ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

আজ চাটমোহরের চড়ক পূজা ও মেলা শুরু

পাবনার চাটমোহর উপজেলা বোঁথর গ্রামে আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে উপমহাদেশের বিখ্যাত মহাদেব ও চড়ক পূজা এবং মেলা। তিনদিন চলবে এই মেলা। এই চড়ক পূজা ও মেলায় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের অসংখ্য হিন্দুর সমাগম ঘটে। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন মরা বড়াল নদের তীরের বোঁথর গ্রামটি হয়ে ওঠে তীর্থ ক্ষেত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে। সিন্ধু সভ্যতা থেকেই চাটমোহরের বোঁথর গ্রামে এই চড়ক পূজা ও মেলা হয়ে আসছে।

 

এদিকে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা গত বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অংশ নেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল.থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনজুরুল আলম,উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক অশোক চক্রবর্তী,সাংগঠনিক সম্পাদক কিংকর সাহা প্রমুখ।

 

শত শত বছর ধরে চলছে এই পূজা ও মেলা। মূলতঃ ২২ চৈত্র সন্ধ্যায় পাঠ ঠাকুরের পাটে ধূপ দিয়ে শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা। বোঁথর শিব মন্দির থেকে পাঠ ঠাকুর নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ি বাড়ি। ২৬ ও ২৭ চৈত্র ফুল ভাঙ্গা ও কালি নাচ শুরু হয়। তারপর প্রতিমা আসনে বসে। মেলা হয় চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন ও পহেলা বৈশাখ। আগে মেলা হতো মাসব্যাপী। এখন হয় তিন দিন। চৈত্র সংক্রান্তির সন্ধ্যায় (সরকারি পঞ্জিকা মতে পহেলা বৈশাখ) প্রায় ১৩ হাত লম্বা চড়ক গাছ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোরানো হয়। এর আগে পূজারীরা ফুল,দুধ ও চিনি দিয়ে চড়ক গাছে পূজা দেয়। মহাদেব মন্দিরের চালে বাতাসা ছিটায় মঙ্গলার্থে। চড়ক পূজা উপলক্ষে মহাদেব আসনে তোলা হয় ২৮ চৈত্র,৭ বৈশাখ নামানো হয়। ১৩ জন প্রধান বৃত্তাকে ৬ দিন উপবাস থাকতে হয়।

 

বোঁথর একটি গ্রাম। চাটমোহর পৌর শহর সংলগ্ন বড়াল নদের উত্তর পাড়ের আদর্শ গ্রাম এটি। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে উৎসবমূখর হয়ে ওঠে গ্রামটি। দেশ-বিদেশের আত্মীয়-স্বজন আসে এই মেলায়। এক সময় চলনবিল অঞ্চলের সকল নতুন-পুরাতন জামাইকে আনতে হতো মেলা উপলক্ষে। সকল পণ্যই মিলতো এই মেলায়। হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতির ক্ষেত্র ছিল এই মেলা। সে সব এখন ইতিহাস। বোঁথর চড়ক পূজা ও মেলার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা ঠিক আছে,শুধু কমেছে মেলার জৌলুস।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আজ চাটমোহরের চড়ক পূজা ও মেলা শুরু

আপলোড সময় : ১২:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

পাবনার চাটমোহর উপজেলা বোঁথর গ্রামে আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে উপমহাদেশের বিখ্যাত মহাদেব ও চড়ক পূজা এবং মেলা। তিনদিন চলবে এই মেলা। এই চড়ক পূজা ও মেলায় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের অসংখ্য হিন্দুর সমাগম ঘটে। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন মরা বড়াল নদের তীরের বোঁথর গ্রামটি হয়ে ওঠে তীর্থ ক্ষেত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে। সিন্ধু সভ্যতা থেকেই চাটমোহরের বোঁথর গ্রামে এই চড়ক পূজা ও মেলা হয়ে আসছে।

 

এদিকে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা গত বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অংশ নেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল.থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনজুরুল আলম,উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক অশোক চক্রবর্তী,সাংগঠনিক সম্পাদক কিংকর সাহা প্রমুখ।

 

শত শত বছর ধরে চলছে এই পূজা ও মেলা। মূলতঃ ২২ চৈত্র সন্ধ্যায় পাঠ ঠাকুরের পাটে ধূপ দিয়ে শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা। বোঁথর শিব মন্দির থেকে পাঠ ঠাকুর নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ি বাড়ি। ২৬ ও ২৭ চৈত্র ফুল ভাঙ্গা ও কালি নাচ শুরু হয়। তারপর প্রতিমা আসনে বসে। মেলা হয় চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন ও পহেলা বৈশাখ। আগে মেলা হতো মাসব্যাপী। এখন হয় তিন দিন। চৈত্র সংক্রান্তির সন্ধ্যায় (সরকারি পঞ্জিকা মতে পহেলা বৈশাখ) প্রায় ১৩ হাত লম্বা চড়ক গাছ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোরানো হয়। এর আগে পূজারীরা ফুল,দুধ ও চিনি দিয়ে চড়ক গাছে পূজা দেয়। মহাদেব মন্দিরের চালে বাতাসা ছিটায় মঙ্গলার্থে। চড়ক পূজা উপলক্ষে মহাদেব আসনে তোলা হয় ২৮ চৈত্র,৭ বৈশাখ নামানো হয়। ১৩ জন প্রধান বৃত্তাকে ৬ দিন উপবাস থাকতে হয়।

 

বোঁথর একটি গ্রাম। চাটমোহর পৌর শহর সংলগ্ন বড়াল নদের উত্তর পাড়ের আদর্শ গ্রাম এটি। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে উৎসবমূখর হয়ে ওঠে গ্রামটি। দেশ-বিদেশের আত্মীয়-স্বজন আসে এই মেলায়। এক সময় চলনবিল অঞ্চলের সকল নতুন-পুরাতন জামাইকে আনতে হতো মেলা উপলক্ষে। সকল পণ্যই মিলতো এই মেলায়। হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতির ক্ষেত্র ছিল এই মেলা। সে সব এখন ইতিহাস। বোঁথর চড়ক পূজা ও মেলার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা ঠিক আছে,শুধু কমেছে মেলার জৌলুস।