কখনও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কখনও এএসপি কিংবা ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয়ে ধনাঢ্য পরিবারের মেডিকেল, বুয়েট ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করেন মেহেদী হাসান (৩২)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। এরপর ফাঁদ পেতে জড়ান প্রেমের সম্পর্কে। কৌশলে সেসব মেয়েদের থেকে নগ্ন ভিডিও ও ছবি সংগ্রহ করতে সময় লাগে না তার। আর তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আদায় করতেন মোটা অঙ্কের টাকা।
এমন সব অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাকে (মেহেদী) গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।
এ সময় ডিবির জানায়, ১৫ ফেব্রুয়ারি পল্টন থানায় এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর বাবার করা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহারের বরাতে ডিবি জানিয়েছে, ৭ জানুয়ারি ভুক্তভোগী ছাত্রীর মামার ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি ভিডিও আসে। ভিডিওটিতে ভাগনির অশ্লীল ছবি দেখতে পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ভাগনির সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। এ সময় ভাগনি জানান, মেহেদী নামে একজনে সঙ্গে ২০২০ সালের প্রথম দিকে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেহেদী তখন নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। ওই সময় তাকে বিভিন্ন প্রলোভনে নগ্ন ভিডিও ও ছবি পাঠাতে বাধ্য করেন তিনি (মেহেদী)। সম্পর্কের এক পর্যায়ে মেহেদী কোনো চাকরি করেন না বলে জানতে পারেন ভুক্তভোগী। মূলত তিনি একজন প্রতারক। আর ব্ল্যাকমেল করাই তার (মেহেদী) পেশা। বিষয়টি জানতে পেরে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন ভুক্তভোগী। ভয়ভীতি দেখিয়ে কৌশলে ভুক্তভোগীর থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মেহেদী। তবে মেহেদী আরও টাকা দাবি করে বসেন। টাকা না পেয়ে ভুক্তভোগীর আত্মীয়দের মোবাইল নম্বর ও ফেসবুক আইডি সংগ্রহ করে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেন মেহেদী।
এ বিষয়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ বলেন, শতাধিক শিক্ষার্থীর নগ্ন ভিডিও ও ছবি এবং চ্যাটিং হিস্ট্রি তার মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে। সাত বছর ধরে শতাধিক নারীর সঙ্গে এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন তিনি।