সচিবালয়ে প্রবেশে ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। সম্প্রতি এ প্রস্তাব দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যান্যের ক্ষেত্রে প্রবেশ ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, এক বছরের জন্য ফি নির্ধারণ করা হবে। ফির বিনিময়ে এক বছরের জন্য একটি প্রবেশ কার্ড দেওয়া হবে। বেসরকারি ব্যক্তিদের প্রবেশ ফি বছরে পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এ ছাড়া প্রস্তাব অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয়ে প্রবেশে বছরে তিন হাজার টাকা এবং জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের প্রবেশ ফি বছরে হবে দুই হাজার ৫০০ টাকা। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কারও কার্ড হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে বা অন্য কোনো কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে আবার তা নিতে দুই হাজার টাকা ফি দিতে হবে। বেসরকারি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ ফি পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এ ছাড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, সচিবালয়ে বেসরকারি গাড়ি প্রবেশের ক্ষেত্রে বছরে সর্বোচ্চ ফি হবে ১০ হাজার টাকা। সচিবালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনাগত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপনের ব্যয় তুলে আনার পাশাপাশি পরিচালনা-রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অনেকেই ভালোভাবে নিচ্ছেন না। এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা দেখছেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব- সচিবালয় নিরাপত্তা শাখা) মো. ফিরোজ উদ্দিন খলিফা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সচিবালয়ে প্রবেশপত্রটি আরও স্মার্ট ও যুগোপযোগী এবং আরও নিরাপত্তা সংবলিত বিষয়গুলো যেন থাকে সেজন্য সাজেশন করে আসছিল। এ বিষয়গুলো করতে আমাদের কিছু অর্থের প্রয়োজন হয়ে যায়। যেমন এখানে ছবি থাকবে এর সঙ্গে চোখের আইরিশ, ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়া থাকবে। এসবগুলো যখন করবো তখন আমাদের টাকার প্রয়োজন হবে। যারা নেবেন তারাই এ অর্থ দেবেন আমরা এরকমই মনে করছি। সে জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ে এটা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’ এর আগে জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিবদেরর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং একটি উচ্চ সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। মাত্র ১৭ দশমিক ৫৩ একর জমিতে ১১টি বড় ছোট ভবন ও ৬টি ক্যান্টিন রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, কর্মকর্তা/কর্মচারী, বিভিন্ন সভায় আগত সদস্য ও দর্শণার্থীসহ প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন সচিবালয়ে গমনাগমন এবং ৪ থেকে ৬ হাজার যানবাহন সচিবালয়ে প্রবেশ করে।