ঢাকা , বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

দুষ্কৃতকারিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার আহ্বানে প্রশাসন নির্বিকার : রিজভী

বিভিন্ন সময় বিশৃঙ্খলাকারী-দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দলের পক্ষ থেকে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রশাসন নির্বিকার থাকছে।

মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার মূলমন্ত্র বুকে ধারণ করে এই দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। গণতন্ত্রের মূল নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেই শত প্রতিকূলতা ও ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। স্বজাতির সব ধর্ম ও বর্ণের সজ্জন মানুষ এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশায় যুক্ত ব্যক্তিরা এই দলের সদস্য হতে পারেন। সমাজবিরোধী কোনো ব্যক্তি, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের স্থান এই দল বরদাস্ত করে না।

তিনি বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু দল যখনই এ ধরনের ঘটনা অবহিত হয়, তখনই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দ্বিধা করেনি। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই গণতান্ত্রিক সংবিধান ও সুশাসনের জন্য আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং এর জন্য নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম করে এসেছে। এই দল মনে করে, একটি আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজে নেতৃস্থানীয় মানুষদের যোগ্যতা, দক্ষতা, ন্যায়পরায়ণতা, সৎ ও মানবিক গুণাবলি থাকা ব্যক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই উল্লিখিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির সমবেত ধ্বনিই হচ্ছে সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে নানাবিধ সামাজিক অপরাধের বিভিন্ন মাত্রার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচার’ এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবৈধ কালো টাকা এবং গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে ‘মব কালচার’ এর নামে সমাজে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে। আবার অন্যদিকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল বিএনপির নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, অপতৎপরতা, কৃত্রিমভাবে তৈরি সামাজিক অশান্তি গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করা এবং নির্বাচন পেছানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বলে জনগণ মনে করে। শেখ হাসিনার আমলে অদ্ভূত উন্নয়নের বয়ানের মতো এখন নির্বাচন পেছানো নিয়ে নানা ধরনের বয়ান দেওয়া হচ্ছে।

রিজভী বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দলের ভেতরে থেকে অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে বহিষ্কার, অব্যাহতি প্রদান, পদ স্থগিত, কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। আমরা লক্ষ করেছি, দলের পক্ষ থেকে এহেন চলমান সাংগঠনিক ব্যবস্থার বিষয়ে গণমাধ্যমে খুব একটা উল্লেখ করা হয়নি। উপরন্তু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা ভূমিকা রহস্যজনক। দলের পক্ষ থেকে বারবার অপরাধী ও বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকছে। দুষ্কৃতকারিদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দল থেকে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কলকাঠি নাড়ছেন বলে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সমাজ, সংস্কৃতি, সভ্য আচরণ বিপন্ন হয়ে পড়বে। প্রশাসনিক এই নিষ্ক্রিয়তার কারণে জনগণের এখন জীবন-মরণের প্রশ্ন। গণতন্ত্রের স্থায়ী পুনরুজ্জীবন ও ঐতিহাসিক সার্থকতা নির্ভর করছে রাষ্ট্র ও সমাজে শান্তি ও স্থিতির ওপর। আর এ ক্ষেত্রে দক্ষ প্রশাসন অতীব জরুরি। কিন্তু আওয়ামী আমলের কালো টাকা ও তাদের দোসরদের ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ তৎপরতার কারণে দুষ্কৃতিকারিরা আশকারা পাচ্ছে এবং সমাজে নৈরাজ্য তৈরির সম্ভাবনা সৃষ্টির আলামত দেখা যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আব্দুস সাত্তার, একরামুল হক বিপ্লব, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ছাত্রদলের ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ধারের নামে ঋণের ফাঁদ পা দিলেই মাথায় হাত কেরানীগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ঋণজাল

দুষ্কৃতকারিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার আহ্বানে প্রশাসন নির্বিকার : রিজভী

আপলোড সময় : ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

বিভিন্ন সময় বিশৃঙ্খলাকারী-দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দলের পক্ষ থেকে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রশাসন নির্বিকার থাকছে।

মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার মূলমন্ত্র বুকে ধারণ করে এই দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। গণতন্ত্রের মূল নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেই শত প্রতিকূলতা ও ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। স্বজাতির সব ধর্ম ও বর্ণের সজ্জন মানুষ এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশায় যুক্ত ব্যক্তিরা এই দলের সদস্য হতে পারেন। সমাজবিরোধী কোনো ব্যক্তি, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের স্থান এই দল বরদাস্ত করে না।

তিনি বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু দল যখনই এ ধরনের ঘটনা অবহিত হয়, তখনই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দ্বিধা করেনি। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই গণতান্ত্রিক সংবিধান ও সুশাসনের জন্য আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং এর জন্য নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম করে এসেছে। এই দল মনে করে, একটি আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজে নেতৃস্থানীয় মানুষদের যোগ্যতা, দক্ষতা, ন্যায়পরায়ণতা, সৎ ও মানবিক গুণাবলি থাকা ব্যক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই উল্লিখিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির সমবেত ধ্বনিই হচ্ছে সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে নানাবিধ সামাজিক অপরাধের বিভিন্ন মাত্রার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচার’ এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবৈধ কালো টাকা এবং গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে ‘মব কালচার’ এর নামে সমাজে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে। আবার অন্যদিকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল বিএনপির নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, অপতৎপরতা, কৃত্রিমভাবে তৈরি সামাজিক অশান্তি গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করা এবং নির্বাচন পেছানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বলে জনগণ মনে করে। শেখ হাসিনার আমলে অদ্ভূত উন্নয়নের বয়ানের মতো এখন নির্বাচন পেছানো নিয়ে নানা ধরনের বয়ান দেওয়া হচ্ছে।

রিজভী বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দলের ভেতরে থেকে অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে বহিষ্কার, অব্যাহতি প্রদান, পদ স্থগিত, কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। আমরা লক্ষ করেছি, দলের পক্ষ থেকে এহেন চলমান সাংগঠনিক ব্যবস্থার বিষয়ে গণমাধ্যমে খুব একটা উল্লেখ করা হয়নি। উপরন্তু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা ভূমিকা রহস্যজনক। দলের পক্ষ থেকে বারবার অপরাধী ও বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকছে। দুষ্কৃতকারিদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দল থেকে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কলকাঠি নাড়ছেন বলে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সমাজ, সংস্কৃতি, সভ্য আচরণ বিপন্ন হয়ে পড়বে। প্রশাসনিক এই নিষ্ক্রিয়তার কারণে জনগণের এখন জীবন-মরণের প্রশ্ন। গণতন্ত্রের স্থায়ী পুনরুজ্জীবন ও ঐতিহাসিক সার্থকতা নির্ভর করছে রাষ্ট্র ও সমাজে শান্তি ও স্থিতির ওপর। আর এ ক্ষেত্রে দক্ষ প্রশাসন অতীব জরুরি। কিন্তু আওয়ামী আমলের কালো টাকা ও তাদের দোসরদের ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ তৎপরতার কারণে দুষ্কৃতিকারিরা আশকারা পাচ্ছে এবং সমাজে নৈরাজ্য তৈরির সম্ভাবনা সৃষ্টির আলামত দেখা যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আব্দুস সাত্তার, একরামুল হক বিপ্লব, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ছাত্রদলের ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।