ঢাকা , শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

‘অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে বাংলাদেশের সম্পর্ককে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র’

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।

 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে আইপিএস নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

এদিন ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) ও বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

 

দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে ভারতের নেতৃত্বকে স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টিকে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের দেশগুলো কীভাবে দেখে, এই প্রশ্নের উত্তরে ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আমরা দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি। এই সম্পর্ককে আমরা অন্য দেশের লেন্স (দৃষ্টি) দিয়ে দেখি না। গণমাধ্যমসহ নানা জায়গায় শুনেছি যে ভারতের লেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। এটা সত্যি না। আমরা যদি দ্বিপক্ষীয় অভিন্ন স্বার্থের নিরিখে দেখি তাহলেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। এটাই আমরা সরকার, গণমাধ্যমসহ সবাইকে জোর দিয়েই বলছি।’

 

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা বহুমাত্রিক। আইপিএস এই সম্পর্কে কী মাত্রা যোগ করেছে, জানতে চাইলে ম্যাক্সওয়েল বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ফোর্সেস গোল-২০৩০–কে সমর্থন করে। এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। আইপিএসের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আগের সহযোগিতাগুলো এগিয়ে নিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

 

ম্যাক্সওয়েল মার্টিন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চীনের মতো কয়েকটি দেশ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এমনকি ভবিষ্যতেও জোর খাটাতে পারে। যেটা দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ানের ক্ষেত্রে ঘটেছে। আইপিএসের ক্ষেত্রে আমরা এ ধরনের আধিপত্যপাদী আচরণ দেখতে চাই না।’

 

নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করেছেন ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘এটা ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই বলছি। এই অঞ্চলের সব দেশ নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অন্যের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারে। গঠনমূলক ও টেকসই দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষাপট থেকে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিবাচক নিরাপত্তা কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে থেকেই দিক থেকে বলছি। কেন এটা বলছি? স্বাধীনতার পর থেকে দ্রুততার সঙ্গে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে বাংলাদেশের সামর্থ্য ও অবদানের সক্ষমতা দেখেছি। নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতের সামর্থ্যের পাশাপাশি অন্যের সহায়তাও বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অংশীদার হিসেবে আমরা গর্বিত। উদাহরণ হিসেবে মিয়ানমারের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা এক বিরাট দৃষ্টান্ত।’

 

ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, আইপিএসের মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখবেন বিশ্বের বাণিজ্যের বড় অংশটা হয় এই অঞ্চলজুড়ে। অর্থনৈতিক উন্নয়নও হচ্ছে এই অঞ্চল ঘিরে। তাই বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অবাধ ও মুক্ত ভবিষ্যৎ, অর্থনীতি এবং সমৃদ্ধির স্বার্থের বিষয়গুলোতেই জোর দেওয়া হচ্ছে।

 

নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোস্ট গার্ডের বড় দুটি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেওয়া। এর মধ্যে একটি জাহাজ গত বছরের জুনে মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড়ের পরে ত্রাণ সহাযতা দিয়েছিল। এই ধরনেরই নিরাপত্তা সহযোগিতা আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে চাই যেখানে এই অঞ্চলের মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

‘অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে বাংলাদেশের সম্পর্ককে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র’

আপলোড সময় : ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।

 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে আইপিএস নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

এদিন ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) ও বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

 

দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে ভারতের নেতৃত্বকে স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টিকে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের দেশগুলো কীভাবে দেখে, এই প্রশ্নের উত্তরে ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আমরা দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি। এই সম্পর্ককে আমরা অন্য দেশের লেন্স (দৃষ্টি) দিয়ে দেখি না। গণমাধ্যমসহ নানা জায়গায় শুনেছি যে ভারতের লেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। এটা সত্যি না। আমরা যদি দ্বিপক্ষীয় অভিন্ন স্বার্থের নিরিখে দেখি তাহলেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। এটাই আমরা সরকার, গণমাধ্যমসহ সবাইকে জোর দিয়েই বলছি।’

 

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা বহুমাত্রিক। আইপিএস এই সম্পর্কে কী মাত্রা যোগ করেছে, জানতে চাইলে ম্যাক্সওয়েল বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ফোর্সেস গোল-২০৩০–কে সমর্থন করে। এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। আইপিএসের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আগের সহযোগিতাগুলো এগিয়ে নিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

 

ম্যাক্সওয়েল মার্টিন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চীনের মতো কয়েকটি দেশ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এমনকি ভবিষ্যতেও জোর খাটাতে পারে। যেটা দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ানের ক্ষেত্রে ঘটেছে। আইপিএসের ক্ষেত্রে আমরা এ ধরনের আধিপত্যপাদী আচরণ দেখতে চাই না।’

 

নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করেছেন ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘এটা ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই বলছি। এই অঞ্চলের সব দেশ নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অন্যের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারে। গঠনমূলক ও টেকসই দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষাপট থেকে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিবাচক নিরাপত্তা কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে থেকেই দিক থেকে বলছি। কেন এটা বলছি? স্বাধীনতার পর থেকে দ্রুততার সঙ্গে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে বাংলাদেশের সামর্থ্য ও অবদানের সক্ষমতা দেখেছি। নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতের সামর্থ্যের পাশাপাশি অন্যের সহায়তাও বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অংশীদার হিসেবে আমরা গর্বিত। উদাহরণ হিসেবে মিয়ানমারের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা এক বিরাট দৃষ্টান্ত।’

 

ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, আইপিএসের মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখবেন বিশ্বের বাণিজ্যের বড় অংশটা হয় এই অঞ্চলজুড়ে। অর্থনৈতিক উন্নয়নও হচ্ছে এই অঞ্চল ঘিরে। তাই বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অবাধ ও মুক্ত ভবিষ্যৎ, অর্থনীতি এবং সমৃদ্ধির স্বার্থের বিষয়গুলোতেই জোর দেওয়া হচ্ছে।

 

নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোস্ট গার্ডের বড় দুটি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেওয়া। এর মধ্যে একটি জাহাজ গত বছরের জুনে মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড়ের পরে ত্রাণ সহাযতা দিয়েছিল। এই ধরনেরই নিরাপত্তা সহযোগিতা আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে চাই যেখানে এই অঞ্চলের মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে।