ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে জাল নোট তৈরি-বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও, সবুজবাগ ও ডেমরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার জাল নোটসহ নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র্যাব।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মোহাম্মদ আমিনুল হক ওরফে দুলাল (৪৩), আবদুর রাজ্জাক ওরফে দিদার (৩০), সুজন আলী (৪০) ও মোহাম্মদ সাকিবুল হাসান (২১)।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তাররা একটি চক্রের সদস্য। তারা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে জাল নোটের কারবার চালিয়ে আসছিলেন। তারা এখন পর্যন্ত প্রায় দুটি কোটি টাকার ব্যবসা করেছেন। আমিনুল জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করতেন। তিনি নিজে জাল নোটের ডিজাইন করতেন। জাল নোট ছাপার কাজ করতেন। তিনি জাল নোট ছেপে তা তার সহযোগী দিদারকে দিতেন। দিদার চক্রের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে জাল নোট কাটিং ও বান্ডিল করতেন। তারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে গ্রাহক তৈরি করতেন। তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিতেন। পরে তাদের সুবিধাজনক স্থানে জাল নোট সরবরাহ করতেন। যখন ব্যবসা রমরমা থাকত, তখন চক্রটি দিনে দুই থেকে তিন লাখের বেশি টাকার জাল নোট তৈরি করত। চক্রটি ১ লাখ টাকার জাল নোট ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করত।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটির মূল হোতা আমিনুল। অন্যরা তার সহযোগী। আমিনুল একসময় রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতেন। তিনি অনলাইনে জাল নোট তৈরি করা শেখেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হওয়া কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে তিনি জাল নোট তৈরি-বিক্রির চক্র গড়ে তোলেন। ‘জাল নোট বিক্রি করি’, ‘জাল টাকা সেল’, ‘জাল টাকা বেচি’— এমন সব নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ-গ্রুপ খুলে তারা জাল নোটের কারবার চালিয়ে আসছিলেন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার দিদার হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক-স্নাতকোত্তর করেছেন। তিনি তৈরি পোশাকের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার পর অল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় জাল নোট তৈরি-বিক্রি চক্রে যুক্ত হন। চক্রের সদস্য সুজন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি এলাকায় জুতার দোকান করতেন। ব্যবসায় ক্ষতির পাশাপাশি তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে ঢাকায় চলে আসেন। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই চক্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। জাল নোট ছাপার পর দিদারের সঙ্গে তা কাটিং ও বান্ডিল করতেন তিনি। পরে গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করতেন। চক্রের সদস্য সাকিবুল রাজধানীর একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতেন। তিনি মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন।