আবেদনের মাধ্যমে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা স্মার্টকার্ড পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা। সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার স্মার্টকার্ড দিতে মাঠ কর্মকর্তাদের চারটি নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) উপ-পরিচালক (তথ্য অনুসন্ধান) মো. রশিদ মিয়া নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন। এতে ইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য নিম্নের চার নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো
১) বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির নিমিত্ত উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন দাখিল করবেন। আবেদনের সঙ্গে এতদসংক্রান্ত গেজেটসহ সাম্প্রতিককালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদেরকে প্রদত্ত এমআইএস নম্বরসহ স্মার্ট কার্ড এবং ডিজিটাল সনদের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে।
২) মাসিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসাররা যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসারের মাধ্যমে ওই আবেদনসমুহ মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, ঢাকা বরাবর প্রেরণ করবেন।
৩) আঞ্চলিক/সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসাররা একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাসিক/ত্রৈমাসিকভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
৪) বিতরণের ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি রেজিস্ট্রারে এবং ডিজিটালি এনআইডি সিস্টেমে প্রাপ্তি স্বীকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এর আগে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর ইসির মাসিক সমন্বয় সভায় নেওয়া এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
এতে বলা হয়েছে, ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মার্টকার্ডের জন্য আবেদন করবেন, তাদের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট অনুসারে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে যাচাইপূর্বক বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্টকার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
জানা গেছে, কে এম নূরুল হুদার বিগত কমিশন জাতির সূর্য সন্তানদের সম্মানার্থে ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধার হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দিয়েছিলেন। আর ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতে অনুষ্ঠিত সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের চিপসের নিচে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ দুটি স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় পত্রের মাধ্যমে তাদের সম্মতি দেয়। তবে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা এ আবেদন করলে তা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভেটিং করিয়ে সন্নিবেশের সিদ্ধান্ত হয়।
ওই সময় কে এম নূরুল হুদার কমিশন গেজেট অনুযায়ী ১ লাখ ৮৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে বিশেষ এ স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য প্রথমবারের মতো কোনো একটি সুনির্দিষ্ট শ্রেণির জন্য স্মার্টকার্ডের নকশায় পরিবর্তন আনে। তবে আলোচনা না করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ স্মার্টকার্ড দেওয়ার আপত্তি জানায় মন্ত্রণালয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় উদ্যোগটি। এবার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেই স্মার্টকার্ড দিচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ এ কার্ড নিতে শুধু নির্বাচন কমিশনে আবেদন করলেই হবে।