মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও জান্তা সরকারের মধ্যে সংঘর্ষ ক্রমে বেড়েই চলছে। আরাকান আর্মির (এএ) হামলায় টিকতে না পেরে পালিয়ে ভারতের মিজোরাম রাজ্যে ঢুকছে দেশটির জান্তাবাহিনীর প্রায় ৬০০ সেনা সদস্য।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের এত বেশি সেনা আসার বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে অভিহিত করেছে মিজোরামের প্রাদেশিক সরকার। তারা কেন্দ্রকে আহ্বান জানিয়েছে, মিয়ানমারের এসব সেনাকে দ্রুত দেশে ফেরাতে যেন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
আরকান আর্মির প্রচণ্ড হামলার মুখে এখন পর্যন্ত ভারতে ঢুকেছে প্রায় ৬০০ সেনা। তারা মিজোরামের লাওয়াংতাই বিভাগে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব সেনাদের ঘাঁটি দখল করেছে আরাকান আর্মির সদস্যরা। মিজোরাম সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমারের এসব সেনাকে আসাম রাইফেলসের একটি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে জরুরিভিত্তিতে কথা বলেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমারের আশ্রিত এসব সেনাকে দ্রুত তাদের নিজ দেশে পাঠানোর ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ মিজোরাম সরকারের আশঙ্কা, যদি সেনারা এভাবে ঢুকতে থাকেন; তাহলে সেখানকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।
গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের জান্তা। কিন্তু এই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় এসব মানুষের ওপর ব্যাপক অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়।
উত্তর মিয়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মির (এএ) সমন্বয়ে গঠিত ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ গত বছরের অক্টোবর থেকে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই শুরু করে। এরপর থেকেই বেকায়দায় দেশটির জান্তা সরকার। তাদের এসব সমন্বিত হামলার মুখে টিকতে না পেরে শত শত সেনা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে যাচ্ছেন।