২০২৩ সালে সারাদেশে ৬ হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৪০৭ জন। এসব দুর্ঘটনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩ সালের সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সংগঠনটি জানায়, দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে বার্ষিক প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
তাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমলেও বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। এতে শিশুমৃত্যুর সংখ্যাও আগের বছরের তুলনায় সামান্য কমেছে। গত বছর দেশে ৬ হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত এবং ১১ হাজার ৪০৭ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৫৩২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৪৮৭ জন নিহত হয়েছেন (যা মোট নিহতের ৩৮ শতাংশ)। এতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে আঞ্চলিক সড়কে সবচেয়ে বেশি ৪১ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, গত বছর ১০৭টি নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৪৮ জন নিহত এবং ৭২ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ২৮৭ টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩১৮ জন নিহত এবং ২৯৬ জন আহত হয়েছেন। সারাদেশের ৮২ শতাংশ রেল ক্রসিং অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ।
সংগঠনটির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর সারাদেশে প্রতিদিন তিনজনের বেশি শিশুর প্রাণ গেছে সড়কে। সারাদেশে মোট ১ হাজার ১২৮ শিশু নিহত হয়েছে। আর এ সংখ্যা সবচেয়ে বেশি আঞ্চলিক সড়কগুলোতে। বসতবাড়ির আশপাশের সড়কে খেলাধুলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার সময় নিহতের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এরমধ্যে যাত্রী বা পণ্যবাহী বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ৪০ শতাংশের বেশি শিশু মারা গেছে। এরপর রয়েছে আঞ্চলিক বা গ্রামীণ সড়কের যানবাহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজি-বাইকের ধাক্কা শিশুর মৃত্যুর সংখ্যা। আর স্থানীয় নছিমন, ভটভটি বা মাহিন্দ্রের ধাক্কায় গেছে ৭ শতাংশ শিশুর প্রাণ। এসব শিশুদের সবচেয়ে বেশি ৪৩ শতাংশেরই বয়স ৬ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। এরপরই আছে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশু (৩৭ শতাংশ)।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করে এসব তথ্য জানান।