ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

ক্ষুদ্রঋণের পরিচিতি বদলে ফেলা হচ্ছে পরিচিতি পাচ্ছে ‘ক্ষুদ্র অর্থায়ন’ নামে

বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পাওয়া দেশের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সময়ের বাস্তবতায় এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। জীবনযাত্রার মান ও ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং ধারাবাহিক ঊর্ধ্বগতির মূল্যস্ফীতির কারণে এই সামান্য ঋণ নিয়ে কারবার করতে প্রান্তিক পর্যায়ের একেবারে অসচ্ছলরাও তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারণ, ৫-১০ হাজার কিংবা ২০-২৫ হাজার টাকার এই ঋণে এখন কোনো ব্যবসায়িক উদ্যোগই সফল করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ দেশে এই ক্ষুদ্রঋণের প্রয়োজনীয়তা প্রায় ফুরিয়ে আসছে।

 

সবার প্রয়োজন আরও বেশিহারের ঋণ। কিন্তু সারা দেশে প্রান্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণের বড় অংশই ৫০ হাজার টাকার নিচে সীমাবদ্ধ। তা ছাড়া ক্ষুদ্রঋণের সুদ বেশি। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো এখন সেবা নিয়ে যাচ্ছে প্রান্তিক মানুষের কাছে। দিচ্ছে প্রশিক্ষণও। সব মিলে ক্ষুদ্রঋণের দেশীয় বাস্তবতা উপলব্ধি করেছে এর তদারককারী সংস্থা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিও (এমআরএ)।

 

এমন আরও অনেক বিষয় আমলে নিয়ে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এমআরএ) এখন এ-সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালার পরিবর্তন বা সংশোধনী আনতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তার খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রবাসীরা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠালেও সেটি আমরা দিচ্ছি।

 

 

এক প্রশ্নের জবাবে মো. ফসিউল্লাহ আরও জানান, সামাজিক উন্নয়নেও কাজ করছে এমআরএ। যেমন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত। দেশে এমন অনেক হাসপাতাল রয়েছে, যেটি ক্ষুদ্রঋণে গড়ে ওঠা। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে—যেগুলো শিক্ষার প্রসারে কাজ করছে। পাশাপাশি এমআরএর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবৃত্তি চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতি বছর পাবলিক বিশ্বদ্যিালয়ের ১ হাজার ২০০ মেধাবী ছেলে-মেয়েকে প্রতি মাসে ৩ এবং ৫-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এ কাজগুলো ক্ষুদ্রঋণের মধ্যে পড়ে না। যখন আইনটি করা হয়েছে, তখন ক্ষুদ্রঋণের এত বিস্তৃত কার্যক্রম ছিল না। এখন যেহেতু হচ্ছে, তাই আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব হচ্ছে। আমরা চাই, এমআরএর আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো যাই-ই করুক, সেটি আইনের মধ্য থেকে করুক। তা ছাড়া এখানে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিরও অনেক বিষয় দাঁড়িয়ে গেছে, যা বর্তমান আইনে তার কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তাই বাস্তবতার নিরিখেই এই আইন ও বিধিমালার সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

 

এ ছাড়া প্রস্তাবিত খসড়া আইন পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, রেগুলেটরি অথরিটির নিয়ন্ত্রণের ধরনেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমান আইনে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান বলা হয়। সংশোধিত আইনে ‘ভাইস’ শব্দটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের পরিচিতি হবে এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান হিসেবে। একইভাবে এমআরএ পর্ষদের সচিবের পরিচিতি মিলবে পর্ষদে সাচিবিক নাম হিসেবে। আর পরিচালনা পর্ষদের পরিচিতি হবে সাধারণ পর্ষদ হিসেবে।

 

 

আর বিধিমালার সংশোধনীতে বলা হয়, এমআরএর আওতাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের সনদ বাতিল হলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন, যা কর্তৃপক্ষের পরিচালনা বোর্ড তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে। এ ছাড়া পরিচালনা পর্ষদে কোনো মেয়াদে সদস্যের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশের বেশি পরিবর্তন করা যাবে না। এ ছাড়া সংশোধিত বিধিমালায় এমআরএ কর্তৃপক্ষের ক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে। কোনো ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের স্থায়ী পদে এমআরএ কোনো কর্মকর্তাকে এক বছরের জন্য পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে। আর এখন থেকে কর্তৃপক্ষ নিজেই নিজের বাজেট তৈরি করবে পারবে। তবে সেটি সাধারণ পর্ষদ সভায় অনুমোদন করিয়ে নেবে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্ষুদ্রঋণের পরিচিতি বদলে ফেলা হচ্ছে পরিচিতি পাচ্ছে ‘ক্ষুদ্র অর্থায়ন’ নামে

আপলোড সময় : ০১:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পাওয়া দেশের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সময়ের বাস্তবতায় এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। জীবনযাত্রার মান ও ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং ধারাবাহিক ঊর্ধ্বগতির মূল্যস্ফীতির কারণে এই সামান্য ঋণ নিয়ে কারবার করতে প্রান্তিক পর্যায়ের একেবারে অসচ্ছলরাও তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারণ, ৫-১০ হাজার কিংবা ২০-২৫ হাজার টাকার এই ঋণে এখন কোনো ব্যবসায়িক উদ্যোগই সফল করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ দেশে এই ক্ষুদ্রঋণের প্রয়োজনীয়তা প্রায় ফুরিয়ে আসছে।

 

সবার প্রয়োজন আরও বেশিহারের ঋণ। কিন্তু সারা দেশে প্রান্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণের বড় অংশই ৫০ হাজার টাকার নিচে সীমাবদ্ধ। তা ছাড়া ক্ষুদ্রঋণের সুদ বেশি। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো এখন সেবা নিয়ে যাচ্ছে প্রান্তিক মানুষের কাছে। দিচ্ছে প্রশিক্ষণও। সব মিলে ক্ষুদ্রঋণের দেশীয় বাস্তবতা উপলব্ধি করেছে এর তদারককারী সংস্থা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিও (এমআরএ)।

 

এমন আরও অনেক বিষয় আমলে নিয়ে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এমআরএ) এখন এ-সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালার পরিবর্তন বা সংশোধনী আনতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তার খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রবাসীরা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠালেও সেটি আমরা দিচ্ছি।

 

 

এক প্রশ্নের জবাবে মো. ফসিউল্লাহ আরও জানান, সামাজিক উন্নয়নেও কাজ করছে এমআরএ। যেমন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত। দেশে এমন অনেক হাসপাতাল রয়েছে, যেটি ক্ষুদ্রঋণে গড়ে ওঠা। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে—যেগুলো শিক্ষার প্রসারে কাজ করছে। পাশাপাশি এমআরএর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবৃত্তি চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতি বছর পাবলিক বিশ্বদ্যিালয়ের ১ হাজার ২০০ মেধাবী ছেলে-মেয়েকে প্রতি মাসে ৩ এবং ৫-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এ কাজগুলো ক্ষুদ্রঋণের মধ্যে পড়ে না। যখন আইনটি করা হয়েছে, তখন ক্ষুদ্রঋণের এত বিস্তৃত কার্যক্রম ছিল না। এখন যেহেতু হচ্ছে, তাই আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব হচ্ছে। আমরা চাই, এমআরএর আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো যাই-ই করুক, সেটি আইনের মধ্য থেকে করুক। তা ছাড়া এখানে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিরও অনেক বিষয় দাঁড়িয়ে গেছে, যা বর্তমান আইনে তার কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তাই বাস্তবতার নিরিখেই এই আইন ও বিধিমালার সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

 

এ ছাড়া প্রস্তাবিত খসড়া আইন পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, রেগুলেটরি অথরিটির নিয়ন্ত্রণের ধরনেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমান আইনে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান বলা হয়। সংশোধিত আইনে ‘ভাইস’ শব্দটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের পরিচিতি হবে এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান হিসেবে। একইভাবে এমআরএ পর্ষদের সচিবের পরিচিতি মিলবে পর্ষদে সাচিবিক নাম হিসেবে। আর পরিচালনা পর্ষদের পরিচিতি হবে সাধারণ পর্ষদ হিসেবে।

 

 

আর বিধিমালার সংশোধনীতে বলা হয়, এমআরএর আওতাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের সনদ বাতিল হলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন, যা কর্তৃপক্ষের পরিচালনা বোর্ড তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে। এ ছাড়া পরিচালনা পর্ষদে কোনো মেয়াদে সদস্যের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশের বেশি পরিবর্তন করা যাবে না। এ ছাড়া সংশোধিত বিধিমালায় এমআরএ কর্তৃপক্ষের ক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে। কোনো ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের স্থায়ী পদে এমআরএ কোনো কর্মকর্তাকে এক বছরের জন্য পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে। আর এখন থেকে কর্তৃপক্ষ নিজেই নিজের বাজেট তৈরি করবে পারবে। তবে সেটি সাধারণ পর্ষদ সভায় অনুমোদন করিয়ে নেবে।