ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

বাউত উৎসবে মেতেছে সৌখিন মৎস্য শিকারীরা

  • হান্ডিয়াল নিউজ
  • আপলোড সময় : ১১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ২১০ বার দেখা হয়েছে।

চলনবিল অধ্যাসিতু সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বাউত উৎসবে মেতেছেন সৌখিন মৎস্য শিকারিরা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সৌখিন মৎস্য শিকারীরা দল বেঁধে বিলে নেমে মনের আনন্দে মাছ শিকার করছেন। এ সময় অনেকেই বিলের পানি থেকে বোয়াল, শোল, রুই ও কাতল মাছ ধরছেন। আবার অনেককেই খালি হাতে ফিরে যেতেও দেখা গেছে।

দলবেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মৎস্য শিকারিদের ডাকা হয় বাউত বলে। তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ করা হয়। হাজার বছর ধরে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে হয়ে আসছে বাউত উৎসব। বর্ষার শেষে বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ার সময় এই উৎসব হয়ে থাকে।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের গোমানী খালে দেখা যায়, ভোর থেকে চলনবিলের গোমানী খালে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকারে নেমেছেন অনেক মৎস্য শিকারি। ভোরের আলো ফোটার আগেই বিলপাড়ে হাজির হয় নানা বয়সী হাজারো মানুষ। সবার হাতে পলো, ঠেলা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। একসঙ্গে বিলে নেমে লোকজ রীতিতে মনের আনন্দে চলছে মাছ শিকার। দলবেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মৎস্য শিকারকে ডাকা হয় বাউত। তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ। চলনবিলাঞ্চলে এমন উৎসব চলছে যুগের পর যুগ ধরে।

জানা যায়, বিলে দল বেঁধে মাছ ধরার এই আয়োজনের নাম ‘বাউত উৎসব’। দেশের বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে থেকে উৎসবে অংশ নেন নানা বয়সী হাজারো মানুষ। তবে, এ বছর বিলে মেলেনি কাঙ্খিত মাছের দেখা। এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ মৎস্য শিকারিরা। তাদের অভিযোগ, অবৈধ জাল আর গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যান প্রভাবশালীরা।

তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আবু হাসিম খোকন জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয় মাসব্যাপী এই উৎসব। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে বিলাঞ্চলের পূর্বনির্ধারিত এলাকায় দল বেঁধে মাছ শিকারে নামেন বাউতেরা।

মৎস্য শিকারী শাহিন আলম, লুৎফর রহমানসহ অনেকেই জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে আসছি এই বাউত উৎসব। তাই আমরা এলাকার লোকজনের সঙ্গে শখের বসে বাউত উৎসবে আসি। সারা দিনে রুই, কাতল, বোয়াল,শোল, টাকিসহ নানা প্রকারের মাছ পাওয়া যায়। এতে সবাই খুশি।

উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট বলেন, প্রকাশ্যে অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল ব্যবহার হচ্ছে। তাই আগামীতে দেশী মাছের সাথে বাঙালী সংস্কৃতির এই উৎসবও হারিয়ে যাবে। এছাড়া বাউত উৎসব বিলপাড়ের মানুষের একটি ঐতিহ্য। ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি যে বিলপাড়ের সৌখিন মৎস্য শিকারীরা দিন ছিক করে এক সঙ্গে বাউত উৎসবে মেতে উঠে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ধারের নামে ঋণের ফাঁদ পা দিলেই মাথায় হাত কেরানীগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ঋণজাল

বাউত উৎসবে মেতেছে সৌখিন মৎস্য শিকারীরা

আপলোড সময় : ১১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

চলনবিল অধ্যাসিতু সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বাউত উৎসবে মেতেছেন সৌখিন মৎস্য শিকারিরা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সৌখিন মৎস্য শিকারীরা দল বেঁধে বিলে নেমে মনের আনন্দে মাছ শিকার করছেন। এ সময় অনেকেই বিলের পানি থেকে বোয়াল, শোল, রুই ও কাতল মাছ ধরছেন। আবার অনেককেই খালি হাতে ফিরে যেতেও দেখা গেছে।

দলবেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মৎস্য শিকারিদের ডাকা হয় বাউত বলে। তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ করা হয়। হাজার বছর ধরে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে হয়ে আসছে বাউত উৎসব। বর্ষার শেষে বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ার সময় এই উৎসব হয়ে থাকে।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের গোমানী খালে দেখা যায়, ভোর থেকে চলনবিলের গোমানী খালে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকারে নেমেছেন অনেক মৎস্য শিকারি। ভোরের আলো ফোটার আগেই বিলপাড়ে হাজির হয় নানা বয়সী হাজারো মানুষ। সবার হাতে পলো, ঠেলা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। একসঙ্গে বিলে নেমে লোকজ রীতিতে মনের আনন্দে চলছে মাছ শিকার। দলবেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মৎস্য শিকারকে ডাকা হয় বাউত। তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ। চলনবিলাঞ্চলে এমন উৎসব চলছে যুগের পর যুগ ধরে।

জানা যায়, বিলে দল বেঁধে মাছ ধরার এই আয়োজনের নাম ‘বাউত উৎসব’। দেশের বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে থেকে উৎসবে অংশ নেন নানা বয়সী হাজারো মানুষ। তবে, এ বছর বিলে মেলেনি কাঙ্খিত মাছের দেখা। এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ মৎস্য শিকারিরা। তাদের অভিযোগ, অবৈধ জাল আর গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যান প্রভাবশালীরা।

তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আবু হাসিম খোকন জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয় মাসব্যাপী এই উৎসব। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে বিলাঞ্চলের পূর্বনির্ধারিত এলাকায় দল বেঁধে মাছ শিকারে নামেন বাউতেরা।

মৎস্য শিকারী শাহিন আলম, লুৎফর রহমানসহ অনেকেই জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে আসছি এই বাউত উৎসব। তাই আমরা এলাকার লোকজনের সঙ্গে শখের বসে বাউত উৎসবে আসি। সারা দিনে রুই, কাতল, বোয়াল,শোল, টাকিসহ নানা প্রকারের মাছ পাওয়া যায়। এতে সবাই খুশি।

উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট বলেন, প্রকাশ্যে অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল ব্যবহার হচ্ছে। তাই আগামীতে দেশী মাছের সাথে বাঙালী সংস্কৃতির এই উৎসবও হারিয়ে যাবে। এছাড়া বাউত উৎসব বিলপাড়ের মানুষের একটি ঐতিহ্য। ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি যে বিলপাড়ের সৌখিন মৎস্য শিকারীরা দিন ছিক করে এক সঙ্গে বাউত উৎসবে মেতে উঠে।