রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে যন্ত্রাংশ ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাজারে যে বাতির দাম সর্বোচ্চ ৫ হাজার, সেটাই ২৭ হাজার টাকায় কিনেছে রেলওয়ে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে এমন তথ্য পায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, দুদক টিম ট্রাক সাপ্লাই কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন এবং কাটিং জ্যাক ক্রয়-সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। মূলত ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এই অনিয়ম প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কিসের ওপর ভিত্তি করে ওই সব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেসব সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্টস পায়নি দুদক।
বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে দুদক টিম ৯০টি এলইডি লাইট এবং এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করে। সেগুলোর ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার জন্য সিওএসএর দপ্তরে যায়। সেখান থেকে ডকুমেন্ট সংগ্রহ পর্যালোচনা করে দুদক টিম দেখে, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় কেনা হয়েছে। একই টিম পরে পাহাড়তলীতে রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সেখানে তারা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আর-অ্যান্ডআইয়ের মেরামত করা কক্ষ পরিদর্শন করে। ওয়াকিটকি ক্রয়-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।
অভিযানে ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণের বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, রেলে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন এবং এবং কাটিং জ্যাক ক্রয়-সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়; যা পিপিপি এবং পিপিআরের সুস্পষ্ট লংঘন। এছাড়া আরও কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়, যেগুলোর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। আমরা এগুলো ভালো করে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।