যত দূর চোখ যায় শুধুই সরিষাখেত। মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ আর মৌমাছির শব্দ। সরিষার হলুদে ছেয়ে গেছে দিনাজপুরের হাকিমপুর ও হিলি উপজেলার মাঠ। এর আগে এই উপজেলার জমিতে এক থেকে দুটি ফসলের বেশি আবাদ হতো না। তবে সরকারের কৃষি-বান্ধব নানা পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে এই উপজেলার জমিতে চাষ হচ্ছে তিনটি ফসল। আমন কাটার পর পড়ে থাকা জমিগুলোতে আবাদ হচ্ছে সরিষা। সরিষার বাম্পার ফলনে লাভবান হচ্ছেন কৃষক, হাসি ফুটেছে তাদের মুখে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কিছুদিন বাদেই ঘরে উঠবে সরিষা। বছরখানেক আগেও পানি সংকটসহ নানা কারণে বোরো ধান কাটার পর দীর্ঘসময় পড়ে থাকত এই অঞ্চলের জমি। তবে পড়ে থাকা জমিতে এখন চাষ হচ্ছে দেশি-বিদেশি নানা জাতের সরিষা। চলতি মৌসুমে হাকিমপুর-হিলি উপজেলায় ২ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সরিষা চাষে গত বছরও বাম্পার ফলন হয়েছিল। সেই সঙ্গে বাজারে দামও ছিল সন্তোষজনক। এবারও ভালো ফলনের আশা কৃষকের। বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষে কৃষক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি এলাকাতেই কর্মস্থান হয়েছে কৃষি শ্রমিকদের।
সরিষা চাষি আব্দুল মালেক, ইয়াছিন, রুবেল বলেন, আগে আমরা ধান কাটার পর জমি ফেলে রাখতাম। এখন ফেলে না রেখে সরিষার চাষ করছি। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে। সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে চলতি মৌসুমে ধান আবাদ করা যাবে। ভোজ্যতেলের জোগান দিতে এবং আমদানি নির্ভরশীলতা কমাতে এসব সরিষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করতে আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি বিনামূল্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের সরিষা বীজ ও সার ২ হাজার ২০০ জন কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আমরা কৃষকদের পরামর্শসহ সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছি।