বয়সভিত্তিক সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের যুব নারী আসরে দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে একবার অনূর্ধ্ব-১৮ ও পরে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে। এবার প্রথমবারের মতো আয়োজিত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসেছে বাংলাদেশের মাটিতে। যেখানে নেপালকে উড়িয়ে দিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে শামসুন্নাহার জুনিয়রের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল। ঘরের মাটিতে অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে নেপালের কাছে হেরে গিয়েছিল বাংলার মেয়েরা। এবার নিজ দেশেই ওই টুর্নামেন্টে হারের মধুর প্রতিশোধ নিলো কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সাফের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে আয়োজিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের বাঘিনীরা। এতে ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শিরোপা জিতল লাল সবুজের বাংলাদেশ। সেপ্টেম্বরে সাবিনা খাতুনের বাংলাদেশ জাতীয় নারী দল নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের পরাজিত করে শিরোপা জিতেছিল।
এদিন ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নেপালের গোলরক্ষক কবিতা ডি-বক্সের মাথায় এসে স্বাগতিকদের আক্রমণ ঠেকাতে গেলে এলে বল পেয়ে যান আকলিমা খাতুন। তবে ফাঁকা পোস্ট পেয়েও ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। এতে গ্যালারিতে থাকা সমর্থকরা হতাশই হন।
এরপর ৬ষ্ঠ মিনিটে ডান পাশ দিয়ে দুরন্ত গতিতে বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল শামসুন্নাহার জুনিয়র। কিন্তু ঠিক ডি-বক্সের বাইরে তাকে ফাউল করে বসেন নেপালের ডিফেন্স। এরপর সেখান থেকে শাহেদার শট নিলেও গোলবার খুঁজে নিতে পারেনি।
১৮তম মিনিটে অধিনায়ক শামসুন্নাহার বল নিয়ে ঢুকে ডান দিকে পাস দেন শাহেদা আক্তার রিপাকে। রিপা বক্সে ক্রস দেন আকলিমাকে। আকলিমা ফাঁকায় দাঁড়িয়েও বল রিসিভ করতে না পারলে সুযোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের।
৩৬তম মিনিটে প্রথম সুযোগ তৈরি করেছিল নেপাল। তবে আমিশা কার্কি গড়ানো শট নিলে তা চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে বাইরে।
আক্রমণ অব্যাহত থাকলেও ফিনিশিংয়ের কারণে বারবার হতাশায় পড়তে হচ্ছিল বাংলাদেশিদের। তবে ৪২ মিনিটে শাহেদার ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটে গোলকিপার কিছু বুঝে ওঠার আগেই জালের ঠিকানা খুঁজে নেয়। এরপর যেন বাংলাদেশ আরও উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকে। তাই প্রথমার্ধের নির্ধারিত ৪৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অধিনায়ক শামসুন্নাহার। ফলে ২-০ ব্যবধানেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
৮০তম মিনিটে বাংলাদেশ গোল হজম করেই বসেছিল। তবে গোলকিপার রুপণা চাকমার একক দৃঢ়তায় নিশ্চিত গোলের হাত থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশের মেয়েরা।
৮২তম মিনিটে ডান পাশ ধরে বল নিয়ে ডি-বক্সে প্রবেশ করেন শাহেদা। এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল লক্ষ্যে শট নেন তিনি। তবে তার দুর্বল আকৃতির শট নেপালের গোলকিপার সহজেই তালুবন্ধি করেন।
এরপর ম্যাচের ৮৭ মিনিটে ম্যাচের শেষ গোল করেন উন্নতি খাতুন। ডি বক্সের বাইরে থেকে শাহেদার ফ্রি কিকে শুধু পা ছুঁইয়ে দেন তিনি। যদিও ম্যাচের শেষদিকে আরেকটি গোল পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে তা বাতিল হয়ে যায়।