সময়ের সঙ্গে কৃষিতে এসেছে পরিবর্তন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভূমির ব্যবহার বাড়ায় গ্রামাঞ্চলে বাড়ির আঙিনা ও ঘরের পাশে ঝোঁপ-ঝাড় হারিয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে এসব স্থানে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদন হওয়া পুষ্টিগুণে ভরা গাছ-আলু বিলুপ্তির পথে হলেও আবারেও বাণিজ্যিকভাবে আবাদ শুরু করেছে দিনাজপুরের কৃষকেরা।
পুষ্টিসমৃদ্ধ ও লাভজনক ফসল এ আলুর চাষ ধরে রাখতে কৃষি প্রধান দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা ও পরামর্শে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গাছ আলু চাষ হয়েছে। প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়া প্রতি পিস এ আলুর ওজন ৭-৮ কেজি, যা নিয়ে এলাকায় কৃষকদের মাঝে আলোচনা শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় চলতি মৌসুমে ২০ শতক করে ৪০ শতক জমিতে দুজন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছে। এ ছাড়াও অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে ছোট পরিসরে আবাদ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার খামারপাড়া ও টংগুয়া গ্রামে কৃষি বিভাগের সহায়তায় ঝিনাইদহের স্থানীয় জাতের গাছ আলু চাষ করেছে কৃষকেরা। ২০ শতকে জমিতে প্রায় দুই টন অর্থ্যাৎ ২ হাজার কেজি ফলনের আশা করছে তারা। এই গাছ আলুর প্রতি কেজির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩০ টাকা। অল্প টাকা ব্যয়ে এমন লাভে কৃষকরা খুশি।
জানা যায়, এই গাছ আলু ওল, গোল আলু এসব সবজির মতই ভর্তা, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। আলুটি খুব সুস্বাদু ও মুখরোচক। তাই বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
গাছ আলু চাষি খয়রাত আলী জানান, অল্প খরচে অধিক লাভের আশায় ২০ শতক জমিতে গাছ আলু লাগিয়েছি। এই ফসলে উৎপাদন খরচ প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা। অন্যদিকে ২ টনের অধিক গাছ আলুর ফলন আশা করছি। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
খামারপাড়া গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান বলেন, গাছ আলু চাষ করে অন্য ফসলের চেয়ে লাভ বেশি৷ সেইসঙ্গে স্থানীয় বাজার ও অন্য এলাকায় চাহিদা থাকায় গাছ আলু চাষ অনেকেই আগ্রহী হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, এই উপজেলায় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ গাছ আলু প্রথমবার বাণিজ্যিক চাষ করেই সফলতা পাওয়া গেছে। এতে আমরাও সন্তুষ্ট। গাছ আলু চাষে ব্যয় ও পরিশ্রম দুটোই অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে কম। তাই গাছ আলু চাষ বৃদ্ধি পাবে। গাছ আলু চাষে কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।