ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

চলনবিলে উৎপাদিত সুস্বাদু খেজুরের গুড় রপ্তানি হচ্ছে সারাদেশ

  • হান্ডিয়াল নিউজ
  • আপলোড সময় : ১১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ২১১ বার দেখা হয়েছে।

ছবি সংগৃৃহীত

শীত মৌসুম এলেই চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলায়  ব্যস্ত হয়ে পড়েন গাছিরা।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পৌষের শীতে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু খেজুরের গুড়। স্বাদে গন্ধে এই গুড় অতুলনীয়। এরই মধ্যে গাছিরা স্থানীয় খেজুর গাছের মালিকদের কাছ থেকে খেজুর গাছ লিজ নিয়ে গুড় তৈরি শুরু করছেন।

এই গুড়ের মান ভালো হওয়ায় এর চাহিদা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

বাজারে গুড়ের দাম ভলো পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন গুড় চাষিরা।  এই গুড়ের মান বজায় রাখতে নজরদারি করছে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।জানা যায়, শীত মৌসুম এলেই চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যস্ত হয়ে পড়েন গাছিরা। গাছ থেকে খেজুরের রস এনে তা মাটির তৈরি বিশেষ চুলায় জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় খাঁটি মানের খেজুরের গুড়। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই চোখে পড়বে এমন দৃশ্য। উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সকালে গাছিরা গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করে এসে বড় পাত্রে রস জাল দিচ্ছেন।

কথা হয় খেজুর গুড় চাষি নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, ভোর বেলায় গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে থাকেন। এ বছর প্রতি কেজি গুড় ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। যত শীত বাড়বে ততই রসের মান ভালো হয়। এতে গুড়ের মানও ভালো হয় বলে জানান তিনি।

স্থানীয় কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ৮ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় ৩০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ গাছগুলো থেকেই রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হয়।তাড়াশ উপজেলার ভাদাস গ্রামে আসা গুড় চাষি আবদুল মজিদ জানান, প্রতি কেজি গুড় ১৬০-১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গুড় সঠিক বাজারজাতকরণের কারণে এ বছর ভালো দাম পাচ্ছেন তারা। উপজেলার বিন্নাবাড়ি গ্রামে গুড় চাষি হোসেন আলী জানান, দিন দিন এই অঞ্চলে গুড়ের উৎপাদন বাড়ছে। আর এর মান ধরে রাখতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও দেয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি শাহ আলম বলেন, চলনবিল অধ্যুাষিত তাড়াশ উপজেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকার গাছিরা এসে গাছ মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেন। পরে তারা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। এই গুড় অত্যন্ত সুস্বাদু ও মান অনেক ভালো। এই সময় এলাকার মানুষ গুড় দিয়ে শীতের পিঠা তৈরি করে আত্মীয়স্বজন নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেন।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কৃষি বিভাগের হিসাব মতে এই উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার ৫০টি খেজুর গাছ রয়েছে, যা থেকে এ বছর গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে ১৩৫ দশমিক ৬৭ টন। আর এ অঞ্চলের গুড়ের মান ও স্বাদে ভরপুর হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে চাহিদা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে চাষিরা যাতে ভেজালমুক্ত গুড় তৈরি করেন সেদিকে নজরদারি করা হয় বলেও জানান তিনি।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ধারের নামে ঋণের ফাঁদ পা দিলেই মাথায় হাত কেরানীগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ঋণজাল

চলনবিলে উৎপাদিত সুস্বাদু খেজুরের গুড় রপ্তানি হচ্ছে সারাদেশ

আপলোড সময় : ১১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

শীত মৌসুম এলেই চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলায়  ব্যস্ত হয়ে পড়েন গাছিরা।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পৌষের শীতে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু খেজুরের গুড়। স্বাদে গন্ধে এই গুড় অতুলনীয়। এরই মধ্যে গাছিরা স্থানীয় খেজুর গাছের মালিকদের কাছ থেকে খেজুর গাছ লিজ নিয়ে গুড় তৈরি শুরু করছেন।

এই গুড়ের মান ভালো হওয়ায় এর চাহিদা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

বাজারে গুড়ের দাম ভলো পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন গুড় চাষিরা।  এই গুড়ের মান বজায় রাখতে নজরদারি করছে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।জানা যায়, শীত মৌসুম এলেই চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যস্ত হয়ে পড়েন গাছিরা। গাছ থেকে খেজুরের রস এনে তা মাটির তৈরি বিশেষ চুলায় জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় খাঁটি মানের খেজুরের গুড়। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই চোখে পড়বে এমন দৃশ্য। উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সকালে গাছিরা গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করে এসে বড় পাত্রে রস জাল দিচ্ছেন।

কথা হয় খেজুর গুড় চাষি নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, ভোর বেলায় গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে থাকেন। এ বছর প্রতি কেজি গুড় ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। যত শীত বাড়বে ততই রসের মান ভালো হয়। এতে গুড়ের মানও ভালো হয় বলে জানান তিনি।

স্থানীয় কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ৮ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় ৩০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ গাছগুলো থেকেই রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হয়।তাড়াশ উপজেলার ভাদাস গ্রামে আসা গুড় চাষি আবদুল মজিদ জানান, প্রতি কেজি গুড় ১৬০-১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গুড় সঠিক বাজারজাতকরণের কারণে এ বছর ভালো দাম পাচ্ছেন তারা। উপজেলার বিন্নাবাড়ি গ্রামে গুড় চাষি হোসেন আলী জানান, দিন দিন এই অঞ্চলে গুড়ের উৎপাদন বাড়ছে। আর এর মান ধরে রাখতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও দেয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি শাহ আলম বলেন, চলনবিল অধ্যুাষিত তাড়াশ উপজেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকার গাছিরা এসে গাছ মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেন। পরে তারা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। এই গুড় অত্যন্ত সুস্বাদু ও মান অনেক ভালো। এই সময় এলাকার মানুষ গুড় দিয়ে শীতের পিঠা তৈরি করে আত্মীয়স্বজন নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেন।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কৃষি বিভাগের হিসাব মতে এই উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার ৫০টি খেজুর গাছ রয়েছে, যা থেকে এ বছর গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে ১৩৫ দশমিক ৬৭ টন। আর এ অঞ্চলের গুড়ের মান ও স্বাদে ভরপুর হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে চাহিদা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে চাষিরা যাতে ভেজালমুক্ত গুড় তৈরি করেন সেদিকে নজরদারি করা হয় বলেও জানান তিনি।