মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে এবারের বিশ্বকাপ শুরু হবে ২০ নভেম্বর। ইতোমধ্যে প্রত্যেক দল কাতারে যেতে শুরু করেছেন। এবার বিশ্বকাপে ৩২টা দল অংশগ্রহণ করবে। যেখানে প্রত্যেকটি দলই তাদের পারফর্ম অনুযায়ী মাঠে চমক দেখাবে। তবে মানুষের মাঝে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার দল নিয়ে একটু বেশি উন্মাদনা থাকে। থাকবেই বা না কেন, নাম যখন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা তখন তো সাপোর্ট একটু বেশিই থাকে। কারণ, ফুটবলে এই দুই দেশ থেকেই উঠে এসেছে অসংখ্য কিংবদন্তি ফুটবলার। অন্য দলেও তারকা ফুটবলার রয়েছে, তবে তাদেরকে নিয়ে এত আলোচনা হতে দেখা যায় না।
পৃথিবীর সব দেশের মতো বাংলাদেশের মানুষও ফুটবলে আসক্ত। দেশের বেশির ভাগ মানুষ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা সমর্থন করে। যদিও তরুণ প্রজন্ম লাতিনদের বিশ্বকাপ নেওয়া দেখেনি, তবুও তাদেরকে সাপোর্ট করতেই হবে। কারণ, এই দুই দলে রয়েছে বর্তমান প্রজন্মের আইকন লিওনেল মেসি ও নেইমার। সমর্থনের সঙ্গে চলে খেলা নিয়ে কথার লড়াই, এক পর্যায়ে তা আবার হাতাহাতিতেও রুপ নেয়।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে এই যে এত আলোচনা। তাহলে কি অন্য দলগুলো ভালো খেলে না। তাদের কি কোনো সমর্থক নেই বা তারা কি এই দুই দলকে ফাইনালে ওঠার জন্য মাঠে সাপোর্ট দিতে এসেছে। মোটেও না। তারাও অনেক শক্তপোক্ত দল। বিগত চার বিশ্বকাপই তার বড় প্রমাণ। যেখানে ইউরোপ লাতিনদেরকে কোণঠাসা করে রেখেছে।
২০১৮ রাশিয়ায় বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।সেবার কাপ নিয়েছিল ফ্রান্স। তখনই বোঝা গিয়েছিল ইউরোপের অবস্থান। তারা লাতিনদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিল এত ধীর ছন্দে তাদের কাছ থেকে কাপ নেওয়া যায় না।
আবার ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মাঠে আর্জেনটিনার পতন দেখেছিল বিশ্ববাসী। সেবার লিওনেল মেসিদেরকে কাঁদিয়ে শিরোপা জিতে নেয় জার্মানরা।
২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও লাতিনদের রুখে দিয়ে ইউরোপরা আধিপত্য বিস্তার করেছিল। সেবার নেদারল্যান্ডসকে থামিয়ে কাপ নেয় স্পেন।
আমরা যদি আর একটু পিছিয়ে যায়, তাহলে দেখব ২০০৬ সালের জার্মান বিশ্বকাপ। যেখানে ইউরোপের মাঠে ইউরোপের আধিপত্য। সেখানে ফ্রান্সকে হারিয়ে ইতালি কাপ নেয়। অর্থাৎ বিগত চার বিশ্বকাপ ইউরোপের দখলে। সেখানে আমরা এখন লাতিনেই পড়ে আছি।
মোট কথা হলো, বিগত দুই দশক যাবত লাতিন আমেরিকা তাদের ফুটবলীয় সৌন্দর্য ম্লান করে ফেলেছে। যেখানে ইউরোপিয়ানরা মাঠে গতির ঝড় তুলে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিচ্ছে, সেখানে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সেই আগের ধারা ধরে রেখেছে। যার কারণে বিশ্বকাপের মঞ্চে তারা বারবার পরাস্ত হচ্ছে। তবুও আমরা বর্তমান প্রজন্ম বিশ্বকাপের ট্রফি তাদের হাতেই দেখতে চায়।