গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকবে। তবে আরও এক সপ্তাহ পরে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে নিয়ে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাসক স্প্রে করার পরামর্শ দেন ওই কর্মকর্তা।