কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চাকরি থেকে অব্যাহতির বিধান রেখে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং/র্যাগিং প্রতিরোধ-সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’-এর খসরা প্রকাশ করেছে সরকার। নীতিমালায় বলা হয়েছে কোনো শিক্ষার্থী বুলিং করলে তাকে অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা যাবে। বুলিং বা র্যাগিং প্রতিরোধ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) খসরা নীতিমালা প্রকাশ করেছে।
আগামী ১৮ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই খসরা নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
নীতিমালায় যা আছে
বুলিং বা র্যাগিং হলো ইচ্ছাকৃত ক্ষতির বা বেদনাদায়ক এবং আক্রমণাত্মক ব্যবহার।, যা যার প্রতি করা হয়, তার নিজেকে তা থেকে রক্ষা করা কষ্টকর হয়ে যায়। বুলিং/ র্যাগিং শারীরিক বা মানসিক হতে পারে, একজন অথবা দলবদ্ধভাবে করতে পারে। ব্যঙ্গ করে নাম ধরে ডাকা, বদনাম করা, লাথি মারা, বিভিন্ন ধরণের কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গিকরা বা উত্ত্যক্ত করা, এমনকি অবহেলা বা এড়িয়ে চলে মানসিক চাপ দেওয়া বুলিংয়ের বা র্যাগিংয়ের পর্যায়ে পড়ে। বুলিং/র্যাগিং ভিকটিমের পীড়া অথবা বেদনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শুধু সহপাঠী বা শিক্ষার্থী নয় শিক্ষক বা অভিভাবকদের দ্বারাও বুলিং/র্যাগিং হতে পারে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, বুলিং বা র্যাগিং প্রতিরোধ না করলে সমাজে গঠনমূলক নেতৃত্ব ও সুনাগরিকের অভাব পরিলক্ষিত হবে। তাই শিক্ষার্থীরা বুলিং-র্যাগিয়ের শিকার হচ্ছে কিনা কাউকে করছে কিনা, দু’দিকেই সজাগ থাকা সংশ্লিষ্ট সবার প্রয়োজন। এ প্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং-র্যাগিংয়ের মতো ঘটনা যাতে না ঘটে, সে লক্ষ্যে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো।
মৌলিক মৌখিক বুলিং-র্যাগিং
নীতিমালায় বলা আছে, কাউকে উদ্দেশ্য করে এমন কিছু বলা বা লেখা, যা কারাপ কোনো কিছুর প্রতি ইঙ্গিত বহন করাকে বোঝায়। যেমন, উপহাস করা, খারাপ নামে সম্বোধন করা বা ডাকা, অশালীন শব্দ ব্যবহার করা।
শারীরিক বুলিং-র্যাগিং
নীতিমারায় বলা হয়েছে, কাউকে কোনও নীতমালায় বলা হয়, কাউকে কোনও কিছু দিয়ে আঘাত করা, হাত দিয়ে চড়-থাপ্পড়, পা দিয়ে লাথি মারা, ধাক্কা মারা, খোঁচা দেওয়া, থুতু মারা, বেঁধে রাখা, কোনও বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বা বসে বা বিশেষ অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেওয়া অথবা বাধ্য করা, কারও কোনও জিনিসপত্র জোর করে নিয়ে যাওয়া বা ভেঙে ফেলা, মুখ বা হাত দিয়ে অশালীন বা অসৌজন্যমূলক অঙ্গভঙ্গি করা ইত্যাদি।
অন্যান্য
এ ছাড়া নীতিমালায় সামাজিক বুলি বা র্যাগিং, সাইবার বুলিং বা র্যাগিং, সেক্সুয়াল বুলিং বা র্যাগিং, জাতিগত বুলিং বা র্যাগিং সহ অন্যান্য বুলিয়ে সজ্ঞায়িত করা হয়েছে। বুলিং বা র্যাগিং প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে নীতিমালায়। কমিটি নিয়মিত পর্যক্ষেণ করতে বুলিং বা র্যাগিং হয় কি না, বুলিং প্রতিরোধে অভিযোগ বক্স রাখার ব্যবস্থা এবং অভিযোগের গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বুলিং প্রতিরোধে প্রতি ছয় মাস অন্তর একবার ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে উত্তরণের উপায় নিয়ে সেমিনার করার বিধান রাখা হয়।