ঢাকা , বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

খরতাপে পুড়ছে দেশ, বিপর্যস্ত জনজীবন

ছবি : সংগৃহীত

আজ পহেলা বৈশাখ। চৈত্রের শেষ খরতাপে পুড়ছে দেশ। রাজধানীসহ সারাদেশে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। তীব্র গরমে সবচেয়ে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। রোদের তীব্রতা এতটাই বেশি যে বাইরে কাজে বের হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। একটু স্বস্তি পেতে অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন পার্কে কিংবা রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায়।

রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সোহেল রানা। থাকেন মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায়। পহেলা বৈশাখ পালনে পরিবার নিয়ে ধানমন্ডি লেকে ঘুরতে এসেছেন।

আরটিভি নিউজকে তিনি বলেন, খুব খারাপ অবস্থা। পরিবার নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু গরমে আর থাকতে পারছি না। মেয়েটা বাসায় যাওয়ার জন্য কাঁদছে। ওর আর ভালো লাগছে না।

একই অবস্থা পুরান ঢাকার আসাদের। তিনি বলেন, বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। গরম সহ্য করতে পারছি না। রোজা রেখেছি। তাই পানি বা অন্য কিছু খেতেও পারছি না। গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।

গ্রীনরোডে রিকশাচালক বকুল বলেন, মামা আমাদের মতো গরিবদের আর গরম, মরলেও কি, বাঁচলেইবা কি? দেহার কেউ নাই, রোদে পুইড়া, বৃষ্টিতে ভিইজা চলে আমাগো জীবন।

চৈত্র বিদায়ে দরজায় হাজির পহেলা বৈশাখ। চৈতালি হাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তীব্র তাপদাহ। এক সপ্তাহ ধরে পুড়ছে নগর জীবন। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। দিনে তীব্র গরমের পর রাতেও নেই স্বস্তি। রাতেও প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। এর মধ্যে কোনো ভালো খবর দিতে পারছে না আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সহসাই বৃষ্টির দেখা মিলবে না। বাড়বে আরো তাপের তীব্রতা। দেশের অধিকাংশ জেলায় ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সেটি ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের ৮ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও বাকি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া মোংলায় ৪০৮, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪০.৫, যশোরে ৪০.৪, ফরিদপুরে ৪০.৩, কুমারখালীতে ৪০.০, খুলনায় ৩৯.৮, সাতক্ষীরায় ৩৯.৭, ঢাকায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ ছাড়া পরবর্তী তিন দিনে আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, কোনো এলাকায় তাপমাত্রা যখন ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাকে বলে মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটি মৃদু তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসই হলো তীব্র তাপপ্রবাহ।

 

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

খরতাপে পুড়ছে দেশ, বিপর্যস্ত জনজীবন

আপলোড সময় : ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৩

আজ পহেলা বৈশাখ। চৈত্রের শেষ খরতাপে পুড়ছে দেশ। রাজধানীসহ সারাদেশে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। তীব্র গরমে সবচেয়ে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। রোদের তীব্রতা এতটাই বেশি যে বাইরে কাজে বের হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। একটু স্বস্তি পেতে অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন পার্কে কিংবা রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায়।

রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সোহেল রানা। থাকেন মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায়। পহেলা বৈশাখ পালনে পরিবার নিয়ে ধানমন্ডি লেকে ঘুরতে এসেছেন।

আরটিভি নিউজকে তিনি বলেন, খুব খারাপ অবস্থা। পরিবার নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু গরমে আর থাকতে পারছি না। মেয়েটা বাসায় যাওয়ার জন্য কাঁদছে। ওর আর ভালো লাগছে না।

একই অবস্থা পুরান ঢাকার আসাদের। তিনি বলেন, বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। গরম সহ্য করতে পারছি না। রোজা রেখেছি। তাই পানি বা অন্য কিছু খেতেও পারছি না। গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।

গ্রীনরোডে রিকশাচালক বকুল বলেন, মামা আমাদের মতো গরিবদের আর গরম, মরলেও কি, বাঁচলেইবা কি? দেহার কেউ নাই, রোদে পুইড়া, বৃষ্টিতে ভিইজা চলে আমাগো জীবন।

চৈত্র বিদায়ে দরজায় হাজির পহেলা বৈশাখ। চৈতালি হাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তীব্র তাপদাহ। এক সপ্তাহ ধরে পুড়ছে নগর জীবন। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। দিনে তীব্র গরমের পর রাতেও নেই স্বস্তি। রাতেও প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। এর মধ্যে কোনো ভালো খবর দিতে পারছে না আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সহসাই বৃষ্টির দেখা মিলবে না। বাড়বে আরো তাপের তীব্রতা। দেশের অধিকাংশ জেলায় ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সেটি ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের ৮ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও বাকি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া মোংলায় ৪০৮, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪০.৫, যশোরে ৪০.৪, ফরিদপুরে ৪০.৩, কুমারখালীতে ৪০.০, খুলনায় ৩৯.৮, সাতক্ষীরায় ৩৯.৭, ঢাকায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ ছাড়া পরবর্তী তিন দিনে আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, কোনো এলাকায় তাপমাত্রা যখন ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাকে বলে মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটি মৃদু তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসই হলো তীব্র তাপপ্রবাহ।