কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে আজ রোববার (২০ নভেম্বর)। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় কাতারের আল-খোরের আল-বায়াত স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক কাতারের মুখোমুখি হবে ইকুয়েডর।
গোটা পৃথিবী যেন বিশ্বকাপ জ্বরে আক্রান্ত। উরুগুয়ে থেকে ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপের সূচনা।
এরপর থেকে ৪ বছর অন্তর অন্তর হয় ফুটবল বিশ্বযুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৪২ আর ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ স্থগিত ছিল। সবচেয়ে বেশি পাঁচবার বিশ্বসেরা হয়েছে ব্রাজিল। চার বার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জার্মানি আর ইতালি। আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স আর উরুগুয়ে বিশ্বকাপ জিতেছে দু’বার করে। একবার করে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্পেন আর ইংল্যান্ড। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে।
বিশ্বকাপের শুরুতে অবশ্য এই ট্রফির নাম ছিল জুলে রিমে বিশ্বকাপ। চ্যাম্পিয়ন দলকে ওই ট্রফিই দেওয়া হতো। ১৯৪৬ সালে ফিফা প্রেসিডেন্ট জুলে রিমেকে সম্মান জানিয়ে তার নামে ট্রফির নামকরণ করা হয়। ১৯৬৬ সালে এই ট্রফি চুরি হয়ে যায়। সেবার ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জেতার পর ওয়েস্টমিনস্টার হলে ট্রফির প্রদর্শনী করা হয়। ২০ মার্চ ওই হল থেকেই ট্রফি চুরি হয়ে যায়। সাত দিন পর সেই ট্রফি উদ্ধার হয়।
১৯৭০ সালে ব্রাজিল তৃতীয়বার বিশ্বসেরা হওয়ার পর পাকাপাকি ভাবে জুলে রিমে ট্রফি সেলেকাওদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে ১৯ ডিসেম্বর, ১৯৮৩ সালে ফের এই ট্রফি খোয়া যায়। ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপের নতুন ট্রফির উন্মোচন হয়। ব্রিটিশ নাগরিক সিলভিও গ্যাজানিগা এই ট্রফির ডিজাইন বানান। বর্তমান এই ট্রফির উচ্চতা ৩৬.৮ সেন্টিমিটার। ১৮ ক্যারেট সোনা দিয়ে বানানো হয়েছে বিশ্বকাপ। ৬.১৪২ কেজির মধ্যে ৫ কেজিই সোনা। বিশ্বকাপের ডিজাইন এমন ভাবে তৈরি, দেখলে মনে হবে দু’জন মানুষ হাত দিয়ে পৃথিবীকে স্বাগত জানাচ্ছে। ১৯৭৪ সালে নতুন বিশ্বকাপ ট্রফির প্রথম ব্যবহার হয়। সে বার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জার্মানি।
এরপর থেকে পাকাপাকিভাবে কোনো দেশকেই বিশ্বকাপ ট্রফিটি দেওয়া হয় না। চার বছর বিশ্বকাপ ট্রফি নিজেদের কাছে রাখতে পারে কোনো দেশ। এরপর কাপজয়ী দলকে একটি রেপ্লিকা দেওয়া হয়।
বিশ্বকাপে কাতারের এটি প্রথম অংশগ্রহণ। স্বাগতিক হিসেবে কাতার সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। অন্যদিকে আট বছর অনুপস্থিত থাকার পর বিশ্বকাপে ফিরেছে ইকুয়েডর। কাগজে কলমে কাতারের থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছে ইকুয়েডর। যে কারণে ম্যাচটিতে জয়ের সম্ভাবনায়ও এগিয়ে রয়েছে সফরকারীরা। দক্ষিণ আমেরিকান বাছাইপর্বে কঠিন চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে ইকুয়েডর চতর্থ স্থান লাভ করেছিল।
স্বাগতিক হিসেবে ঘরের মাঠের বাড়তি সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগাতে কাতারও প্রস্তুত। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে এ পর্যন্ত কোনো স্বাগতিক দল পরাজিত হয়নি। ইতিহাস এদিক থেকে কিছুটা হলেও কাতারের পক্ষে রয়েছে।