বাড়ি নির্মাণের নতুন ইট কেনা দেখে ও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা জেনে চুরি করতে গিয়েছিলেন তিনজন। তাদের ঘরে ঢোকার বিষয়টি টের পাওয়ায় গৃহবধূ লাবনী খাতুন ও তার শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে টাকা ও গহনা চুরি করে পালিয়ে যায় তারা।
পাবনার চাটমোহরে চাঞ্চল্যকর প্রবাসীর স্ত্রী ও তার শিশু সন্তান হত্যার রহস্য উদঘাটনে তিন আসামীকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে চুরিকৃত মালামাল। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।
তিনি জানান,চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের দিঘুলিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদ ৭ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় থাকেন। তার স্ত্রী লাবনী খাতুন নতুন বাড়ি নির্মাণের জন্য কিছুদিন আগে ২৫ হাজার ইট কেনেন। এছাড়া ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলেন। গত ২৫ জানুয়ারি গৃহবধু লাবনী খাতুন তার ১০ বছরের ছেলে রিয়াদকে নিয়ে রাতে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। পরদিন সকালে বাড়ির ছাগলের ঘর থেকে লাবনী খাতুনের ও বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে গাছে ঝুলন্ত শিশু রিয়াদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের খুঁজে বের করতে মাঠে নামে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জড়িত ৩ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারৃকতরা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যে চোরাইকৃত গহনা,নগদ টাকা ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন,চাটমোহর উপজেলার ধুপুলিয়া গ্রামের মোজাম আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৬), তার আপন ভাই হোসেন আলী (৩৭) এবং রাজবাড়ির খানখানাপুর দত্তপাড়া এলাকার হুমায়ুন মিজি ওরফে হৃদয় (২৮)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে গ্রেফতারকৃতরা। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু বক্কর সিদ্দিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাসিবুল বেনজির,জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইমরান মাহমুদ তুহিন, পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য,গত ২৫ জানুয়ারি চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের দিঘুলিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে হত্যাকান্ডের শিকার হন মালয়েশিয়া প্রবাসী আঃ রশিদের স্ত্রী লাবনী খাতুন (৩৫) ও তার ছেলে রিয়াদ মাহমুদ (১০)। পুলিশ পরের দিন ২৬ জানুয়ারি দুপুরে লাশ উদ্ধার করে। ২৭ জানুয়ারি লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ হত্যাকান্ডের বিষয়ে নিহত গৃহবধূ লাবনী খাতুনের ভাই ভাঙ্গুড়া উপজেলার হাটগ্রামের বাসিন্দা শাহাদত হোসেন বাদী হয়ে চাটমোহর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ২২।