টিকিট কেনার পরও কুষ্টিয়ার শিলইদহে কবিগুরু রবিন্দ্র নাথ ঠাকুরের যাদুঘর দেখতে না পেয়ে ক্ষুদ্ধ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ানরা। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) কুষ্টিয়ার শিলইদহে কবিগুরু রবি ঠাকুরের যাদুঘর দেখতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি আরএনপিপি’র রাশিয়ান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এতমস্ত্রয় এক্সপোর্টের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। উভয় মাধ্যমে কথা বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদুঘরের দায়িত্বরত কাস্টোডিয়ান এবং রাশিয়ান দোভাষির কথাবার্তায় ভুল বোঝাবোঝির কারণে এঘটনা ঘটেছে ।
এতমস্ত্রয় এক্সপোর্টের রূপপুরে কর্মরত সূত্র জনায়, কয়েকজন রাশিয়ান তাদের শিশুদের নিয়ে কুষ্টিয়ার শিলইদহে কবিগুরু রবি ঠাকুরের যাদুঘর দেখার জন্য ভ্রমণের পরিকল্পনা করে। এজন্য আগেই যাদুঘরের দায়িত্বরত কাস্টোডিয়ানের সাথে যোগাযোগ করা হয়। কাস্টোডিয়ান ফোনের মাধ্যমে অবগত হয়ে রাশিয়ানদের ভ্রমণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। এ ভ্রমণের বিষয়ে কয়েকদফা যোগাযোগ হয়েছিল। কিন্তু শিলাইদহে পৌঁছার পর গেটগুলো বন্ধ ছিল। পরে জনৈক টিকিট বিক্রেতার নিকট হতে জনপ্রতি ৪০০ টাকা হারে রাশিয়ান শিশুসহ ১৮ জনের টিকিট কেনা হয়। টিকিট নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেও যাদুঘরটি তালাবদ্ধ ছিল। যাদুঘর দেখতে চাইলে তারা বলে আজ ছুটির দিন, যাদুঘরটি বন্ধ, পুরো এলাকা ঘুরে দেখুন। এসময় টিকিটের টাকা ফের চাইলে তারা বলেন, টিকিট ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, তাই টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না। যাদুঘরের আশেপাশের এলাকাও দেখতে দেওয়া হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন।
এবিষয়ে শিলাইদহ কুঠিকাড়ির কাস্টোডিয়ান আল আমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জাতীয় দিবসে বন্ধের দিনেও দেশের সকল যাদুঘর খোলা থাকে। পরবর্তী কার্যদিবসে সেই বন্ধ পালন করা হয়। একুশে ফেব্রুয়ারীতে যাদুঘর খোলা থাকায় পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারী সারাদেশের মতো এই যাদুঘরও বন্ধ রয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ান পর্যটকদের ভ্রমণের বিষয়ে জনৈক দোভাষী ফোনে যোগাযোগ করেন। বন্ধের কথা তাকে বলা হলেও তিনি রাশিয়ানদের ভ্রমণের অনুমতি পাওয়া কষ্টকর জানিয়ে একটা ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন। যাদুঘর ছাড়া আর সবকিছু দেখানোর ব্যবস্থা করা যাবে বলে জানানো হয়। শিশুসহ ১৮জন রাশিয়ান আসার পর যাদুঘরটি ছাড়া কুঠিবাড়ির সকল এলাকা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। একপর্যায়ে যাদুঘরটি দেখার জন্য পীড়াপীড়ি করলে মহাপরিচালকের অনুমতি ছাড়া যাদুঘর খোলা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। তখন তারা টিকিটের প্রসংগ উত্থাপন করে। কুঠিবাড়ি এলাকায় গেট দিয়ে প্রবেশের মূখেই টিকিট ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ছেঁড়া টিকিট নিয়ে টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব নয় জানালে তারা ক্ষুব্ধ হয়। তিনি আরও বলেন, ফোনে যোগাযোগের কারণে দোভাষী হয়ত: বিষয়টি বুঝতে পারেনি বা রাশিয়ানদের বন্ধের বিষয়টি পরিস্কার করে না বলার কারণে ভুল বোঝাবোঝি হয়েছে। তবে নিয়মের মধ্যে থেকে বিদেশী নাগরিকদের জন্য আমার সাধ্যমত যা করণীয় ছিল তাই করেছি।