ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

আলুর কেজি ১১ টাকা, লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা

  • সাংবাদিকের নাম
  • আপলোড সময় : ১১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৯ বার দেখা হয়েছে।

আলু উৎপাদনে অন্যতম জেলা মুন্সীগঞ্জ। গত মৌসুমে প্রতি কেজির দাম উঠেছিল ৭০ টাকা পর্যন্ত। তাতে লাভবান হয়েছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের টারকী এলাকার ডালিম শেখ। বেশি লাভের আশায় এবার বেশি জমিতে আবাদ করেছেন। ২০ দিন আগে যে আলুর কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন, তা এখন ১১ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে লাভের আশা তো দূরের কথা, উল্টো লোকসানে পড়ার দুশ্চিন্তায় আছেন। শুধু ডালিম শেখ নন, জেলার হাজারো কৃষক এখন লোকসানের শঙ্কায় আছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে মুন্সীগঞ্জে ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। এ বছর সাড়ে ১০ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুন্সীগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও বীজ, সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি ও জমি চাষের খরচ বাড়ায় গতবারের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এরই মধ্যে হিমাগারের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জমি থেকে আলু সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজির দাম পড়বে ৩২-৩৩ টাকা। এখন আড়তে ১১ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এই দামে বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। কারণ উৎপাদন খরচ পড়েছে ২০ টাকার বেশি।

বেড়েছে হিমাগার ভাড়া

এবারের মৌসুমে আলু সংরক্ষণের জন্য মুন্সীগঞ্জের ৫৫ হিমাগার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মার্চের শুরু থেকে হিমাগারগুলোতে সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ার অজুহাতে প্রতি কেজি সংরক্ষণে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন। আগেরবারের পাঁচ টাকার স্থলে এবার নির্ধারণ করা হয়েছে আট টাকা। যা কিনা কেজিতে গতবারের তুলনায় তিন টাকা বেশি।

মূলধন হারানোর শঙ্কা চাষিদের

টারকী এলাকার কৃষক ডালিম শেখ পরিবর্তন টিভি কে বলেন, ‘গত বছর হল্যান্ডের বীজ আলুর প্রতি বাক্স ১০ হাজার টাকায় কিনেছি। এবার সেই বীজ ৩৩ হাজারে কিনতে হয়েছে। ৩৬০ শতাংশ জমিতে আবাদ করতে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তার সঙ্গে আছে যাবতীয় খরচ। শুধুমাত্র ওষুধ ও কীটনাশক দিতে হয়েছে ৩২ হাজার টাকার। এখন আড়তে নিয়ে ১১ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছি। এরকম হলে আমাদের জান বাঁচবে না। এই দাম থাকলে পুঁজি হারিয়ে আগামী বছর আলু চাষাবাদ করতে পারবো না।

একই শঙ্কার কথা জানিয়েছেন সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া এলাকার কৃষক মো. সুমন শেখ। তিনি পরিবর্তন টিভি কে বলেন, গত বছর বীজ আলু ১০ হাজারে কিনলেও এবার ৩০ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। গতবার ৫০ কেজি বস্তার সার কিনেছিলাম এক হাজার ১০০ টাকায়। এবার সেই সার এক হাজার ৮০০ টাকায় কিনেছি। সেইসঙ্গে অন্যান্য খরচও বেশি পড়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। তবে এখন বাজারে আলুর যে দাম, তাতে খরচ উঠানো তো দূরের কথা পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে। তার ওপর হিমাগারের ভাড়া বেড়েছে। সংরক্ষণ করলেও ৩২-৩৩ টাকার মতো কেজিতে পড়বে। কিন্তু তখন কত দরে বিক্রি করবো। এখন দাম পাচ্ছি না, তখনও যদি দাম না পাই; সেই শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আমার মতো অনেক কৃষক ঋণ করে চাষাবাদ করেছেন। এভাবে হলে আমরা শেষ হয়ে যাবো।

হিমাগার ভাড়া বস্তায় ২৫-৩০ টাকা বাড়তে পারে 

মুন্সীগঞ্জের চর মুক্তারপুর এলাকার দেওয়ান কোল্ডস্টোরেজের ম্যানেজার মো. ইব্রাহিম  বলেন, আমাদের কোল্ডস্টোরেজের সার্ভিসিংয়ের কাজ চলছে। ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হবে। পার্টিদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি কে কতটুকু আলু আমাদের এখানে রাখবে। গত বছর প্রতি বস্তা ২৩৫ টাকা ভাড়া রেখেছি। এ বছর বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে। তাই বস্তা প্রতি ২৫-৩০ টাকা বাড়তে পারে। আমাদের স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ছয় লাখ ৫০ হাজার বস্তা। আশা করছি পূর্ণ হবে। কারণ আলু বেশি উৎপাদন হয়েছে।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী  বলেন, গত বছর সাত টাকা করে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। তারপরও কিছু স্টোরেজ কম নিয়েছে। তবে চলতি বছর প্রতি কেজি সংরক্ষণের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে আট টাকা। চলতি বছর আবহাওয়া যেমন ছিল তাতে বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হতে পারে। তার মধ্যে ৯০ লাখ মেট্রিক টনের চাহিদা আছে, আর ১০ লাখ মেট্রিক টন ওয়েস্টেজ হবে। এক কোটি মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হলে বাজার ঠিক থাকে। কৃষক ও ব্যবসায়ী লাভবান হন। এর বেশি উৎপাদন হলে দাম কমে যায়। মূলত গত বছর কৃষকরা লাভবান হওয়ায় চলতি বছর বেশি চাষ করেছেন। এজন্য উৎপাদন বেড়েছে।

রফতানির কথা বলছেন চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি

জেলা আলু চাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এবার আলুর দাম ভালো না। চাষাবাদ ও উৎপাদন বেশি হয়েছে। বর্তমানে ১০-১১ টাকা করে বাজার চলছে। জানি না এই বাজার কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। কারণ উৎপাদন খরচ জমিতেই পড়েছে ২০-২২ টাকা। সেই আলু ১০-১২ টাকায় বিক্রি করলে চাষিদের পুঁজি থাকবে না। তার ওপর কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া বেড়েছে। চারদিকে খরচ বাড়লেও আলুর দাম বাড়েনি। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় আলুর বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে হবে। রফতানি করলে সবচেয়ে ভালো হয়। কৃষকরা লাভবান হবেন।

সরকারিভাবে আলু কিনে সংরক্ষণে রাখার প্রস্তাব

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মুন্সীগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকমকে বলেন, দেশে আলু উৎপাদনের জেলাগুলোর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ অন্যতম। এ বছর ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। হিসাবে গত বছর যে পরিমাণ জমিতে আবাদ হয়েছিল, এবার তার থেকে প্রায় দুই হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে এবার দাম কম। সেজন্য আমরা একটি প্রস্তাবনা ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখানে আমরা বলেছি, সরকারিভাবে যদি কিছু আলু কিনে সংরক্ষণ করে রাখা যায়, তাহলে বাজারে ভালো একটা প্রভাব পড়বে। কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবেন এবং ভবিষ্যতে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর সুযোগ থাকবে না।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলুর কেজি ১১ টাকা, লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা

আপলোড সময় : ১১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আলু উৎপাদনে অন্যতম জেলা মুন্সীগঞ্জ। গত মৌসুমে প্রতি কেজির দাম উঠেছিল ৭০ টাকা পর্যন্ত। তাতে লাভবান হয়েছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের টারকী এলাকার ডালিম শেখ। বেশি লাভের আশায় এবার বেশি জমিতে আবাদ করেছেন। ২০ দিন আগে যে আলুর কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন, তা এখন ১১ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে লাভের আশা তো দূরের কথা, উল্টো লোকসানে পড়ার দুশ্চিন্তায় আছেন। শুধু ডালিম শেখ নন, জেলার হাজারো কৃষক এখন লোকসানের শঙ্কায় আছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে মুন্সীগঞ্জে ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। এ বছর সাড়ে ১০ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুন্সীগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও বীজ, সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি ও জমি চাষের খরচ বাড়ায় গতবারের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এরই মধ্যে হিমাগারের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জমি থেকে আলু সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজির দাম পড়বে ৩২-৩৩ টাকা। এখন আড়তে ১১ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এই দামে বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। কারণ উৎপাদন খরচ পড়েছে ২০ টাকার বেশি।

বেড়েছে হিমাগার ভাড়া

এবারের মৌসুমে আলু সংরক্ষণের জন্য মুন্সীগঞ্জের ৫৫ হিমাগার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মার্চের শুরু থেকে হিমাগারগুলোতে সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ার অজুহাতে প্রতি কেজি সংরক্ষণে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন। আগেরবারের পাঁচ টাকার স্থলে এবার নির্ধারণ করা হয়েছে আট টাকা। যা কিনা কেজিতে গতবারের তুলনায় তিন টাকা বেশি।

মূলধন হারানোর শঙ্কা চাষিদের

টারকী এলাকার কৃষক ডালিম শেখ পরিবর্তন টিভি কে বলেন, ‘গত বছর হল্যান্ডের বীজ আলুর প্রতি বাক্স ১০ হাজার টাকায় কিনেছি। এবার সেই বীজ ৩৩ হাজারে কিনতে হয়েছে। ৩৬০ শতাংশ জমিতে আবাদ করতে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তার সঙ্গে আছে যাবতীয় খরচ। শুধুমাত্র ওষুধ ও কীটনাশক দিতে হয়েছে ৩২ হাজার টাকার। এখন আড়তে নিয়ে ১১ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছি। এরকম হলে আমাদের জান বাঁচবে না। এই দাম থাকলে পুঁজি হারিয়ে আগামী বছর আলু চাষাবাদ করতে পারবো না।

একই শঙ্কার কথা জানিয়েছেন সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া এলাকার কৃষক মো. সুমন শেখ। তিনি পরিবর্তন টিভি কে বলেন, গত বছর বীজ আলু ১০ হাজারে কিনলেও এবার ৩০ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। গতবার ৫০ কেজি বস্তার সার কিনেছিলাম এক হাজার ১০০ টাকায়। এবার সেই সার এক হাজার ৮০০ টাকায় কিনেছি। সেইসঙ্গে অন্যান্য খরচও বেশি পড়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। তবে এখন বাজারে আলুর যে দাম, তাতে খরচ উঠানো তো দূরের কথা পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে। তার ওপর হিমাগারের ভাড়া বেড়েছে। সংরক্ষণ করলেও ৩২-৩৩ টাকার মতো কেজিতে পড়বে। কিন্তু তখন কত দরে বিক্রি করবো। এখন দাম পাচ্ছি না, তখনও যদি দাম না পাই; সেই শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আমার মতো অনেক কৃষক ঋণ করে চাষাবাদ করেছেন। এভাবে হলে আমরা শেষ হয়ে যাবো।

হিমাগার ভাড়া বস্তায় ২৫-৩০ টাকা বাড়তে পারে 

মুন্সীগঞ্জের চর মুক্তারপুর এলাকার দেওয়ান কোল্ডস্টোরেজের ম্যানেজার মো. ইব্রাহিম  বলেন, আমাদের কোল্ডস্টোরেজের সার্ভিসিংয়ের কাজ চলছে। ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হবে। পার্টিদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি কে কতটুকু আলু আমাদের এখানে রাখবে। গত বছর প্রতি বস্তা ২৩৫ টাকা ভাড়া রেখেছি। এ বছর বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে। তাই বস্তা প্রতি ২৫-৩০ টাকা বাড়তে পারে। আমাদের স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ছয় লাখ ৫০ হাজার বস্তা। আশা করছি পূর্ণ হবে। কারণ আলু বেশি উৎপাদন হয়েছে।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী  বলেন, গত বছর সাত টাকা করে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। তারপরও কিছু স্টোরেজ কম নিয়েছে। তবে চলতি বছর প্রতি কেজি সংরক্ষণের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে আট টাকা। চলতি বছর আবহাওয়া যেমন ছিল তাতে বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হতে পারে। তার মধ্যে ৯০ লাখ মেট্রিক টনের চাহিদা আছে, আর ১০ লাখ মেট্রিক টন ওয়েস্টেজ হবে। এক কোটি মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হলে বাজার ঠিক থাকে। কৃষক ও ব্যবসায়ী লাভবান হন। এর বেশি উৎপাদন হলে দাম কমে যায়। মূলত গত বছর কৃষকরা লাভবান হওয়ায় চলতি বছর বেশি চাষ করেছেন। এজন্য উৎপাদন বেড়েছে।

রফতানির কথা বলছেন চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি

জেলা আলু চাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এবার আলুর দাম ভালো না। চাষাবাদ ও উৎপাদন বেশি হয়েছে। বর্তমানে ১০-১১ টাকা করে বাজার চলছে। জানি না এই বাজার কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। কারণ উৎপাদন খরচ জমিতেই পড়েছে ২০-২২ টাকা। সেই আলু ১০-১২ টাকায় বিক্রি করলে চাষিদের পুঁজি থাকবে না। তার ওপর কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া বেড়েছে। চারদিকে খরচ বাড়লেও আলুর দাম বাড়েনি। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় আলুর বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে হবে। রফতানি করলে সবচেয়ে ভালো হয়। কৃষকরা লাভবান হবেন।

সরকারিভাবে আলু কিনে সংরক্ষণে রাখার প্রস্তাব

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মুন্সীগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকমকে বলেন, দেশে আলু উৎপাদনের জেলাগুলোর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ অন্যতম। এ বছর ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। হিসাবে গত বছর যে পরিমাণ জমিতে আবাদ হয়েছিল, এবার তার থেকে প্রায় দুই হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে এবার দাম কম। সেজন্য আমরা একটি প্রস্তাবনা ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখানে আমরা বলেছি, সরকারিভাবে যদি কিছু আলু কিনে সংরক্ষণ করে রাখা যায়, তাহলে বাজারে ভালো একটা প্রভাব পড়বে। কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবেন এবং ভবিষ্যতে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর সুযোগ থাকবে না।