ঢাকা , শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

আলজাজিরার প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার দুর্নীতি ফাঁস, লুকানোর চেষ্টা ব্যর্থ

ছবি: সংগৃহীত

২০২১ সালে আলজাজিরার একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা দিক উঠে আসে। “অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান” নামের এই প্রতিবেদনটি দেশের সেনাবাহিনী, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে দুর্নীতি, ঘুষ, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উন্মোচন করে। এটি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং শেখ হাসিনার সরকারকে বিপাকে ফেলে।

 

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বীদের অপহরণ এবং ঘুষ গ্রহণের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত ছিলেন।
শেখ হাসিনার প্রশ্রয়ে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে, যেখানে সরকারবিরোধীদের দমন করার জন্য রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর আজিজ আহমেদ এবং তার ভাইদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
প্রতিবেদনের পর তথ্য ফাঁসকারী জুলকারনাইন সায়ের খানের ভাই শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।
প্রতিবেদনে সহায়তাকারীরা প্রাণের ভয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

 

প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা, মানহানিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে সরকার এটি নাকচ করে।
আলজাজিরার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে শেখ হাসিনার প্রতিনিধিরা ব্রিটিশ ব্যারিস্টার ডেসমোন্ড ব্রাউনি এবং আইনজীবী ক্লার্ক-উইলিয়ামস এর সঙ্গে আলোচনা করেন।
শেখ হাসিনার সরকারের দাবি ছিল, প্রতিবেদনে অনেক তথ্য ভুল ছিল, যা তার সম্মানহানি করেছে।
আদালতের উদ্যোগ এবং মামলা না করার সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশের হাইকোর্ট এই প্রতিবেদন সরানোর পক্ষে রায় দিলেও, ইউটিউব ও ফেসবুক এটি অপসারণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
যুক্তরাজ্যের আদালতে মামলা করার পরিকল্পনা হলেও শেষ পর্যন্ত হাসিনার সরকার তা থেকে সরে আসে।

 

সম্প্রতি সানডে টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে
শেখ হাসিনার বাড়ি থেকে পাওয়া নথিতে উঠে এসেছে, আলজাজিরার প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার কীভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।
প্রতিবেদনে সহায়তাকারী ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের চেষ্টা করা হয়েছিল।
ভিডিও সরাতে ইউটিউব ও ফেসবুকের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, তবে কোনো ফল আসেনি।

 

আলজাজিরার প্রতিবেদনটি এখনো ইউটিউব এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে দৃশ্যমান, যা সরকারের ব্যর্থতাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই ঘটনা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রশ্ন তুলেছে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ধারের নামে ঋণের ফাঁদ পা দিলেই মাথায় হাত কেরানীগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ঋণজাল

আলজাজিরার প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার দুর্নীতি ফাঁস, লুকানোর চেষ্টা ব্যর্থ

আপলোড সময় : ০৯:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

২০২১ সালে আলজাজিরার একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা দিক উঠে আসে। “অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান” নামের এই প্রতিবেদনটি দেশের সেনাবাহিনী, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে দুর্নীতি, ঘুষ, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উন্মোচন করে। এটি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং শেখ হাসিনার সরকারকে বিপাকে ফেলে।

 

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বীদের অপহরণ এবং ঘুষ গ্রহণের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত ছিলেন।
শেখ হাসিনার প্রশ্রয়ে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে, যেখানে সরকারবিরোধীদের দমন করার জন্য রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর আজিজ আহমেদ এবং তার ভাইদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
প্রতিবেদনের পর তথ্য ফাঁসকারী জুলকারনাইন সায়ের খানের ভাই শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।
প্রতিবেদনে সহায়তাকারীরা প্রাণের ভয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

 

প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা, মানহানিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে সরকার এটি নাকচ করে।
আলজাজিরার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে শেখ হাসিনার প্রতিনিধিরা ব্রিটিশ ব্যারিস্টার ডেসমোন্ড ব্রাউনি এবং আইনজীবী ক্লার্ক-উইলিয়ামস এর সঙ্গে আলোচনা করেন।
শেখ হাসিনার সরকারের দাবি ছিল, প্রতিবেদনে অনেক তথ্য ভুল ছিল, যা তার সম্মানহানি করেছে।
আদালতের উদ্যোগ এবং মামলা না করার সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশের হাইকোর্ট এই প্রতিবেদন সরানোর পক্ষে রায় দিলেও, ইউটিউব ও ফেসবুক এটি অপসারণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
যুক্তরাজ্যের আদালতে মামলা করার পরিকল্পনা হলেও শেষ পর্যন্ত হাসিনার সরকার তা থেকে সরে আসে।

 

সম্প্রতি সানডে টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে
শেখ হাসিনার বাড়ি থেকে পাওয়া নথিতে উঠে এসেছে, আলজাজিরার প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার কীভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।
প্রতিবেদনে সহায়তাকারী ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের চেষ্টা করা হয়েছিল।
ভিডিও সরাতে ইউটিউব ও ফেসবুকের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, তবে কোনো ফল আসেনি।

 

আলজাজিরার প্রতিবেদনটি এখনো ইউটিউব এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে দৃশ্যমান, যা সরকারের ব্যর্থতাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই ঘটনা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রশ্ন তুলেছে।