‘দে ধাক্কা’ ও ‘ডায়মন্ড’ নামে দুটি কিশোর গ্যাং তৈরি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন জুলফিকার আলী ও তার সহযোগীরা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. জুলফিকার আলী (৩৭), তার অন্যতম সহযোগী মো. হারুন অর রশিদ (৩৮), মো. শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮) ও মো. সুরুজ মিয়া (৩৯)। তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, দুটি চাপাতি ও সাতটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, জুলফিকার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন। কিছুদিন ওয়ার্কশপে কাজ করার পর নারায়ণগঞ্জে পিকআপ ভ্যানে হেলপারের কাজ শুরু করেন। এ অবস্থায় মালামাল চুরির দায়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা হয়। এরপর তিনি পালিয়ে সৌদি চলে যান। এরপর ২০২১ সালে দেশে আসার পর গ্রেপ্তার হয়ে দুই মাস জেল খেটে জামিনে বের হন। জেলে বসে হারুনের সঙ্গে জুলফিকারের সখ্যতা গড়ে ওঠে।
জুলফিকার জামিনে মুক্ত হয়ে হারুনকে নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টিউবওয়েলের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে কৃষ্ণ শামছুদ্দিন ও সুরুজসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ২০২২ সালে জুলফিকার ‘ডায়মন্ড’ নামে একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করেন। পরে ‘দে ধাক্কা’ নামে আরও একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করেন তিনি। কিশোর গ্যাং বাহিনী দুটিকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করতে থাকেন জুলফিকার।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্যাং দুটির সদস্যরা নিজেদের আধিপত্য জানান দিতে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতেন। তাদের নির্দেশনা দেওয়াসহ দেশি-বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ করতেন জুলফিকার। কিশোর গ্যাং দুটির সদস্যরা এলাকায় নিয়মিত মোটরসাইকেল ব্যবহার করে ছিনতাই, মাদক, ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানান অপরাধ করতেন। এ ছাড়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন।