পাবনার চাটমোহরে ভুয়া নিকাহ রেজিস্ট্রারের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। সরকারি বিধি বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসকল অর্থলোভি ভুয়া নিকাহ রেজিস্ট্রার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা উপজেলায়। এরা বাল্যবিবাহ,বহু বিবাহসহ নিকাহ সংক্রান্ত এমন কোন কাজ নেই,যা করেন না। উপজেলার দু’চারটি মাদ্রাসার প্রধান ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা এই অপকর্মের সাথে জড়িত বলে একাধিক সূত্র জানায়।
গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) এমনই একজন ভুয়া নিকাহ রেজিস্ট্রার ধরা খান নিয়োগপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রারের হাতে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিক্হা রেজিস্ট্রার মওলানা মোঃ আব্দুল ওয়াহহাব চাটমোহর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে,উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কুয়াবাসী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মওলানা মোঃ আঃ হাকিম গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের চর উথুলী গ্রামে জনৈক আতান আলীর বাড়িতে তাঁর মেয়ে রত্সা খাতুনের নিকাহ রেজিস্ট্রি করতে যান। ভুয়া রেজিস্ট্রার আঃ হাকিম নিকাহ রেজিস্ট্রি করছেন-এমন সংবাদ পেয়ে সেখানে হাজির হন মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিয়োগপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার আঃ ওয়াহহাব।
এসময় তাদের দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে আঃ হাকিম গং আঃ ওয়াহহাবের উপর হামলা চালিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন। উপস্থিত লোকজন তাদের নিবৃত করলেও ভুয়া কাজী আঃ হাকিম নিকাহ রেজিস্ট্রার আঃ ওয়াহহাবকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে ওই দিন রাতেই আঃ ওয়াহহাব চাটমোহর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ভুয়া নিকাহ রেজিস্ট্রারের এই চক্রটি নানাভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান নাগরিক সমাজ।
এ ব্যাপারে উপজেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আঃ মতিন বলেন,এ ধরণের ভুয়া কাজীর দৌরাত্যে আমরা বিপাকে পড়েছি। আমাদের মধ্যেই কেউ কেউ এ ধরণের লোক দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রি করাচ্ছেন। যা কাম্য নয়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
নিকাহ রেজিসট্রার আঃ ওয়াহহাব জানান,আঃ হাকিম ইতোপূর্বেও গোপনে নিকাহ রেজিস্ট্রি করেছেন। বেশ কয়েকটি বাল্য বিয়েও দিয়েছে বলে শুনেছি। তাকে এ বিষয়ে বারণ করাও হয়েছে। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কাই করছেন না।
অভিযুক্ত মওলানা আঃ হাকিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ জন্য তিনি চাটমোহর পৌরসভার একজন নিকাহ রেজিস্টারের নাম বলে তার সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন। তিনিই নাকি তাকে দিয়ে এসব কাজ করান। হাকিম জানান,তার মতো কয়েকজন আছেন ওই কাজীর সাথে কাজ করেন।
চাটমোহর থানার এসআই শামসুল জানান,অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।