শস্য ভান্ডার নামে খ্যাত চলনবিল অঞ্চল এখন বোরো ধান রোপনের ভরা মৌসুম। কৃষি প্রধান এই অঞ্চলে শাক-সবজি, সরিষা ও ভুট্টার চাষ হলেও অর্থকরী ফসল হিসেবে বোরো ধানই একমাত্র ভরসা। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকেই বোরো চাষের জন্য জমিতে আগাছা পরিস্কার করে প্রস্তুত করে রেখেছিল কৃষক। এখন শুরু করেছেন চারা রোপন।
চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলার কৃষি অফিসের তথ্য মতে এ মৌসুমে বৃহত্তর চলনবিলে প্রায় ১ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগানো হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ও নিমাইচড়া এলাকার বিভিন্ন মাঠে তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে কৃষি জমিতে বোরো চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শীতের সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাঠে মাঠে চলছে হাল-চাষ, মই টানা, সার প্রয়োগ, জমির আইল নির্মাণ, পানি সেচ, বীজতলা থেকে চারা তোলা ও রোপন চলছে। পুরুষদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকও ধান লাগাতে মাঠে নেমেছেন। কর্ম ব্যস্ত কৃষক ও শ্রমিকরা মাঠেই খাচ্ছেন দুপরের খাবার। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এখন চাটমোহর সহ চলনবিলের মাঠে মাঠে।
উপজেলার সমাজ গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান জানান, আমার ৮ বিঘা জমির মধ্যে ২ বিঘা রোপন করা হয়েছে। সরিষার জমি ছাড়া বাকি জমিতে চলছে আগাম জাতের ইরি-বোরো ধান রোপন। সরিষা ঘরে তোলার পর পুরোদমে শুরু হবে বোরো ধান রোপনের কাজ। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ধান পাওয়া যাবে প্রায় ২৫ মণ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে ৯ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে চলছে চারা রোপণের কাজ। এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। এ এলাকায় সাধারণত ব্রিধান-২৮,২৯ এছাড়াও উন্নত ৫০. ৫৮, ৬৪, ৮১, ৮৪, ৮৯, ৯২, ৯৬ সহ বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধান চাষ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। ধানের দাম ভাল থাকায় বর্তমান সময়ে বোরো ধানের চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। সরকারি ভাবে এ মৌসুমে উপজেলার ৭ হাজার ৮শ কৃষককে ধান বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।