গাছিরা বলছেন, গুনগত মান ভাল ও সুস্বাদু হওয়ায় খেজুর গুড়ের চাহিদাও দেশজুড়ে রয়েছে। জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ এবং রায়গঞ্জের রাস্তা ও পুকুর ধারে শোভা পাচ্ছে শত শত খেজুর গাছ।
শীত মৌসুম শুরুর আগে রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের গাছিরা গাছ প্রতি তিন থেকে চার কেজি গুড় দেওয়ার শর্তে খেজুর গাছ লিজ নিয়ে পরিচর্যা শুরু করে। শীত পড়ার সাথে সাথেই গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে জাল দিয়ে সুস্বাদু ও হরেক রকমের গুড় তৈরি করেন। ৫-৬ সদস্যের এক গ্রুপ গাছি প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই মণ গুড় তৈরি করেন। গুণগত মান ভাল থাকায় স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে গুড় কিনে যায়।
গাছি রুহুল আমিন ও কাজল জানান, শীত শুরুর প্রায় আড়াই মাস আগে সিরাজগঞ্জে এসে গাছগুলো লিজ নেওয়া হয়। গাছের মালিকদের গাছ প্রতি তিন থেকে চার কেজি গুড় দিতে হয়। শীত শুর হলেই গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু করা হয়। প্রতিদিন ফজরের নামাজের আগে গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করা হয়। এরপর বড় কড়াইয়ে জাল দিয়ে গুড় তৈরি করা হয়।
গাছি একরামুল হোসেন, খায়রুল ইসলাম ও হাবিবুর জানান, গুড়ের গুনগত মান ভাল এবং সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকাররা এসে গুড় কিনে নিয়ে যায়। বর্তমানে দেড় শত থেকে দুই শত টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ হাসান ও আসলাম আলী জানান, খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি পিঠা পায়েস অত্যন্ত সুস্বাদু। আত্মীয়-স্বজনদের এই গুড় দিয়ে তৈরি করা দুধেল পিঠা ও পায়েসসহ নানা রকম মুখরোচক খাবার তৈরি করে আপ্যায়ন করা হয়। এছাড়াও খেজুর গুড় দিয়ে রুটি খাওয়া এখন এ অঞ্চলের মানুষের সুস্বাদু খাবার হয়ে উঠেছে। খেজুরের গুড়ে চাহিদা দিনদিন বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী সরকারিভাবে রাস্তার ধারে খেজুর গাছ লাগানোর দাবি জানিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর জানান, খেজুরের গুড়ের গুনগত মান ভাল হওয়ায় চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এজন্য খেজুর গাছ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরল, কাচা রস পান করা বিরত থাকার পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে খেজুর গুড় চাষীদের নানা ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।