ঢাকা , বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

‘ফ্রেম পুরোনো হলেও ইঞ্জিন আপডেট করা হয়েছিল’

উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হওয়া এফটি‑৭ বিজিআই মডেল প্রশিক্ষণ বিমানের ফ্রেম পুরোনো হলেও এর ইঞ্জিন আপডেট করা হয়েছিল। এমন তথ্যই জানান বাংলাদেশ নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।

সোমবারের ঘটনায় (২১ জুলাই) তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ জানতে ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং পুনরায় এমন দুর্ঘটনা এড়াতে চরমভাবে সতর্কতা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

পুলিশের মতো গল্প বানানোর সুযোগ নেই বলেও শোকাহত মন্তব্য করেন তিনি।

দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে, যার মধ্যে ২৫ জন শিশু, একজন পাইলট এবং একজন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৭৮ জন, যাদের অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। বার্ন ইউনিটে বর্তমানে দুজন রোগী ভেন্টিলেশনে রয়েছে।

দুর্ঘটনার সময় ওই বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে পতিত হয়। ভয়ার্ত এই ঘটনায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুল ও বিমান উভয় স্থানেই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা লক্ষ করা যায়। উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে; আহতদের বিমানের হেলিকপ্টারে করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

দুর্ঘটনার সময় বিমানটিতে ইঞ্জিনগত কোনো ত্রুটির লক্ষণ পাওয়া যায়। প্রশিক্ষণ বিমানটি ছাড়ার পর মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাইলট তৌকির ইসলাম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললেও চেষ্টা করেছিলেন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে বিমানের নিয়ন্ত্রণ রাখতে; তবে সেটি সম্ভব হয়নি। তিনি গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন, পরে মৃত্যু হয়।

এই দুর্ঘটনার পর জাতীয় সরকার ২২ জুলাই দিনটি এক দিনের শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। দেশে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং সরকারি নির্দেশনায় সব ধর্মীয় স্থানেও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

উপর্যুক্ত ঘটনাক্রম অনুসন্ধানের জন্য উচ্চমানের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি দুর্ঘটনার কারণে এবং বিমান পরিচালনার গভীর বিশ্লেষণ করবে। স্থানীয় জনজীবন ও ভবিষ্যতের মতো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুনর্বিবেচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ধারের নামে ঋণের ফাঁদ পা দিলেই মাথায় হাত কেরানীগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ঋণজাল

‘ফ্রেম পুরোনো হলেও ইঞ্জিন আপডেট করা হয়েছিল’

আপলোড সময় : ১২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হওয়া এফটি‑৭ বিজিআই মডেল প্রশিক্ষণ বিমানের ফ্রেম পুরোনো হলেও এর ইঞ্জিন আপডেট করা হয়েছিল। এমন তথ্যই জানান বাংলাদেশ নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।

সোমবারের ঘটনায় (২১ জুলাই) তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ জানতে ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং পুনরায় এমন দুর্ঘটনা এড়াতে চরমভাবে সতর্কতা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

পুলিশের মতো গল্প বানানোর সুযোগ নেই বলেও শোকাহত মন্তব্য করেন তিনি।

দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে, যার মধ্যে ২৫ জন শিশু, একজন পাইলট এবং একজন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৭৮ জন, যাদের অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। বার্ন ইউনিটে বর্তমানে দুজন রোগী ভেন্টিলেশনে রয়েছে।

দুর্ঘটনার সময় ওই বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে পতিত হয়। ভয়ার্ত এই ঘটনায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুল ও বিমান উভয় স্থানেই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা লক্ষ করা যায়। উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে; আহতদের বিমানের হেলিকপ্টারে করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

দুর্ঘটনার সময় বিমানটিতে ইঞ্জিনগত কোনো ত্রুটির লক্ষণ পাওয়া যায়। প্রশিক্ষণ বিমানটি ছাড়ার পর মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাইলট তৌকির ইসলাম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললেও চেষ্টা করেছিলেন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে বিমানের নিয়ন্ত্রণ রাখতে; তবে সেটি সম্ভব হয়নি। তিনি গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন, পরে মৃত্যু হয়।

এই দুর্ঘটনার পর জাতীয় সরকার ২২ জুলাই দিনটি এক দিনের শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। দেশে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং সরকারি নির্দেশনায় সব ধর্মীয় স্থানেও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

উপর্যুক্ত ঘটনাক্রম অনুসন্ধানের জন্য উচ্চমানের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি দুর্ঘটনার কারণে এবং বিমান পরিচালনার গভীর বিশ্লেষণ করবে। স্থানীয় জনজীবন ও ভবিষ্যতের মতো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুনর্বিবেচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।