২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে মারাকানায় জার্মানির কাছে শেষ মুহূর্তের গিয়ে পরাজয়ে বেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন লিওনেল মেসি। এরপর রাগে অভিমানে বছর দুয়েক পর তো জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণাও দিয়ে বসেছিলেন তিনি। তবে কয়েক মাস পরেই নিজের সিদ্ধান্ত বদলে পুনরায় জাতীয় দলে ফিরে আসেন। উদ্দেশ্য পরের রাশিয়া বিশ্বকাপে পরাজয়কে বিজয়ে রূপ দেওয়া। কিন্তু ২০১৮ বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা।
কিন্তু এবার কাতার বিশ্বকাপে সেই ভুল যেন করলেন না লিওনেল মেসি। গোটা দলকে নেতৃত্ব দিয়ে নিজে গোল করে ও দলে সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়ে শেষ পর্যন্ত অধরা বিশ্বকাপ জিতেই নিলেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই তারকা। সেটি আবারও গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে।
৩৬ বছর ধরে বিশ্বকাপ না জিততে পারা আর্জেন্টাইন সমর্থকদের সব বেদনাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে নিজের সারাজীবনের আরাধ্য স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেওয়ার পর কীভাবে রাতটি পার করবেন মেসি? আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কাছে এমন ঐতিহাসিক দিন উপহার দিয়ে প্রতিটি সময় কেমন যাচ্ছে এই মহাতারকার? বিদায়ী কিংবদন্তি ডিয়াগো ম্যারাডোনা কি ওপার থেকে মেসিদের এই জয় দেখছেন? মেসি সম্ভবত সেটি ঠিক অনুভব করতে পারছেন না।
ব্রাজিল বিশ্বকাপে শিরোপার খুব কাছে গিয়েও ফসকে ফেলার সেই কষ্টদায়ক মুহূর্ত যে মেসিকে প্রতিনিয়তই তাতিয়ে বেড়িয়েছে তার বড় উদাহরণ এবারের বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্স। মরুর বুকে নিজেকে নিঙড়ে দিয়ে একের পর এক রেকর্ড নিজের নামে করে নেন। প্রতি ম্যাচে নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়ে নিজের চাওয়ার সবই যেন পূরণ করে নিলেন তিনি।
বিশ্বকাপের শুরুটা মেসি করেছিলেন দুর্দান্তভাবে। সৌদি আরবের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচের দশ মিনিটের মধ্যেই পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল মেসি। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সেই ম্যাচ অকল্পনীয়ভাবে হেরে যায় লিওনেল স্কালোনির দল। তবে পরের ম্যাচ থেকেই নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেন থাকেন জুলিয়ান আলভারেজ, এনজো ফার্নান্দেজ, রদ্রিগো ডি পলরা।
তবে ব্যক্তি মেসি এবার বিশ্বকাপটা যেভাবে শুরু করেছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল এবারের বিশ্বকাপটি তিনি জয় করবেনই। দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে মেসিও সেটি প্রমাণ করলেন সহজভাবেই।
বিশ্বকাপ জয়ের পর এক সাক্ষাতকারে মেসি বলেন,আমি জানতাম ঈশ্বর আমাকে বিশ্বকাপ দেবেন। আমার নিজের ভেতর কেন জানি সেটি বারবার মনে হচ্ছিল।
এমন জয়ের রাতে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের কথাও ভোলেননি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক। দেশের মানুষের সঙ্গে এই জয়ের মুহূর্ত ভাগাভাগি করতে চান তিনি। এজন্য নাকি তিনি বেশ মুখিয়েও আছেন। মেসি বলেন, ‘আমি আর্জেন্টাইনদের সঙ্গে উৎসব করতে মুখিয়ে আছি।