রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় ইচ্ছার বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে (২৫) যৌনপল্লিতে বিক্রির চেষ্টা ও যৌনকাজে বাধ্য করার অভিযোগে ভুক্তভোগীর মা, বোন, ভগ্নিপতিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) আদালতে মামলাটি করা হয়। মামলাটি নথিভুক্ত করার জন্য গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, ভুক্তভোগী গৃহবধূর মা সেলিনা বেগম (৬০), বোন উত্তর দৌলতদিয়ার (যৌনপল্লি) সাজু মণ্ডলের স্ত্রী পিংকি আক্তার (৩৫), ভগ্নিপতি আজাহার মণ্ডলের ছেলে সাজু মণ্ডল (৪২), কানাই শেখের মেয়ে শেফালী বেগম ওরফে গুরুয়ালী (৬০) ও খালেক মণ্ডলের মেয়ে খুশি আক্তার (৩০)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর থেকে উত্তর দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিতে অতিবাহিত করেন ওই গৃহবধূ। সেখানে থাকা তার জন্য কষ্ট ও যন্ত্রণাদায়ক হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাপনে আগ্রহী হন। ২০২২ সালের ৬ মার্চ বিয়ে করে সংসারিক জীবন শুরু করেন। এখন তিনি পাঁচমাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার স্বামী ব্যবসায়ী হওয়ায় ফরিদপুর, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন। এ সুযোগে আসামিরা তাকে একা পেয়ে গত ১ জানুয়ারি যৌনপল্লিতে নিয়ে আসে। তখন তিনি বুঝতে পারেননি তাকে যৌনতায় নিয়োগ ও অন্যত্র পাচারের জন্য তাকে আনা হয়েছে।
পরে তার স্বামীকে ডেকে এনে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি এবং টাকা না দিলে তাকে বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা। তাদের চাহিদা মোতাবেক তিন লাখ টাকা দিয়ে স্বামীর সঙ্গে চলে যান ওই গৃহবধূ। পরে তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় ৯ মার্চ সালিস ডাকলে সেখানে তাকে যৌনপল্লিতে ফিরে আনা হবে না বলে তারা অঙ্গীকার করেন।
পরে তাকে আবারও মানবপাচার চক্রের সদস্যদের কাছে মোটা অংকের টাকায় বিক্রির চেষ্টা করেন আসামিরা। তবে এবারও তারা ব্যর্থ হন। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করতে যান ওই নারী। তবে পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী রেহেনাজ পারভীন বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর করার জন্য গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।